Hiroshima Day: যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই, শুধুই কি মুখের বুলি! ৭৭ বছরেও ক্ষমা চাওয়া হয়নি হিরোশিমার কাছে
যুদ্ধের ভয়াবহতা বোঝাতে গিয়ে আজও বার বার উঠে আসে হিরোশিমার কথা। শনিবার, ৬ অগাস্ট সেই হিরোশিমা দিবস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, ১৯৪৫ সালে এই দিনটিতেই পরমাণু বোমায় ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল জাপানের হিরোশিমা শহর।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রপক্ষের সামনে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়নি জাপান। তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে হিরোশিমা শহরে বি-২৯ যুদ্ধবিমান থেকে পরমাণু বোমা ফেলে আমেরিকা। আমেরিকার এই অমানবিক সিদ্ধান্তে হিরোশিমার ৩৯ শতাংশ জনসংখ্যা নিশ্চিহ্ণ হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে।
সরকারি হিসেবে পরমাণু বোমা আছড়ে পড়লে হিরোশিমা শহরে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ। শহরের ৬৯ শতাংশ বাড়ি-ঘর, দফতর ধুলোয় মিশে যায়।
হিরোশিমা পরমাণু বোমা নিক্ষেপ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও, এর তিন দিনের মাথায় ৯ অগাস্ট নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে আমেরিকা। তাতে কমপক্ষে ৭৪ হাজার মানুষ মারা যান। সশস্ত্র যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত খাতায় কলমে পরমাণু বোমা প্রয়োগের একমাত্র নিদর্শন হিরোশিমা এবং নাগাসাকি।
হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা আছড়ে পড়ার পরই জাপানের তৎকালীন সম্রাট হিরোশিতো রেডিওর মাধ্যমে, ১৫ অগাস্ট আত্মসমর্পণের ঘোষণা করেন। তবে পরমাণু বোমার সেই ক্ষত বহু বছর বয়ে বেড়াতে হয়েছে হিরোশিমা, নাগাসাকি এবং সমগ্র জাপানকে।
সবমিলিয়ে দু’টি পরমাণু বোমার আঘাতে এবং তার প্রভাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ২৬ হাজারের মাঝামাঝি। তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিষক্রিয়ায় দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন সেখানকার মানুষ।
বহু বছর এর প্রভাব পরিলিত হয়। ক্যানসারের মতো মারণ রোগ তো বটেই, জন্মগত ভাবে ত্রুটি নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় হাজার হাজার শিশু। এমনকি মানসিক অসুস্থতা এবং অন্য নানা সমস্যাও দেখা দেয়।
২০২২-এর ৬ অগাস্ট হিরোশিমায় পরমাণু নিক্ষেপের ৭৭ বছর পূর্ণ হল। এই দিনটিতে হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে প্রতি বছর বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়, যেখানে যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই বার্তা তুলে ধরা হয়।
আজও ওই অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মানুষ জন শামিল হন। পরমাণু শক্তি এবং যুদ্ধপ্রিয় মানসিকতা মানব সভ্যতার জন্য কতটা ভয়ঙ্কর, তার নিদর্শন হয়ে রয়েছে গিয়েছে হিরোশিমা।
তবে যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে ভূরি ভূরি বাক্যবন্ধ পাওয়া গেলেও, হিরোশিমার জন্য আজ পর্যন্ত আমেরিকার কোনও প্রেসিডেন্ট ক্ষমা চেয়েছেন বলে রেকর্ড মেলে না ইতিহাসে। ক্ষতিপূরণের দায় এড়াতেই আমেরিকা বিষয়টি এড়িয়ে যায় বলে ধারণা কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -