বিপন্ন শৈশবে হাতিয়ার পুতুল, শিশুসাথী থেকে কন্যাশ্রীর গল্প বলছে দমদমের ঝুলন উৎসব
শ্রীকৃষ্ণের দ্বাদশ যাত্রার অন্যতম ঝুলন যাত্রা। পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবের আজ প্রথম দিন। দমদম জ’পুর এলাকায় ঝুলন দেখলে ছোটবেলার স্মৃতিতে ডুব দেবেন অনেকেই।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appঅন্যান্য বছরের তুলনা বিগত বছর এবং এই বছর দুটিই অন্যরকম। চেনা উৎসবের রঙ অনেকটাই ফিকে। মহামারি আবহে বন্ধ স্কুল । বিপন্ন শৈশব। হারিয়ে যাওয়া ঝুলন উৎসবের মধ্য দিয়ে তাই বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা গৃহবন্দি শৈশবকে।
দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এলাকার এই ঝুলন উৎসব সেজে উঠেছে কাল থেকেই। এক একটা সাজ এক একটা গল্প বলছে। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরা হয়েছে এই ঝুলনের সাজে।
টুকরো টকরো সাজে কোথাও কলকাতা থেকে সুন্দরবন, পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল, করোনা থেকে কন্যাশ্রী, মোহনবাগান থেকে ইস্টবেঙ্গল। কোথাও আবার রয়েছে নৌকা, পালকি, মন্দির, মসজিদ। এমনকী বাদ যায়নি লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শিশুসাথী প্রকল্পের কথাও।
রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের উৎসব হলেও অন্য এক আবহ রয়েছে এই ঝুলন উৎসবে। যেখানে পুরানের পাশাপাশি ফুটে উঠেছে বাস্তবিক চিত্রও।
মা-দিদিমাদের সময়ে ঝুলন উৎসবের রমরমা থাকলেও কালের নিয়মে তা আজ অনেকটাই ফিকে। ইঁদুর দৌড়ের দিনে হাতের নিখুঁত কারুকার্য ফুটিয়ে তোলার সময় কোথায়। তাই সেসব এখন অতীত। কিন্তু কী এই ঝুলন যাত্রা? কেন পালন হয়?
শ্রাবণ মাসে একাদশী থেকে পূর্ণিমা, এই পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম উৎসব ঝুলন। শ্রাবণ মাসের প্রতিপদ তিথি থেকে আরম্ভ হয়ে পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত পাঁচদিনব্যাপী এই উৎসব পালন করা হয়। রাখিপূর্ণিমার দিন ঝুলন যাত্রা শেষ হয়।
মথুরা-বৃন্দাবনের মতোই বাংলার ঝুলন উৎসবের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। শাস্ত্রমতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোলকধাম থেকে ভূলোকে এসে প্রেমলীলা শুরু করেন।
দ্বাপরযুগে বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণর প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করেই এই ঝুলন উৎসবের সূচনা। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছোটদের ঝুলন সাজানোর আকর্ষণও রয়েছে।
নানা ধরনের মাটির পুতুল, কাঠের দোলনা আর গাছ-পালা দিয়ে ঝুলন মন কাড়ে ছোটদেরও। কোথাও কোথাও ঝুলন উপলক্ষে চলে নাম কীর্তনও।
ঝুলন শব্দটির মধ্যেই রয়েছে 'দোলনা' শব্দটি। তাই এই সময় ভক্তরা রাধাকৃষ্ণকে দোলনাতে বসিয়ে পুজো করেন। সঙ্গে থাকে গ্রাম্য পটভূমি (ছবি ও তথ্য় সঞ্চয়ন মিত্র))
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -