Science News: ঘুম ভাঙতেই ক্ষুধার তাড়না, ছিঁড়েখুঁড়ে খেল আস্ত নক্ষত্রকে, মহাশূন্যে আচমকাই ভোলবদল কৃষ্ণগহ্বরের
মহাকাশ গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কৃষ্ণগহ্বরের রহস্য নিয়ে গবেষণা চলছে যুগ যুগ ধরে। তাতেই এবার বেনজির ঘটনা সামনে এল। নিকষ কালো অন্ধকার থেকে বিশালাকার এক কৃষ্ণগহ্বরের উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার ঘটনা সামনে এল। চোখের পলকেই এই ভোলবদল ঘটে বলে জানা গেল।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appভোল পাল্টানো ওই কৃষ্ণগহ্বরটিকে J221951 হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে ১ হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে তার অবস্থান। তবে কয়েক বছর, মাস বা দিন নয়, ব্রহ্মাণ্ডের সূচনাপর্বেই এই ভোলবদল ঘটে। দূরত্বের কারণে এতবছর পর বিষয়টি সামনে এল।
পৃথিবী থেকে ১ হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান হলেও, J221951 কৃষ্ণগহ্বরটি এতটাই উজ্জ্বল যে, প্রথমে সেটিকে মহাজাগতিক বিস্ফোরণ বলে মনে করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এক মুহূর্তে উজ্জ্বল, পর মুহূর্তে আবার অন্ধকার, এমন মহাজগতের কোনও বাসিন্দা বলে ঠাহর হয়েছিল। কিন্তু রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি-র জার্নালে তার সম্পর্কে বিশদ তথ্য সামনে এসেছে।
কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গবেষণাপত্রের সহ-লেখক ম্যাট নিকোল জানিয়েছেন, বৃহদাকারা কৃষ্ণগহ্বরগুলি সময়ের সঙ্গে নিজেদের আয়তন বাড়িয়ে চলে। J221951 তেমনই একটি কৃষ্ণগহ্বর, যার পরিবর্তন দেখে স্তম্ভিত বিজ্ঞানীরা।
এক্ষেত্রে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের গতিপথ ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। দুই মহাজাগতিক বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষ থেকেই এই তরঙ্গের উৎপত্তি ঘটে। দুই মৃত নিউট্রন নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে যায় চারিদিক। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই আলো কয়েক দিন পর নিভে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই আলো দীর্ঘস্থায়ী হয় বলে মত বিজ্ঞানীদের।
J221951 কৃষ্ণগহ্বরটির ক্ষেত্রে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়। নীল গেহরেলস সুইফ্ট অবজারভেটরিরও ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা। তাতে দেখা যায়, দূরের এক ছায়াপথে রয়েছে কৃষ্ণগহ্বরটি। প্রায় ১০ মাস ধরে আলোয় উদ্ভাসিত থাকার পর আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায়।
J221951 কৃষ্ণগহ্বরটির এই ভোলবদলের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তা হল, তীব্র গতিতে ছুটে চলা এক নক্ষত্রকে গিলে ফেলে সে। তাকে ছিড়েখুঁড়ে খেতে গেলে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে তার খণ্ড। তা থেকে বিস্ফোরণ ঘটেই আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে কৃষ্ণগহ্বরটি।
আরও একটি সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে। তা হল, J221951 কৃষ্ণগহ্বরটি ঘুমন্ত অবস্থা থেকে আচমকাই জেগে উঠেছে। ক্ষুধার জ্বালায়, সামনে যা পাচ্ছে, তা-ই পেটে চালান করে দিচ্ছে। চারপাশে বলয়ের মতো ঘিরে থাকা গ্যাসও বাদ যাচ্ছে না। তাতে মহজাগতিক বস্তুসমূহের মধ্যে সংঘর্ষ বাধছে। আর তা থেকেই জ্বলে উঠছে চারিদিক।
এই দু’টি সম্ভাবনাকেই আপাতত ভরসা করছেন বিজ্ঞানীরা। সেই মতোই গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কৃষ্ণগহ্বরটির আচমকা ভোলবদলের কারণ জানতে হলে, তাকে নিরীক্ষাণ করে যেতে হবে আগামী দিনেও,
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আবারও যদি জ্বলে ওঠে কৃষ্ণগহ্বরটি, তাহলে বুঝতে হবে, এখনও খিদে মেটেনি তার। আর যদি তা না হয়, তাহলে বুঝতে হবে উজ্জ্বল কোনও নক্ষত্রকেই উদরস্থ করেছে সে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -