Science News: মহাশূন্যে উপগ্রহের অপহরণ! জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ, কাঠগড়ায় নেপচুন
গ্রহ যেমন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে, তেমনই গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে উপগ্রহ। কিন্তু সব গ্রহের উপগ্রহ একরকমের হয় না। নেপচুনের উপগ্রহহ ট্রাইটনের কথা এখানে উল্লেখ্য। নেচুনের মোট ১৪টি উপগ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে ট্রাইটন বাকিদের চেয়ে একেবারে আলাদা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appনেপচুনের উপগ্রহগুলি আয়তনে মূলত ছোট। আবার এর মধ্যে কিছু নিয়মিত, কিছু আবার অনিয়মিত। নিয়মিত বলতে বোঝায়, যে উপগ্রহগুলি কাছাকাছি থেকে নেপচুনকে প্রদক্ষণ করে চলে। আর অনিয়মিত উপগ্রহগুলি হল, যেগুলির দূরত্ব নেপচুন থেকে বেশি এবং তাদের কক্ষপথও চমকপ্রদ।
এর মধ্যে সবদিক থেকেই আলাদা ট্রাইটন। ১৮৪৬ সালে ট্রাইটনকে আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ নাবিক তথা অপেশাদার জ্যোতির্বিদ উইলিয়াম ল্যাসেল। নেপচুন আবিষ্কার হওয়ার মাত্র ১৭ দিনের মাথায় ট্রাইটনের আবিষ্কার হয়। কিন্তু কাছ থেকে তোলা ট্রাইটনের ছবি পেতে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় পৃথিবীবাসীকে।
ভয়েজার ২ কৃত্রিম উপগ্রহই প্রথম ট্রাইটনের ছবি তোলে। ট্রাইটনের উপরিভাগের ৪০ শতাংশের উপরই নজরদারি চালাতে সক্ষম হয় ভয়েজার ২। কিন্তু তাতেই চমকপ্রদ তথ্য হাতে এসে পৌঁছয়। জানা যায়, নেপচুনের বাকি উপগ্রহগুলির মতো মোটেই আকারে ছোট নয় ট্রাইটন। বরং বাকি ১৩টির সামগ্রিক আয়তন যা, তার চেয়েও ২০০ গুণ বড় ট্রাইটন।
অনিয়মিত উপগ্রহ হিসেবে গন্য হলেও, আশ্চর্যজনক ভাবে ট্রাইটনের কক্ষপথ বৃত্তাকার। মহাশূন্যে আর কোনও বস্তুর কক্ষপথই ওই রকম সম্পূর্ণ বৃত্তাকার নয়। মহাকাশযানের তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, ট্রাইটনের উপরিভাগ ঠিক ফুটির মতো। উঁচুনীচু, কুঞ্চিত, বৃহদাকার গর্তও রয়েছে। দক্ষিণ অংশ আবার বরফে ঢাকা, নাইট্রোজোন রয়েছে সেখানে। ট্রাইটনের বুকে রয়েছে আগ্নেয়গিরিও।
শুধু তাই নয়, নেপচুনকে প্রদক্ষিণ করলেও, ট্রাইটনের গতিপথ আসলে নেপচুনের বিপরীতমুখী। কক্ষপথটি ৬৭ ডিগ্রি হেলে রয়েছে। নেপচুনের সামনে উল্লম্ব ভাবে অবস্থান করছে সেটি।
তবে ট্রাইটন মোটেই খানাখন্দে ভর্তি নয়। গর্ত থাকলেও, কিছু সময়ের ব্যবধানে তা আবার মসৃণও হয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের দাবি, ট্রাইটন এখনও পুরোপুরি ঠান্ডা হয়নি। এর ফলে লাভা এসে খানাখন্দ ভরিয়ে দেয়।
আকারে বড়, বৃত্তাকার কক্ষপথ, অস্থির আচরণ, ট্রাইটনের এমন ব্যতিক্রমী চারিত্রিক বৈশিষ্টেরও ব্যাখ্যা মিলেছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ট্রাইটন আসলে নেপচুনের গ্রহই নয়, বরং আন্তঃগ্রহ অপহরণের শিকার হয়েছে সে।
বিজ্ঞাীদের একাংশের দাবি, চরিত্রগত ভাবে খানিকটা প্লুটো এবং এরিসের সঙ্গে মিল রয়েছে ট্রাইটনের। সম্ভবত সেটি কুইপার বেল্টের অংশ ছিল। কোনও ভাবে ছিটকে এসে নেপচুনের চৌহদ্দির মধ্যে পড়ে এবং নেপচুনের অভিকর্ষ টানে আটকে বাঁধা পড়ে যায়।
বিজ্ঞানীদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, দুর্ভাগ্যবশতই নেপচুনের সান্নিধ্যে এসে পড়ে ট্রাইটন। তার পর কোটি কোটি বছর ধরে আটকে রয়েছে। রেডিও অ্যাক্টিভ উপাদানের জন্যই ট্রাইটন গরম বলে মত বিজ্ঞানীদের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -