Exit Poll 2024
(Source: Matrize)
Buddha Statue Made of Meteorite: মহাজাগতিক শিলার উপর কারুকার্য! নাৎসিদের হাতে থাকা বৌদ্ধমূর্তিকে ঘিরে রয়েছে বিজ্ঞান ও পুরাণের উপকথা
অন্দরসজ্জার জন্য হোক বা উপহারস্বরূপ কাউকে দিতে বুদ্ধমূর্তি কিনে থাকি আমরা। এর মধ্যে কোনওটি মাটির তৈরি, কোনওটি পাথরের, কোনওটি লোহা, কোনওটি আমার পার্থিক অন্য কোনও ধাতু দিয়ে তৈরি হয়।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু মহাজাগতিক শিলায় তৈরি বৌদ্ধ মূর্তির কথা শুনেছেন কখনও! নাৎসি জার্মানিতে এমনই বৌদ্ধমূর্তির অস্তিত্ব ছিল। কালক্রমে হাতবদল হয়ে যা পৌঁছয় ইউরোপে। মহাকাশ থেকে কি ওই মূর্তি পৃথিবীতে এসে পড়েছিল? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও তত্ত্ব, জেনে নিন বিশদে।
ওই মূর্তিকে মহাজাগতিক বৌদ্ধ মূর্তি বলে অভিহিত করেন গবেষকরা। আবার ‘আয়রন ম্যান’-ও বলে থাকেন কেউ কেউ। মূর্তিটির বয়স কত, কেউ জানেন না। তবে গবেষকদের অনুমান সেটি অষ্টম থেকে দশম শতকের।
মূর্তিটি একটি পুরুষের। হতে পারে বৌদ্ধ ধর্মে পুজিত কোনও দেবতার মূর্তি। বাঁ পা গোটানো, এবং ডান পা ছড়ানো অবস্থায় বসে থাকার ভঙ্গিতে তৈরি সেটি। বাঁ হাতে গোলাকার কিছু ধরে রাখা। বুকের উপর বৌদ্ধ স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা রয়েছে, যা কিনা হিটলারের আমলে জার্মানিতে নাৎজিদের দলীয় প্রতীকচিহ্ন ছিল।
১০ থেকে ২০ হাজার বছর আগে সাইবেরিয়া এবং মঙ্গোলিয়া সীমান্তে উল্কাপিণ্ড আছডে় পড়ে।ওই বৌদ্ধ মূর্তি উদ্ধার হওয়া সেই উল্কারই একটি খণ্ড বলে মত গবেষকদের। বুকে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা থাকাতেই জার্মানিতে সেটি এসে পৌঁছয় বলে মত গবেষকদের একাংশের।
১৯৩৮ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে তিব্বত অভিযানে গিয়েছিলেন প্রাণীবিজ্ঞানী আর্নস্ট শেফার। আর্যজাতির শিকড়ের হদিশ পেতেই নাৎসিদের তরফে তাঁকে তিব্বত পাঠানো হয়। এর পর ওই মূর্তি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হয়ে পড়ে। ২০০৭ সালে সেটি হাতে পান গবেষকরা।
প্রথমে অতি ক্ষুদ্র নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু হয়। পরে, ২০০৯ সালে মূর্তির ভিতর থেকে খানিকটা বড় আকারের নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। তাতেই ধরা পড়ে ওই মূর্তি মহাজাগতিক শিলায় গঠিত বলে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে বলে অ্যাটাক্সাইট উল্কা।
মূলত লৌহ দ্বারা গঠিত হলেও, এই অ্যাটাক্সাইট উল্কায় উচ্চমাত্রায় নিকেলও থাকে। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে পাওয়া সবচেয়ে বৃহদাকার উল্কা হল নমিবিয়ায় প্রাপ্ত হোবা উল্কা, তার ওজন ৬০ টনেরও বেশি।
রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সাইবেরিয়া এবং মঙ্গোলিয়া সীমান্তের চিঙ্গা উল্কাপিণ্ড ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত উল্কার সঙ্গে মিল রয়েছে ‘আয়রন ম্যানে’র। বিজ্ঞানীদের অনুমান, ১০ থেকে ২০ হাজার বছর আগে চিঙ্গা উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর বুকে এসে পড়ে। ১৯১৩ সালে সেটির আবিষ্কার হয়। মূর্তিটি দেখে বিজ্ঞানীদের ধারণা, তারও আগে থেকে মূল্যবান ধাতু এবং পাথরের খোঁজে খননকার্য শুরু হয়েছিল।
উল্কার খণ্ডে যে মূর্তি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, সেটির পরিচয় এখনও পরিষ্কার নয়। তবে গবেষকদের একাংশের ধারণা, ওই মূর্তি আসলে বৌদ্ধ দেবতা বৈশ্রবণের, যাঁকে জাম্ভালাও বলা হয়। বৈশ্রবণ সম্পদ এবং যুদ্ধের দেবতা হিসেবে গন্য হন। তাঁর বাঁ হাতের গোলাকার বস্তুটি হয় লেবু অথবা টাকার বটুয়া হতে পারে, যা সম্পদেরই প্রতীক।
বৌদ্ধ ‘আয়রন ম্যানে’র ওই মূর্তিটি প্রায় ৯.৫ ইঞ্জি লম্বা। ওজন প্রায় ১০.৬ কেজি। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে উল্কা থেকে প্রাপ্ত লোহা থেকে গহনা, ছুরি বানানোর উদাহরণ পাওয়া যায়। উল্কাকে পুজো করার চলও ছিল। তবে উল্কাপিণ্ডের উপর এমন খোদাই বিরল। এর গায়ে টাকার অঙ্ক লিখে দেওয়া সহজ হলেও, আসলে মূর্তিটি অমূল্য বলে মত গবেষকদের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -