Sheikh Hasina Birthday: প্রাণে বাঁচেন ভাগ্যক্রমে, নিজের দেশেই ব্রাত্য ছিলেন মুজিব-কন্যা, আজ বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান
দেশের ভিত্তিপ্রস্তরের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁর বাবার নাম। আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক পরিবার। বাংলাদেশের বাইরেও প্রভাব, প্রতিপত্তি কম নয়। তার পরও নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় পরিবারকে। নিজের দেশেই দীর্ঘ সময় ব্রাত্য ছিলেন তিনি। কিন্তু সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনা। বুধবার জন্মদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। ৭৫ বছর পূর্ণ করলেন তিনি।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবঙ্গবন্ধু শেখ মুজি রহমানের কন্যা হাসিনা। পূর্ববঙ্গের টুঙ্গিপাড়ায় বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্ম। পূর্বপুরুষ সূত্রে ইরাক-আরব সংযোগ রয়েছে। হাসিনার দাদু শেখ লুৎফার রহমান ছিলেন ১৫ শতকের ইসলামি ধর্মগুরু শেখ অওয়াল বাগদাদের বংশধর। রাজনৈতিক পরিবেশে বড় হওয়া হাসিনার ভবিষ্যৎও জড়িয়ে নির্ধারিত হয়ে যায়।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশে অভ্যুত্থান ঘটলে বঙ্গবন্ধু-সহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। সেই সময় বাংলাদেশে ছিলেন না হাসিনা। পেশায় পরমাণু পদার্থবিদ স্বামী এমএ ওয়াজেদ মিয়াঁর সঙ্গে পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। তাই প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু তার পর বাংলাদেশে ফেরা নিষিদ্ধ হয়ে যায় হাসিনার। আওয়ামি লিগের প্রধান নিযুক্ত হলে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরতে সক্ষম হন তিনি। তাও বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে।
১৯৭৫-এর শেষ দিকে দিল্লিতে আশ্রয় নেন হাসিনা। ভারত সরকার তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিল সেই সময়। হাসিনার ছেলে সাজীব ওয়াজেদ জয় ভারতের বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের কাছের বন্ধু ছিলেন হাসিনা।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হাসিনা। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে সক্ষম বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হাসিনাই।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে হাসিনাই সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী। ২০০৮ সালে ফের নির্বাচনে নাম লেখান। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য মসনদে আসীন হন। ২০১৪ সালে ওই পদে পুনর্নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে চতুর্থ বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ১৮ বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকেছেন হাসিনা। নির্বাচিত মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানের নিরিখেও বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি শাসনকাল তাঁর।
আন্তর্জাতিক ফোর্বস ম্যাগাজিন হাসিনাকে বিশ্বের ৪৩তম ক্ষমতাশালী নারী ঘোষণা করে। গোঁড়ামি, ধর্মান্ধতা কাটিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে তাঁর প্রচেষ্টার প্রশংসা শোনা যায় আন্তর্জাতিক মহলেও।
তবে প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার পর নয়, বাংলাদেশে ফেরা ইস্তকই গণতন্ত্রের সপক্ষে সওয়াল করতে শোনা যায় হাসিনাকে। তার জেরে বেশ কয়েক বার গৃহবন্দিও হতে হয় তাঁকে। সেই পরিস্থিতিতে থেকে সংসদে বিরোধী দলনেত্রী নির্বাচিত হন। সেখানে সেনার অত্যাচারের বিরুদ্ধে, মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে সওয়াল করেন তিনি।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে হাসিনার ভূমিকা অনস্বীকার্য। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশকে উপর দিকে রাখা হয়। হাসিনার মতে, নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গেই দেশের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। তাই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে মহিলাদের সমান অংশগ্রহণে বিশ্বাসী তিনি।
‘ডক্টর কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল এক্সসিলেন্স সম্মান’ ছাড়াও অজস্র আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন হাসিনা। নারীর ক্ষমতায়নের জন্যও পুরস্কৃত হন। মায়ানমার থেকে প্রাণ হাতে করে পালানো ৭ লক্ষ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হন হাসিনা। তাঁর আমলেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি হয়।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -