Science News: ভেবেছো দেখেছো কি...তারারা পরস্পরের থেকে কত দূরে! উত্তর দিচ্ছে বিজ্ঞান
ছোট্ট বয়সে হাতের দশ আঙুলে তারাগোনার চেষ্টা কম-বেশি আমরা সকলেই করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরাও তারার সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারেননি। কিন্তু দু’টি তারার মতো ঠিক কতখানি দূরত্ব, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আকাশগঙ্গী ছায়াপথে দু’টি নক্ষত্রের মধ্যে দূরত্ব হয় মোটামুটি ৫ আলোক বর্ষ, অর্থাৎ ৪৭ লক্ষ কোটি কিলোমিটার। ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরি এই পরিসংখ্যান জানিয়েছে। তবে এই সংখ্যা এক এক ক্ষেত্রে, এক এক রকম।
কিন্তু পৃথিবী থেকে ওই বিশাল দূরত্ব ঠাহর হয় না। খালি চোখে তো বোঝাই যায় না খুশি। খালি চোখে আকাশে তারাদের মিটমিট করতে দেখলেও, তাদের মধ্যেকার দূরত্ব কল্পনাও করা সম্ভব হয় না দূরত্বের কারণেই।
পৃথিবী থেকে রাতের আকাশের যে পটচিত্র ধরা পড়ে আমাদের চোখে, তাতে অতি উজ্জ্বল কোনও নক্ষত্র চোখে পড়লে বুঝতে হবে, আসলে দু’টি নক্ষত্র একত্রে ধরা পড়ছে চোখে। রাতের আকাশে যত কাছে দেখাচ্ছে তাদের, বাস্তবে তারা তার চেয়েও অনেক অনেক দূরে রয়েছে।
সান দিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপিকা অ্যানা রোসেন জানিয়েছেন, নক্ষত্রপুঞ্জকে কখনও বিশ্বাস করা উচিত নয়। পাশাপাশি দুই নক্ষত্র চোখে পড়ার অর্থ, সেটি আসলে ২ডি প্রোজেকশন। বাস্তবে তারা হয়ত পাশাপাশি নেই।
নক্ষত্রের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্বে বিস্তর ফারাকও রয়েছে। নিজের সবচেয়ে নিকটম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরি থেকে সূর্যের দূরত্ব ৪.২৫ আলোকবর্ষ, অর্থাৎ প্রায় ৪০ লক্ষ কোটি কিলোমিটার। আবার যে নক্ষত্রপুঞ্জের অংশ প্রক্সিমা সেন্টরি, সেখানে নিজের নিকটতম পড়শির থেকে তার দূরত্ব এক আলোকবর্ষের পঞ্চমাংশ।
মহাশূন্যে নক্ষত্রের মধ্যেকার গড় দূরত্ব থেকে মহাশূন্য সম্পর্কে পিরষ্কার ধারণা গড়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়েই সৃষ্টি হয়েছে নক্ষত্রদের। সময়ের সঙ্গে তাদের অবস্থানও বদলে যায়।
খালিচোখে ধরা না পড়লেও, নক্ষত্রেরাও চলমান বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, পৃথিবীবাসী এত দূরে রয়েছেন যে নক্ষত্রের গতিশীলতা চোখে পড়ে না। প্রতি হাজার বছরে অন্তত নক্ষত্রপুঞ্জের আকার এবং অবস্থান বদলায় বলে মত বিজ্ঞানীদের।
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে সৃষ্টি হলেও, জন্মলগ্নে মোটামুটি পরস্পরের কাছাকাছিই থাকে নক্ষত্রেরা। সময়ের সঙ্গে, বাহ্যিক প্রভাবে দূরে সরতে থাকে। ছায়াপথের অভিকর্ষ শক্তিরও ভূমিকা থাকে এতে।
আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অভিকর্ষ শক্তি অত্যন্ত শক্তিশালী। নক্ষত্রগুলিকে ছিটকে যেতে দেয় না। সেখানে নক্ষত্রের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব গড়ে ৪৭ লক্ষ কিলোমিটারের মতো। অন্য ছায়াপথগুলিতেও দূরত্ব মোটামুটি এমনই বলে মত বিজ্ঞানীদের।
তবে অনেক সময় অভিভাবক ছায়াপথ ছেড়ে, পড়শি ছায়াপথেও ছিটকে যায় নক্ষত্রেরা। সেক্ষেত্রে কৃষ্ণগহ্বরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে যে কৃষ্ণগহ্বর থাকে, সেটি পেরনোর সময় তীব্র অভিঘাত আসে। তাতেই তীব্র গতিতে ছিটকে ছায়াপথের বাইরে গিয়ে পড়ে। তখন অন্য কোনও ছায়াপথ তাকে নিজের কাছে টেনে নেয়।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -