Science News: অন্য প্রাণীর মতে কেন লেজ নেই মানুষের? এতদিনে মিলল উত্তর
মানুষ এবং বানরের পূর্বপুরুষ এক বলে বিবর্তনবাদে দাবি করেছিলেন চার্লস ডারউইন। ২.৫ কোটি বছর আগে জিনের পরিবর্তন ঘটে বলে উল্লেখ রয়েছে তাঁর গবেষণায়। ছবি: ফ্রিপিক।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appতাহলে বানরের লেজ থাকলে, মানুষের কেন নেই, এই প্রশ্ন আজকের নয়। বিবর্তনের ফলেই যদি বিলুপ্তি ঘটে থাকে, তাহলে কোন জিনের পরিবর্তন তার জন্য দায়ী, এত দিন পর্যন্ত সেই নিয়ে অন্ধকারেই ছিলেন সকলে। ছবি: ফ্রিপিক।
কিন্তু Nature জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন গবেষকরা। যে DNA-র চরিত্রবদলের জেরে মানুষের পূর্বপুরুষের শরীর থেকে লেজ বিলুপ্ত হয়ে যায়, সেটিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ছবি: ফ্রিপিক।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে বর্তমানে ব্রড ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর হিসেবে কর্মরত বো শিয়া। মেরুদণ্ডের শেষপ্রান্তে স্যাক্রামের নিচের অংশ অর্থাৎ টেইলবোনে আঘাত পান তিনি। ওই টেইলবোন পরীক্ষা করাতে গিয়ে, তার গঠন নজর কাড়ে শিয়ার। সেই নিয়ে গবেষণা শুরু হলে নতুন তথ্য হাতে পান বিজ্ঞানীরা। সেই তথ্যই গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে। ছবি: ফ্রিপিক।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, কোটি কোটি বছর ধরে DNA-তে যে পরিবর্তন ঘটে, তার জেরেই পশুর শরীরে বিবর্তন ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে পাকানো মইয়ের মতো দেখতে সূক্ষ্ম অণু বা মলিকিউলে সামান্য পরিবর্তনের জেরেও বিবর্তন ঘটে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া জটিল। ছবি: ফ্রিপিক।
বেশ কিছু ক্ষেত্রে হুবহু DNA-র মতো দেখতে ALU Elements-যা অল্প পরিমাণ RNA তৈরি করতে পারে, নিজেকে DNA-তে রূপান্তরিত করে নেয়। তার পর এলোমেলো ভাবে জিনোমে সন্নিবেশ ঘটে এদের। এই স্থানান্তরযোগ্য উপাদান, যাকে জাম্পিং জিনও বলা হয়, তা জিনের কার্যকারিতায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এই ধরনের জাম্পিং জিন শুধুমাত্র আদি প্রজাতির শরীরেই থাকে এবং সেই জাম্পিং জিনই কোটি কোটি বছর ধরে জিনের বৈচিত্র পরিচালনা করে চলেছে। ছবি: ফ্রিপিক।
সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রে গবেষকরা জানিয়েছেন, TBXT জিনে এমন দুই Alu Element-এর খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা, তবে বানরের শরীরে নয় বানর গোত্রের দৈত্যাকার প্রাণীর মধ্যে। তবে প্রোটিন উৎপাদনকারী জিন Exon-এ নয়, জিনের মধ্যে থাকা Intron-এ Alu Element পাওয়া গিয়েছে।RNA অণু প্রোটিনে রূপান্তরিত হওয়ার আগে Alu Element বেরিয়ে যায় DNA-র বিন্যাস থেকে। ছবি: পিক্সাবে।
এক্ষেত্রে RNA উৎপাদনের জন্য কোষ যখন TBXT ব্যবহার করে, Alu Element-এর রূপান্তরণের অভ্যাস তাদের একত্রে বেঁধে ফেলে। এই জটিল কাঠামো বড় আকারের RNA মলিকিউলে জায়গা না পেলেও, একটি গোটা Exon-এর সঙ্গে জুড়ে যায়। এর ফলে যে প্রোটিন উৎপন্ন হয়, পাল্টে যায় তার গোটা কাঠামো। ছবি: পিক্সাবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মানব শরীরের কোষেও TBXT জিনে ওই ALU Element-এর রূপান্তরিত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এক জিন থেকে বহু প্রোটিন উৎপন্ন হতেও দেখা গিয়েছে। ইঁদুরের শরীরে শুধুমাত্র এক ধরনের প্রোটিন উৎপন্ন হয়। তার শরীরে ওই জাম্পিং জিন প্রয়োগ করে দেখা যায়, লেজের বিলুপ্তি ঘটছে। তাই গবেষকদের মতে, একাধিক প্রোটিন উৎপাদন লেজ সৃষ্টিতে বাধা দেয়। Alu Element-এর রূপান্তরণের ফলেই মানুষের শরীরে লেজ সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপ কার্ক লোমুয়েলারের নতে, এই ধরনের সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তন একটি গোটা প্রজাতির বিবর্তনকে প্রভাবিত করে। ছবি: পিক্সাবে।
মানুষের বিবর্তনের ক্ষেত্রে এই ধরনের আরও কত জটিল প্রক্রিয়া দায়ী, তা গুনে শেষ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। লেজের অবলুপ্তির ফলেই মানুষ দুই পায়ে হাঁটতে সক্ষম বলে মত বিজ্ঞানীদের। আগামী দিনে এই গবেষণা জিনের গঠন বোঝার ক্ষেত্রে আরও সহায়ক হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তাঁরা। ছবি: পিক্সাবে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -