Science News: একই সঙ্গে জন্ম, সাদৃশ্যও প্রচুর, ‘যমজ বোন’ বলে আজ চেনাই দায় পৃথিবী ও শুক্রকে, নেপথ্যে সূর্য!
রং এবং রূপের কথা বাদ দিলে, আকারে-আয়তনে এমনকি জন্মলগ্নের নিরিখে পরস্পরের মধ্যে মিল রয়েছে বিস্তর। যে কারণে পৃথিবী এবং শুক্রকে যমজ বোন বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ। তবে শস্য-শ্যামল পৃথিবীর মতো কোমল নয়, বরং শুক্রগ্রহ ভীষণ দুষ্টু বলেই মত বিজ্ঞানীদের।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু সৃষ্টির গোড়ার দিকে পৃথিবী এবং শুক্রের মধ্যে এই পার্থক্য ছিল না বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের দাবি, সময়ের সঙ্গে রাস্তা আলাদা হয়ে গিয়েছে দুই গ্রহের। সময় পৃথিবীর অনুকুল হয়ে থেকেছে, প্রতিকূলে গিয়েছে শুক্রের।
আয়তনে প্রায় সমান সমান পৃথিবী এবং শুক্র। অবস্থান অনুযায়ী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলা দ্বিতীয় গ্রহ শুক্র, তৃতীয় পৃথিবী। পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী গ্রহ। দুই গ্রহের ভর এবং ঘনত্বও প্রায় সমান সমান। আজ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি দুই গ্রহেরই।
এ ছাড়া দুই গ্রহের মধ্যে কোনও মিল নেই। শুক্রগ্রহে জলের অস্তিত্ব নেই। বিষাক্ত গ্যাসে ঢাকা বায়ুমণ্ডল। কার্বন ডাই অক্সাইডের আধিক্য থাকার পাশাপাশি সালফিউরিক অ্যাসিডের মেঘে ঢাকা, যার আস্তরণ প্রায় ২৪ কিলোমিটার পুরু। পৃথিবীর তুলনায় বায়ুমণ্ডলের চাপ ৯০ গুণ বেশি।
সৌরজগতের সব গ্রহের মধ্যে শুক্রের তাপমাত্রাই সবচেয়ে বেশি, ৪৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বায়ুমণ্ডল কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিপূর্ণ হওয়াতেই এত তাপমাত্রা। শুক্রের বায়ুমণ্ডলে আটকে পড়ে সূর্যরশ্মি, এর ফলেও বৃদ্ধি পায় তাপমাত্রা।
পৃথিবী এবং শুক্রের গতিপথও পরস্পরের পরিপন্থী। পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তিত হয়। শুক্র ঘোরে পূর্ব থেকে পশ্চিমে। পৃথিবী যেখানে কক্ষপথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকে, সেখানে শুক্র হেলে থাকে ১৭৭.৩৬ ডিগ্রি। পৃথিবীর আকাশে সূর্য পূর্বে উদয় হয়, অস্ত যায় পশ্চিমে। শুক্রে ঠিক এর উল্টো। শুক্রের গতিও অত্যন্ত শ্লথ। সেখানকার একটি দিন পৃথিবীর ২৪৩ দিনের সমান।
কিন্তু গোড়ার দিকে শুক্র এমন ছিল না বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, একসময় শুক্রেও জলের অস্তিত্ব ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তা উবে গিয়েছে। মূলত সৌরঝড়ের প্রকোপেই এমন অবস্থা।
নিয়ত অগ্ন্যুৎপাতের জেরেই শুক্রের বায়ুমণ্ডল বিষাক্ত হয়ে উঠেছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। কিন্তু শুক্রের বুকে এমন কত আগ্নেয়গিরি রয়েছে, সেগুলি কতটা সক্রিয়, সে ব্যাপারে সুনিশ্চিত ধারণা পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত।
পৃথিবী থেকে শুক্রেই প্রথম মহাকাশযান পাঠানো হয়, Mariner 2. ১৯৬২ সালের ২৭ অগাস্ট সেটির উৎক্ষেপণ করে আমেরিকা। ১১০ দিন পর, ১৪ ডিসেম্বর শুক্রের মাটি থেকে থেকে ৩৪ হাজার ৭৭৩ কিলোমিটার উপরে ছিল সেটি। শুক্রের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীতে তথ্য পাঠাতে থাকে।
শুক্রের বুকে যে কোনও চৌম্বকীয় ক্ষেত্র নেই, তা Mariner 2 প্রথম আবিষ্কার করে। ১৯৬৩ সালের ৩ জানুয়ারি শেষ বার ওই মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছিল। সেটা এই মুহূর্তে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে বলে জানা যায়।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -