Moon Roads: বালি-সিমেন্ট নয়, সূর্যালোকই ভরসা, এবার চাঁদের বুকে রাস্তা তৈরির ভাবনা
কোটি কোটি টাকা খরচ করে অভিযান চালালেও, চাঁদের মাটিতে অহরহ হোঁচট খেতে হয়ে অত্যাধুনিক মহাকাশযানকে। সব ঠিক থাকলে সেই সমস্যাও দূর হয়ে যাবে শীঘ্রই। কারণ চাঁদের মাটিতে এবার রাস্তা তৈরির কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু চাঁদের মাটিতে রাস্তা তৈরির কাজ সহজ নয় মোটেই। তাই কোদাল, শাবল নিয়ে নেমে পরার পরিবর্তে বিকল্প উপায় অবলম্বন করা হতে পারে। আর তার জন্যই সূর্যের আলোকে কাজে লাগাতে চান বিজ্ঞানীরা।
অগ্ন্যুৎপাতের সময় বেরিয়ে আসা শিলাই মূলত রয়েছে চাঁদের মাটিতে। যুগ যুগ ধরে সূর্যের আলো পড়ে, তাপমাত্রার ওঠানামার জেরে তা ভেঙেচুরে সৃষ্টি হয়েছে ধুলোর। প্রতিফলিত সূর্যালোকের দরুণ এমনিতে ধূসর বলে মনে হলেও, চাঁদের মাটির রং আসলে গাঢ় ধূসর।
পৃথিবীতে যেমন হাওয়া বাতাস খেলে, তার প্রভাবে মাটির স্থানান্তরণ ঘটে, চাঁদের মাটিতেও ঠিক তেমনটাই ঘটে। চন্দ্রপৃষ্ঠের ধুলোর জেরে অভিযানও ব্যহত হয় প্রায়শই। ধুলোর আস্তরণ সেঁটে থাকে গায়ে। এর ফলে ল্যান্ডার, স্পেসস্যুট এমনকি মহাকাশচারীদের ফুসফুসেরও ক্ষতি হয়।
এর হাত থেকে মহাকাশযানগুলিকে বাঁচাতে গেলে রাস্তার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু পৃথিবী থেকে নুড়িস কাঁকর, সিমেন্ট বয়ে নিয়ে গিয়ে চাঁদের বুকে রাস্তা তৈরি সম্ভব নয়। তাই চাঁদের মাটিতে প্রাপ্ত উপাদান ব্যবহার করেই সেখানে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। তার জন্য বিকল্প উপায় বের করার কাজ চলছে এই মুহূর্তে।
চাঁদের বুকে রাস্তা গড়তে এই মুহূর্তে EAC-1A উপাদানটিকেই সবচেয়ে মনে ধরেছে বিজ্ঞানীদের। চাঁদের মাটির বিকল্প হিসেবে সেটি তৈরি করেছেন ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি। সেই নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে সূর্যের আলোকে একত্রিত করে, কাচের সাহায্যে চাঁদের ধুলো গলিয়ে টাইলস গড়তে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই দিয়েই রাস্তা তৈরির ভাবনাচিন্তা চলছে।
ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বুকে সেই নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে। লেজার রশ্মির সাহায্যে ১২ কিলোওয়াট শক্তি উৎপাদন করে ফেলা হয় চাঁদের মাটির বিকল্প EAC-1A-এর উপর। ওই পদ্ধতিতেই ত্রিকোণ, ৯.৮ ইঞ্চি চওড়া এবং ১ ইঞ্চি মোটা টাইলস তৈরি করে, পাশাপাশি-উপনীচে বসিয়ে চাঁদের বুকে রাস্তা এবং লঞ্চিং প্যাড অর্থা মহাকাশযান অবতরণের ক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।
কিন্তু গবেষণাগারের পরীক্ষা নিরীক্ষা আর বাস্তবে তার প্রয়োগের মধ্যে ফারাক বিস্তর। চাঁদের মাটিতে ওই পদ্ধতিতে টাইলস তৈরি করতে হলে, সূর্যালোক থেকে পতিত আলোকরশ্মিকে অত্যন্ত শক্তিশালী হতে হবে।
সূর্যালোককে কয়েদ করতে ৫.৭ ফুট ব্যাসযুক্ত লেন্সের প্রয়োজন পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে কম সময়ে বেশি সংখ্যক টাইলস তৈরি করা যাবে বলে আশাবাদী সকলে। আবার রকেট অবতরণের আদৌ উপযুক্তি হবে কিনা ওই টাইলস, সেই নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।
তাই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও মজবুত এবং টেকসই টাইলস তৈরি করা সম্ভব কিনা, আপাতত সেই গবেষণা চলছে। সব ঠিক থাকলে তাই শীঘ্রই চাঁদের বুকে রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -