Meteor Crater: ১০ হাজার বছর আগে আছড়ে পড়ে উল্কা, আঙুরচাষের জমিতে মিশে হিরের কণা!
চারপাশের মাটির তুলনায় খানিকটা টোল খাওয়া। বাটির মতো চ্যাপ্টা ওই জমিতেই এতদিন আঙুরের চাষ হচ্ছিল। তা থেকে তৈরি ওয়াইন বিক্রি করে চলছিল ব্যবসায়ীর।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appদক্ষিণ ফ্রান্সের কাব্রিওলের ওই আঙুর চাষের জমিকে ঘিরেই এখন কৌতূহল। কোনও কালে উল্কা আছড়ে পড়াতেই জমির মাটি চারপাশের তুলনায় বসে যায় বলে ১৯৫০ নাগাদ প্রথম বার সেটিকে চিহ্নিত করা হয়।
তা নিয়ে ভিন্নমতও তৈরি হয়। সাধারণ উল্কা আছড়ে পড়া জমিতে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের যে অসঙ্গতি চোখে পড়ে, ওই জমিতে তা নেই বলে ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়।
কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন গবেষণার রিপোর্টে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই জমিতেও চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের অসঙ্গতি রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই জমিতে থাকা পাথরের খণ্ডে প্রচণ্ড রকমের ধাক্কার প্রমাণ রয়েছে বলে জানান গবেষকরা।
নয়া গবেষণা বলা হয়েছে, ওই জমিতে গলিত এবং পুনরুজ্জীবিত শিলার হদিশ মিলেছে। একই সঙ্গে মাইক্রো ডায়মন্ডেরও (ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হিরের কণা, যা মূলত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়) খোঁজ মিলেছে, যা আসলে প্রচণ্ড চাপ থেকে সৃষ্টি হয়। এ বছর মার্চে টেক্সাসের দ্য উডল্যান্ডসে আয়োজিত ৫৪তম লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স কনফারেন্সে তা নিয়ে বিশদ রিপোর্ট তুলে ধরবেন গবেষকরা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর বুকে উল্কা আছড়ে পড়া অন্য জমির তুলনায়, আঙুর চাষের ওই জমি আয়তনে তুলনামূলক ছোট, ৬৫৬ ফুট, গভীরতা ৯৮ ফুট। চারিদিক ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা।
জার্মানির গুথে ইউনিভার্সিটির ভূবিজ্ঞানী ফ্র্যাঙ্ক ব্রেঙ্কার এবং তাঁর সতীর্থরা ওই জমিটি নিয়ে গবেষণা করছেন। সেখান থেকে সংগৃহীত পাথর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা হয়েছে। তাতে গাঢ় রংয়ের ফাটল পাওয়া গিয়েছে, যা প্রচণ্ড চাপ থেকেই তৈরি হয়েছে বলে মত তাঁদের।
ওই জমি থেকে সংগৃহীত মাটিতে নিকেল এবং লোহার উপাদানও মিলেছে, যা পৃথিবীর বুকে থাকা অন্যান্য উল্কা আছড়ে পড়া জমির মাটিতেও রয়েছে। গবেষকদের দাবি, উল্কাখণ্ড আছড়ে পড়লে, তার উপাদান গলতে থাকে। অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে বিক্রিয়াও ঘটে। তাতেই অণুবীক্ষণ যন্ত্রে হিরের কণা ধরা পড়েছে।
শুধু তাই নয়, গবেষকরা জানিয়েছেন, ওই জমি সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, জমির মাঝামাঝি যত এগনো যায়, ততই চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের টান কমতে থাকে। উল্কা আছড়ে পড়া গর্তের ক্ষেত্রে এমনটাই স্বাভাবিক।
ঠিক কত বছর আগে ওই জমিতে উল্কা আছড়ে পড়েছিল, এখনও পর্যন্ত তা যদিও জানা যায়নি। তবে প্রায় ১০ হাজার বছর আগে ওই জমিতে উল্কাখণ্ড এসে পড়ে থাকতে পারে বলে অনুমান গবেষকদের। তবে সাধারণত, ক্ষয় এবং ভূগর্ভস্থ পাতের অবস্থান বদলে এই ধরনের গহ্বরের অস্তিত্ব মুছে যায়। আগামী দিনে এই জমির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -