World War II Submarine: ৮৫ জনকে নিয়ে সলিল সমাধি, তার পর জলের নিচে পড়ে ৮০ বছর, খোঁজ মিলল সর্বকালীন বিধ্বংসী ডুবোজাহাজের
মানুষের হাতেই তৈরি। শত্রুপক্ষের কাছে ছিল ত্রাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মুখে মুখে ফিরত নাম। তার পর প্রায় ৮০ বছর ধরে জলের নিচে পড়েছিল। খোঁজ মিলল মার্কিন নৌবাহিনীর বিধ্বংসী ডুবোজাহাজের। আজ জলের নিয়ে পড়ে রয়েছে তার ধ্বংসাবশেষ।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appমার্কিন নৌবাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ডুবোজাহাজ USS Albacore SS-218. শত্রুপক্ষের ১০টি জাহাজ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, যার মধ্যে ছ’টি চিল যুদ্ধজাহাজ। আরও তিনটি জাহাজকেও ডুবিয়ে ছেড়েছিল বলে শোনা যায়।
জাপানের তৎকালীন বৃহত্তম এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার ‘তাইহো’-কেও ডুবিয়ে ছেড়েছিল USS Albacore SS-218. সেই সময় উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ জাপানের দখলে ছিল। বর্তমানে মার্কিন কমনওয়েল্থ হিসেবে গন্য হয় উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ।
বিধ্বংসী ওই ডুবোজাহাজ সাহসিকতার জন্য একাধিক পুরস্কার পেয়েছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য পেয়েছিল নয়টি সামরিক নক্ষত্র-প্রতীক। অসীম সাহসের জন্য সর্বোচ্চ স্তর থেকেই চার অনন্য সম্মান জুটেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও আমেরিকার ভরসা হয়ে উঠেছিল ওই ডুবোজাহাজ। কিন্তু ১৯৪৪ সালের ৭ নভেম্বর মর্মান্তিক পরিণতি হয় তার। জাপানের কাছে সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যায়। সেই সময় তীব্র বিস্ফোরণ শোনা গিয়েছেল। যতদূর জানা যায়, নৌবাহিনীর খনিতে সেটি ধাক্কা মারে।
সেই সময় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে জলভাগে নজরদারি চালাচ্ছিল ওই ডুবোজাহাজ। তাতে সওয়ার ছিলেন ৮৫ জন কর্মী। ডুবোজাহাজের সঙ্গে জলের নিচে তলিয়ে যান সকলে। সলিল সমাধি ঘটে তাঁদের। সাধারণ মানুষের কাছে তার পর বিস্মৃতি হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু জাপানের এক দল গবেষকই এতদিন ধরে সেটিকে নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০১৯ সাল থেক সমীক্ষা চলছিল। করোনার জেরে ২০২০ সালে সাময়িগ বন্ধ হয়ে যায় সমীক্ষা। তার পর ২২ সালে জলের নিচে হদিশ মেলে ডুবোজাহাজটির। জাপানের হোক্কাইডো উপকূলের অদূরে জলের নিচে পড়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, জলের নিচে,৮২০ ফুট গভীরে ওই ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে। কম্পিউটার স্ক্রিনে ফুটে ওঠা ছবি দেখলে, একনজরে সবুজ শ্যাওলায় ঢাকা ছোট্ট দ্বীপ বলে ভ্রম হতে বাধ্য। আদতে ওই ধ্বংসাশেষের উপর গজিয়ে উঠেছে সবুজ শ্যাওলা।
এতদিন পর হদিশ মিললেও, ওই ধ্বংসাবশেষ তুলে আনার পক্ষপাতী নয় মার্কিন নৌবাহিনী। তাদের যুক্তি, ৮৫টি প্রাণ নিয়ে তলিয়ে গিয়েছিল ওই ডুবোজাহাজ। তাই ওই ধ্বংসাবশেষকে যুদ্ধকালীন সমাধিস্থল বলা চলে। মার্কিন আইন অনুযায়ী তা সংরক্ষিত।
মার্কিন নৌবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট ইয়ান ম্যাকনহে জানিয়েছেন, ওই ৮৫ জন মার্কিন নাগরিক দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাই ওই ধ্বংসাবশেষ নৌবাহিনীর সমাধিস্থলই। প্রিয়জনের শেষ গন্তব্য জেনে পরিবার-পরিজনরা অন্তত খানিকটা শান্তি পাবেন।
ওই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের পর পার্ল হারবারের একটি সংগঠন নিহত ৮৫ জনের মধ্যে ৭৬ জনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে। এতবছর পর প্রিয়জনের সলিল সমাধির স্থান জানতে পেরে তাঁরা স্বস্তি পেয়েছেন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -