Space Science: কালোর বুকে আলোর বেদন লেগে, নীহারিকাই বাড়িয়েছে রূপ, মহাশূন্য তাই ভয়ঙ্কর সুন্দর
শস্য-শ্যামলা পরিবেশ, নীল আকাশে পেঁজা পেঁজা তুলো, সাহিত্যে বার বার উঠে এসেছে সৌন্দর্যের কথা। প্রযুক্তির দৌলতে মহাশূন্য থেকে তোলা নীল-সাদা পৃথিবীর রূপও মুগ্ধ করে আমাদের, যা অদ্ভূত এক স্নিগ্ধতায় মোড়া।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু পৃথিবীর এই স্নিগ্ধ রূপ যদি মুগ্ধ করে আমাদের, তাহলে মহাশূন্য মনকে করে তোলে বিহ্বল। কারণ পৃথিবীর স্নিগ্ধতার সামনে মহাশূন্যের রূপকে বলা চলে ‘বিপজ্জনক’। মহাশূন্যের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের এমনই কিছু ঝলক পেয়েছেন পৃথিবীবাসী, যা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির দৌলতে।
মহাশূন্যের অন্যতম বিস্ময় হল নীহারিকা। নীহারিকার গর্ভেই জন্ম নক্ষত্রের, আবার নক্ষত্রের মৃত্যুতেই গড়ে ওঠা নীহারিকার। ধুলোর মেঘ, গ্যাস মিশে স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে নীহারিকা।
এমনই একটি নীহারিকা হল ক্যারিনা। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আবিষ্কৃত অন্যতম বৃহত্তম নাহারিকা ক্যারিনা। এর গর্ভে জন্ম কমপক্ষে ১২টি নক্ষত্রের, যার এক একটির ভর সূর্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি। মহাকাশের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র ইটা ক্যারিনে-র জন্মও ক্যারিনার গর্ভে।
একেবারে সাদামাটা গড়ন। কিন্তু অদ্ভূত এক মায়া জড়ানো উপস্থিতি। একঝলক দেখে মনে হতে পারে, মরুভূমির মাঝে বোধহয় সমুদ্র সফেন। এই গড়নই বাকিদের থেকে আলাদা করেছে ‘রিং’ নীহারিকাকে। পৃথিবী থেকে ২০০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রং বদলায় এটি। মাঝখানে রয়েছে নীল রঙের উষ্ণ গ্যাস, কখনও কখনও তা সবুজ হয়ে যায়। বাইরের অংশ হলুদ বর্ণের। মহাকাশ বিজ্ঞানে হাতেখড়ি হলে সবার আগে ‘রিং’ নীহারিকা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়।
একঝলক দেখলে মনে হবে দু’টি রকেট বোধহয় মুখোমুখি অবস্থান করছে। রঙিন আলোর চাদরে ঢাকা বাইরের অংশ। আসলে এটি ‘টুইন জেট’ নীহারিকা। একে বলা হয় অস্থিরমতি নীহারিকাও। কারণ এর কেন্দ্রে রয়েছে দু’টি নক্ষত্র। সেই আলোতে আরও বেড়েছে ঔজ্জ্বল্য। বিজ্ঞানী হারমান মিনকোওস্কি আবিষ্কার করেন বলে, ‘টুইন জেট’ নীহারিকাকে মিনকোওস্কির প্রজাপতিও বলা হয়।
হেলিক্স নীহারিকাকে দেখতে খানিকটা মানুষের চোখের মতো। তবে সাদার পরিবর্তে অন্ধকার আকাশে এর বাইরের অংশ সবুজ বলে ঠাহর হয়। মণির অংশটি রক্তাভ লাল। চোখের মতো দেখতে বলে একে ‘গডস আই’ অর্থাৎ ঈশ্বরের চক্ষুও বলা হয়।
হর্সহেড নীহারিকা কালপুরুষ নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। নাসা-র দাবি, সবচেযে বেশি এরই ছবি তোলা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এর চেহারা একেবারে রাজকীয়। দেখতে স্বচ্ছ। রং গাঢ় লাল। আকারে খানিকটা ঘোড়ার মাথার মতো দেখতে।
ওমেগা নীহারিকাকে রাজহংসও বলা হয়। যত নবজাতক নক্ষত্র রয়েছে, অধিকাংশের জন্মই এর গর্ভে। অন্তত নাসা তেমনই দাবি করেছে। পৃথিবী থেকে দূরত্ব ৫৫০০ আলোকবর্ষ।
বালিঘড়ি বা আওয়ার গ্লাস দেখেছি আমরা সকলেই। মহাশূন্যেও আওয়ার গ্লাস নামের নীহারিকা রয়েছে। একেবারে বালিঘড়ির মতোই দেখতে। মধ্যিখানে রয়েছে সবুজ বর্ণের অক্ষি। এই নীহারিকা আসলে মৃত্যুর পথে এগিয়ে চলা একটি নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশ। ধীরে ধীরে মৃত্যু গ্রাস করছে বলে ওই নক্ষত্রের দুই দিতে গ্যাসের স্তর জমে ওই আকার নিয়েছে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -