Sadbhavna Diwas 2023: শিক্ষাই মুছতে পারে বৈষম্যের রেখা, বিশ্বাস করতেন রাজীব, তাঁর জন্মদিনই সদ্ভাবনা দিবস হিসেবে পালিত হয়
আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হলেও, রাজনীতির প্রতি আগ্রহ ছিল না তেমন। বরং নিজের জীবনকে অন্য আকার দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরিস্থিতির চাপেই বদলে যায় জীবনের গতিপথ। নেহরু-গাঁধী পরিবারের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হয়ে ওঠেন রাজীব গাঁধী। মাত্র ৪০ বছর বয়সে, কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের দায়িত্ব নেন।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appআক্ষরিক অর্থে ভারতকে বিশ্বায়নের পথে এগিয়ে দিয়েছিলেন রাজীব গাঁধীই। প্রত্যন্ত গ্রামে টেলিফোন সংযোগ বসানো, কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি শিক্ষায় দেশকে শিক্ষিত করে তোলা, চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেননি তিনি। আবার রাজনীতিতে থেকেও, কায়েমি স্বার্থের বাইরে গিয়ে সমাজ-সংসারকে সঙ্গে নিয়ে দেশের উন্নয়নের কথা ভাবতে পেরেছিলেন।
সেই কারণই রাজীব গাঁধীর জন্মদিন, ২০ অগাস্ট দিনটি সদ্ভাবনা দিবস হিসেবে পালিত হয়। শান্তি, সম্প্রীতি, সৌভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যের ভাবনাকে উদ্যাপন করা হয় এই দিনটিতে। ১৯৯১ সালে সন্ত্রাসী হামলায় মারা যান রাজীব গাঁধী। কিন্তু তাঁর ভারতভাবনা আজও রয়ে গিয়েছে অগণিত মানুষের মনে।
রাজীব গাঁধীর ভারত ভাবনা বুঝতে হলে, তাঁর কিছু উক্তি মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। মানবসম্পদের উপর যদি কেউ সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে থাকেন, তিনি হলেন রাজীব গাঁধী। তাঁর বক্তব্য ছিল, “Better a brain drain than a brain in the drain”. জ্ঞানী-গুণী, দক্ষ, যোগ্য মানুষের অন্য দেশে স্থানান্তরণকে ইংরেজিতে Brain Drain বলা হয়। ভারতকে উত্তরপুরুষের যোগ্য বাসভূমি করে তোলার পক্ষপাতী ছিলেন রাজীব গাঁধী।
ঔপনিবেশিক শাসনের ক্ষত আজও বয়ে চলেছে ভারত। তাতে কী বিরাট ক্ষতি হয়েছে, তা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন রাজীব গাঁধী। তাই বলেছিলেন, ‘‘ঔপনিবেশিক সবচেয়ে ক্ষতিকর যে উত্তরাধিকার বয়ে চলেছে ভারত, তা হল, গ্রাম এবং শহরের কঠোর বিভাজন।’’
ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে হৃদয়ে রেখেই আধুনিকতার পথে ভারতকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘শিল্প বিপ্লব শামিল হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ভারতের। কম্পিউটার বিপ্লব থেকে নিজেদের বিরত রাখা চলবে না।’’
রাজীব আরও বলেন, ‘‘দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে পৃথিবীর। এই সময় মৃতপ্রায়। নমনীয় নয়, এমন ব্যবস্থাপনাকে আঁকড়ে ধরে থাকলে চলবে না। সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে এই ব্যবস্থাপনাকেও আরও উন্নত হতে হবে।’’
সমাজ-সংসারের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজীব গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘প্রশাসন এবং নাগরিকের মধ্যেকার সম্পর্কে, প্রতিক্রিয়াশীল প্রশাসনকেই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।’’
শিক্ষিত ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন রাজীব গাঁধী। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমাদের সমাজে শিক্ষাই সাম্যের ভূমিকা পালন করতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে আমাজের সমাজে যে শ্রেণি বিভাজন তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে পারে একমাত্র শিক্ষাই।’’
কোন ভারতকে তিনি দেখতে চান, তা নিজেই ব্যাখ্যা করেছিলেন রাজীব গাঁধী। বলেছিলেন, ‘‘আমাদের কাজ হল ভারতকে দারিদ্র্যের ভার থেকে মুক্ত করা, ঔপনিবিশিক অতীতের উত্তরাধিকার কাটিয়ে ওঠা এবং দেশের নাগরিকদের আশা-আকাঙ্খা পূরণের পথে এগিয়ে দেওয়া।’’
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -