মাত্র ৩ বছর বয়সে শুরু কেরিয়ার, ১৩ বছরে বিয়ে! ফিরে দেখা সরোজ খানের জীবন
‘এক দো তিন’, ‘তাম্মা-তাম্মা’, ‘ধক ধক করনে লাগা’, এই জুটি পর্দায় ইতিহাস সৃষ্টি করে। শ্রীদেবী ও মাধুরীকে ডান্সিং আইকন বানানোর পিছনে সরোজ খানের অবদান কিছু কম নয়। কাজল, রবিনা, রানি, করিনা, প্রীতি, ক্যাটরিনা, দীপিকা, সোনম, বলি কন্যারা প্রায় সকলেই তাঁর তালে পা মিলিয়েছেন। যাঁরা পারেননি তাঁদের আফশোসের শেষ নেই।
মণিকর্ণিকা ছবিতেও একাধিক গানের কোরিওগ্রাফি করেছেবন সরোজ খান।
নায়িকাদের অন্যতম পছন্দের কোরিওগ্রাফার ছিলেন তিনি
প্রায় ২০০টিরও বেশি ছবিতে কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন সরোজ খান। মাধুরী দীক্ষিত এবং শ্রীদেবী অভিনীত বহু ছবির বহু বিখ্যাত গানের কোরিওগ্রাফি করেছিলেন তিনি।
দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, হাম দিল দে চুকে সনম, দেবদাস, জব উই মেট, মণি কর্নিকার মতো ছবির নাচের দৃশ্যও উজ্জ্বল তাঁর অবদানের জন্যেই।
১৯৪৮ সালের ২২ নভেম্বর মুম্বই শহরে জন্ম তাঁর। তাঁর আসল নামছিল নির্মলা নাগপাল। মাত্র তিন বছর বয়সে শিশু শিল্পী হিসেবে বলিউডে তাঁর কেরিয়ারের সূচনা।
নিজের প্রতিভার গুণেই সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছিলেন সরোজ খান।
বহু বছরের বিরতির পর ফের তিনি তাঁর পছন্দের অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজ করেন কলঙ্ক ছবিতে।
‘তেজাব’-এর এক দো তিন, ‘বেটা’-র ধক ধক করনে লগা, ‘স্যায়লাব’-এর ‘হামকো আজকাল হ্যায় ইন্তেজার’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র কাটে নেহি কাটতে দিন ইয়ে রাত, ‘চালবাজ’-এর হাওয়া হাওয়াই, ‘চাঁদনি’র ‘ও মেরি চাঁদনি’ থেকে শুরু করে ‘জব উই মেট’-এর ‘ইয়ে ইশক হায়ে’-র মতো বহু হিট গান তাঁর ঝুলিতে রয়েছে।
২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সরোজ খান একটি টিভি রিয়ালিটি শো-এর বিচারকও ছিলেন।
তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে এমন একটা সময় ছিল যখন নায়িকারা তিনি ছাঁড়া আর কারও সঙ্গে কাজ করতেও রাজি হতেন না।
১৯৫০-এর দশকে তিনি যোগ দেন ব্যাক আপ ডান্সার হিসেবে।
দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন তত্কালীন প্রখ্যাত কোরিওগ্রাফার বি সোহনলালের সঙ্গেই। তাঁকেই তিনি আজীবন নিজের মাস্টারজী মেনে এসেছেন।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে গুরু প্রখ্যাত কোরিওগ্রাফার বি সোহনলালের সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল তাঁর। মাত্র ১৪ বছর বয়সে মা হন তিনি
তাঁর অনন্য সব নাচের স্টেপ আজও সমান জনপ্রিয় বলিউড এবং সাধারণ মানুষের কাছে।
তবে তাঁর কেরিয়ার উড়ান নেয় শ্রীদেবী এবং মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজের পরই।
স্বাধীন কোরিওগ্রাফার হিসেবে তাঁর কাজ শুরু ১৯৭৪ সালে গীতা মেরা নাম ছবি দিয়ে।
বলিউড আরও এক তারকাকে হারাল। চলে গেলেন প্রখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। ইরফান খান, ঋষি কপূর, ওয়াজিদ খান, সুশান্ত সিং রাজপুতের পর এবার সরোজ খানের মৃত্যুর খবরে আবার শোকের মেঘ ঘনাল সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে। ২০ জুন সরোজ খানকে মুম্বইয়ের বান্দ্রার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল তাঁর। চিকিত্সা চলছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হঠাত্ই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাত ২টো নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। সরোজ খানের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। সকালে মালাডে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।