ছবিতে দেখুন-লকডাউন থেকে শুরু করে আনলক-১, কী পেল, পেল না ভারত?
লকডাউন- পাঁচ অক্ষরের এই ইংরেজি শব্দটা এখন প্রায় সমস্ত ভারতীয়র মনেই দৃঢ় শিকড় চারিয়ে ফেলেছে। লকডাউনের কথা এর আগে অনেকবার শোনা গিয়েছে। কিন্তু তা প্রত্যক্ষভাবে বোঝা গেল গত ২৫ মার্চ থেকে। অতি সংক্রামক করোনাভাইরাসের এ দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরই এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল। তখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০০। মারাও গিয়েছিল কয়েকজন আক্রান্ত। করোনার এই সংক্রমণ রুখতেই জারি হয়েছিল লকডাউন। করোনার সংক্রমণে কিছুটা লাগাম পরানো যায়, কিন্তু যতটা প্রত্যাশা ছিল, ততটা আদৌ হয়নি। দেশে একের পর এক চার দফায় লকডাউন হয়। লকডাউন ১ থেকে আনলক ১-র বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। আর এই সফরে দেশ পেয়েছে অনেক কিছুই, আবার হারিয়েওছে অনেক কিছু। এই প্রাপ্তি ও হারানোর কিছু লেখাজোখা এই ছবিগুলি....
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App২৫ মার্চ ভারতে প্রথবার লকডাউন চালু করা হয়েছিল। এই লকডাউনের মেয়াদ ছিল ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত । লোকজন ছিলেন গৃহবন্দি, ট্রেন-বিমান-বাস, মেট্রো চলাচল ছিল বন্ধ। বিভিন্ন বাজার ও মলে তালা পড়েছিল। সংক্রমিত ও সন্দেহজনক এলাকাগুলিতে চলে জীবাণুমুক্তকরণের কাজ।
এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় লকডাউনের সময় দেশের বিভিন্ন শহরে পরিযায়ী শ্রমিকদের মোহভঙ্গ হতে শুরু করে। কাজ হারিয়ে নিরন্ন ও আশ্রয়হীন পরিযায়ীরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে শুরু করেন। তাঁদের এই পলায়ন সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে। পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, ট্রাকে বা অন্য কোনও উপায়ে সপরিবারে পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরের উদ্দেশে পাড়ি দেন। দ্বিতীয় পর্বের লকডাউন ছিল ১৫ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত। তৃতীয় পর্বের মেয়াদ ছিল ৪ মে থেকে ১৭ মে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী পৌঁছে যায় সর্বত্র। বিহারের জ্যোতি কুমারী তাঁর বাবাকে সাইকেলে বসিয়ে পৌঁছে যান দ্বারভাঙায়। যদিও এই সময় সরকার শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালিয়েছিল। যদিও এই ট্রেনের পরিষেবা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।
এরইমধ্যে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল বিহারের রামপুকারের ছবি। বাবা দিল্লিতে শ্রমিক ছিলেন। আর বিহারে ছেলের মৃত্যু হয়। রামপুকার ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা সম্ভব ছিল না। ফোনে কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এমনই আরও অনেক মর্মান্তিক কাহিনী সামনে আসে, যা সবার চোখে জল এনে দিয়েছিল।
আরও একটি ছবি সামনে এসেছিল...যা মানবিক অনুভূতিকে সজোরে ধাক্কা দিয়েছিল। ট্রলি ব্যাগ সাধারণত সবাই ট্রেন বা বিমান সফরে জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়ে ছিলেন এক অসহায় মা-ও। বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ছোট্ট সন্তান তো হেঁটে যেতে পারে না। কাজেই মা ট্রলি ব্যাগেই বসিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সন্তানকে। পায়ে হেঁটে ওই মহিলা দিল্লি থেকে মহোবা যাচ্ছিলেন। এই ছবি ছিল আগ্রার।
১৮ মে থেকে ৩১ মে ছিল চতুর্থ পর্বের লকডাউন। এই পর্বে কিছু উড়ানও চালু হয়। জরুরি প্রয়োজনে লোকজনকে শর্তসাপেক্ষে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সোশ্যাল ডিসট্যান্স ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। লকডাউনে পুলিশের লাঠি চালানোর কিছু ঘটনাও সামনে আসে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে পুলিশের বিভিন্ন প্রয়াসও নজরে পড়ে।
এখন এসেছে আনলক ১.০। লকডাউনের এই পঞ্চম পর্বের নাম আনলক ১ । এই পর্বে বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৮ জুন থেকে খুলছে ধর্মস্থল, শপিং মল ও রেস্তোরাঁ। সোশ্যাল ডিসট্যান্সের শর্ত মেনে বাজারও খোলা হয়েছে। ১ জুন থেকে শুরু হয়েছে ২০০ স্পেশ্যাল ট্রেন পরিষেবা। অর্থ্ত, করোনা সংকটের মধ্যেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জীবন...
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -