Science News: খিদে কমে গিয়েছে হঠাৎই, আগের মতো কার্বন শোষণ করছে না আর, আমাজনের জলাভূমিতে ঠিক কী ঘটছে?

Peruvian Amazon Peatland: খিদে কমছে উদ্ভিদের। আগেও সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার উদ্বেগ আরও বাড়ল। ছবি: ফ্রিপিক।

ছবি: ফ্রিপিক।

1/11
খিদে কমছে উদ্ভিদের। আগের মতো কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে না বলে আগেই অশনি সঙ্কেত মিলেছিল। এবার পেরুর আমাজন থেকে উদ্বেগের খবর সামনে এল। সেখানকার জলাভূমি আর কার্বন শোষণ করছে না বলে জানালেন বিজ্ঞানীরা।
2/11
Geophysical Research Letters জার্নালে এ নিয়ে বিশদ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পেরুর আমাজন অরণ্যের বিস্তীর্ণ জলাভূমি থেকে যত কার্বন নির্গত হতো, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ কার্বণ শুষে নিত এতদিন। কিন্তু আচমকাই কার্বন শোষণ করা বন্ধ করে দিয়েছে ওই জলাভূমি। এতে স্থানীয় মানুষের কোনও ভূমিকা নেই।
3/11
কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে, কার্বন চক্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জলাভূমি। পেরুর ৫৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জলাভূমি অবস্থান করছে, যা দেশের মোট আয়তনের ৫ শতাংশ। তা সত্ত্বেও জলাভূমির মাটির নীচে প্রায় ৫ গিগাটন কার্বন সঞ্চিত হয়, মাটির উপর অবস্থিত গাছপালার দ্বারা সঞ্চিত কার্বনের প্রায় সমান।
4/11
পৃথিবীর সর্বত্রই জলাভূমিগুলির ভূমিকা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট স্থলভাগের ৩ শতাংশ জলাভূমি। আর সেখানেই ৫৫০ গিগাটন কার্বন সঞ্চিত হয়, যা অরণ্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। হাজার হাজার বছর ধরে এভাবেই পৃথিবীতে কার্বনের ভারসাম্য বজায় রেখে আসছে জলাভূমিগুলি।
5/11
পেরুর আমাজনের জলাভূমিকে কী এমন ঘটল যে কার্বন শোষণ বন্ধ হয়ে গেল? ইউনিভার্সিটি অফ মিসৌরির গবেষক জেফরি উড জানিয়েছেন, পেরুর ওই জলাভূমিতে মরিশিয়া পাম বা ইটা পাম গাছের আধিক্য রয়েছে। ওই এলাকা বন্যাপ্রবণ। ইটা পাম গাছের ফলের উপর নির্ভরশীল মানুষজন থেকে পশুপাখি।
6/11
সাধারণত পেরুর আমাজনে বেড়ে ওঠা গাছগুলি সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। গোটা এলাকা যেহেতু জলবন্দি, গাছের পাতা, ছাল জলাভূমিতেই পড়ে পচে যায়। ফলে বাতাসে ফিরে যাওয়ার পরিবর্তে কার্বনকে মাটিতে আটকে থাকে।
7/11
কিন্তু ২০১৮-’১৯ সাল পর্যন্ত যেখানে পেরুর ওই জলাভূমি কার্বন আটকে রাখছিল মাটিতে, ২০২২ সাল থেকে কার্বন শোষণ থেকেই বিরত থাকছে সেটি। মনুষ্যঘটিত কারণে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। দেদার গাছ কাটাও হয়নি, তাপপ্রবাহ বা খরার প্রকোপও নেই। বরং ওই জলাভূমিক কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে দু’টি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
8/11
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পেরুর আমাজন জলাভূমির কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে যাওয়ার প্রথম কারণ হল, দীর্ঘকালীন মেঘহীন আকাশ এবং প্রখর সূর্যালোক।এর ফলে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াই ব্যহত হচ্ছে, আটকে গিয়েছে গাছের বৃদ্ধি। ফলে তাদের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের ক্ষমতাও কমে গিয়েছে।
9/11
দ্বিতীয় কারণটি হল জলাভূমিতে জলের পরিমাণ কমে যাওয়া। জল এতটাই কমে গিয়েছে যে খসে পড়া পাতা, ছাল সব জলের উপর জেগে রয়েছে। এর ফলে ব্যাকটিরিয়া বেশি মাত্রায় অক্সিজেনের জোগান পাচ্ছে। আরও দ্রুত গতিতে পচন ঘটছে, যা থেকে বাতাসে বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন মিশছে।
10/11
অতিরিক্ত সূর্যালোকের জেরে সালোকসংশ্লেষ ব্যহত হচ্ছে, এমনটা মানতে প্রথমে ইতস্তত করেন জেফ্রি এবং তাঁর টিমও। কিন্তু গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, আগে মেঘের আনাগোনা ছিল। এখন তা না থাকায় বেশিমাত্রায় সূর্যালোক এসে পড়ছে যেমন, তাপমাত্রাও বাড়ছে, যা সহ্য করতে পারছে না গাছ-গাছালি। পাতার রন্ধ্র বন্ধ করে নিচ্ছে, যার মাধ্যমে বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে তারা এবং অক্সিজেনের নির্গমন ঘটে।
11/11
বৃষ্টি অরণ্যগুলিতে দিনের মাঝামাঝি সময়ে এমনিতেই সালোকসংশ্লেষের হার কম হয়। কিন্তু পেরুর জলাভূমিতে সকাল এবং বিকেলেও উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের হার কমেছে। আগামীতে ফের কি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে পেরুর ওই জলাভূমি? তা বোঝার জন্য আরও সময় প্রয়োজন বলে মত বিজ্ঞানীদের।
Sponsored Links by Taboola