Science News: রাতের আকাশে লাল-নীল-হলুদের রংমশাল, নবজাতক নক্ষত্রদের জমকালো নার্সারি, ছবি দেখাল নাসা
নামে শূন্য থাকলেও, আসলে মণিমুক্তোয় ঠাসা। তাই মহাশূন্যের সঙ্গে পরিচিতি যত বাড়ে, বিস্ময় জাগে ততই। বয়স বাড়লেও সেই ঘোর কাটে না। মহাজাগতিক সবকিছুকে ঘিরে ভাললাগা রয়েছে যাঁদের, সেই ভাললাগাকে বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল সম্প্রতি তোলা একটি ছবি।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appআমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা ছবিটি রো ওফিউচি নার্সারির। ২০২২ সালের জুলাই মাসেই মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। তার বর্ষপূর্তিতে নয়া ছবিটি প্রকাশ করেছে নাসা, যা দেখে কার্যতই থ গোটা বিশ্ব।
পৃথিবী থেকে রো ওফিউচি নার্সারির দূরত্ব প্রায় ৩৯০ আলোকবর্ষ। ওফিউকাস নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে এর অবস্থান। রো ওফিউচি একটি বহুমাত্রিক স্টার সিস্টেম, যার মধ্যে জন্ম নেয় নতুন নক্ষত্রেরা।
সেই রো ওফিউচিকেই ক্যামেরাবন্দি করেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। তাতে আঁধারের বুকে লাল-নীল-হলুদের যে রংমশাল হয়ে ধরা দিয়েছে রো ওফিউচি। তার বুক ফুঁড়ে জন্ম নেওয়া কমপক্ষে ৫০টি নবজাতক নক্ষত্রও চোখে পড়েছে, যাদের অধিকাংশেরই ভর সূর্যের প্রায় সমান।
এর মধ্যে কিছু নক্ষত্রের চারপাশে বলয় দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নবজাতক নক্ষত্রগুলিকে ঘিরে গ্রহমণ্ডল গড়ে উঠছে, ঠিক সূর্যকে ঘিরে গড়ে ওঠা গ্রহমণ্ডলের মতো। সূর্য এবং সৌরমণ্ডলের জন্মও হয়েছিল একই ভাবে।
লাল-নীল-হলুদের যে সংমিশ্রণ চোখে পড়েছে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে নাসা। বলা হয়েছে, মহাজাগতিক ধুলো ফুঁড়ে যখন প্রথম জন্ম নেয় কোনও নক্ষত্র, তখনও বিস্ফোরণ ঘটে। তার জেরে চারপাশে গ্যাস, ধুলো, আণবিক হাইড্রোজেন ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরেই ওই লাল রং।
ঘন কালো অন্ধকার যে অংশটি, সেটি আসলে ধুলোর মেঘে ঢাকা রয়েছে। এই মুহূর্তে তার মধ্যে জন্ম নিচ্ছে নতুন কোনও নক্ষত্র। ছবির নীচের দিকে, মাঝামাঝি জায়গায় S1 নামের একটি নক্ষত্রকে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেটির ভর সূর্যের চেয়েও বেশি।
মহাকাশ অনুসন্ধানে এখনও পর্যন্ত নাসা-র সবচেয়ে শক্তিশালী যন্ত্র হল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়াররা মিলে সেটি তৈরি করেছেন। যেদিন থেকে কাজে নেমেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, সেই থেকে প্রতিনিয়তই বিশ্বকে অবাক করে চলেছে সে।
নাসা-র সায়েন্স মিশনের ডিরেক্টর নিকোলা ফক্স জানিয়েছেন, বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডকে আরও ভাল করে চিনতে, বুঝতে শেখাচ্ছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। মহাশূন্যের অন্যত্র প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজতে যখন হয়রান গোটা বিশ্ব, প্রতি নিয়ত তাক লাগানো সব ছবি উপহার দিচ্ছে, যা আগামী দিনেও গবেষণাকে সহজতর করে তুলবে।
মেরিল্যান্ডে স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের ওয়েব প্রজেক্ট বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ক্লাউজ পন্টোপিডান। তাঁর মতে, সূর্যকে জন্ম নিতে দেখেনি বিশ্ব। কিন্তু নক্ষত্রের জন্মের মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া সম্ভব আজকের দিনে। গোটাটাই সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির দৌলতে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -