Year ender 2023: ভারতের চন্দ্রাভিযান, বিকল্প গ্রহের সন্ধান, সঙ্গম ছাড়া সন্তানধারণ, বিজ্ঞানের জগতে মাইলফলক ২০২৩
‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেই তো তোমার আলো’, গভীর জীবনদর্শনের সঙ্গে কবির বিজ্ঞানমানসের মিলন অনুভব করা যায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের এই একটি লাইনের। সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে যত ভিন্ন মতই থাকুক না কেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করা সম্ভব নয় কোনও মতেই। ছবি: ফ্রিপিক।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ প্রতিনিয়ত পেয়ে চলেছি আমরা। এক্ষেত্রে ২০২৩ সালটি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য। বিজ্ঞানচর্চায় এই একটি বছরেই একের পর এক মাইলফলক তৈরি হয়েছে। নতুন বছরে পা রাখার আগে পিছন ফিরে দেখে নিন এ বছরের এমনই কিছু কৃতিত্ব। ছবি: ফ্রিপিক।
মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে পাকাপাকি ভাবে এবছর জায়গা করে নিয়েছে ভারত, সৌজন্যে অবশ্যই চন্দ্রযান-২ অভিযান। কোটি কোটি টাকা খরচে করে মহাকাশে পাঠানো পশ্চিমি দুনিয়ার একের পর এক মহাকাশযান যখন মুখ থুবড়ে পড়েছে, সেখানে পালকের মতো চাঁদের মাটি স্পর্শ করে নজির গড়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. চাঁদের দুর্গম দক্ষিণ মেরু ছুঁয়েছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। পশ্চিমি দুনিয়ার তাবড় দেশের তুলনায় নামমাত্র খরচে এই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছে ভারত। ফাইল চিত্র।
আবির্ভাবের ঢের আগে থেকেই বিস্তর শোরগোল শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু যন্ত্রমেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স কী বস্তূ, খায় না মাথায় দেয়, তা বোধগম্য হচ্ছিল না অনেকেরই। কিন্তু ChatGPT-র সঙ্গে পরিচয় ঘটতেই, স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। ২০২২ সালের শেষ দিকেই যদিও আবির্ভাব ঘটে, কিন্তু ChatGPT ভাইরাল হয় ২০২৩ সালে, সার্বিক গ্রহণযোগ্যতাও গড়ে ওঠে এ বছরই। আশা-আশঙ্কা রয়েইছে, কিন্তু চোখের পলকে আস্ত গবেষণা নামিয়ে দেওয়া থেকে জীবিত ব্যক্তির হুবহু নকল করা, AI সব অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে। ছবি: পিক্সাবে।
যতই উদার বলে নিজেদের তুলে ধরি না কেন আমরা, ২০২৩ সালে পৌঁছেও গায়ের রং দিয়ে মানুষ বিচারের রোগ ঘোচেনি আমাদের। কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের শিকড় চিনিয়ে দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভ্যানিয়ার গবেষক সারা টিশকফ। নিয়ানডারথ্যাল DNA-র পরীক্ষা করে সারা প্রমাণ করেছেন, মানুষের সৃষ্টি আফ্রিকা থেকেই। অর্থাৎ পৃথিবীর মোট ৮০০ কোটি জনসংখ্যার প্রত্যেকের পূর্বপুরুষই আফ্রিকার। অথচ সেই আফ্রিকার কৃষ্ণবর্ণের মানুষেরা আজও নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চনা এবং বৈষম্যের শিকার। ছবি: পিক্সাবে।
পড়শি গ্রহ শুক্রের মতোই পৃথিবীর পরিণতি হতে পারে বলে আশঙ্কা আজকের নয়। তাই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে লাগাতার সতর্ক করে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতা গালভরা প্রতিশ্রুতি দিলেও, কাজের কাজ কিছু হয়নি। সেই আবহেই ২০২৩ সালব এযাবৎকালীন বিশ্বের উষ্ণতম বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই কৃতিত্ব নেতিবাচক হলেও, মানব সভ্যতার ইতিহাসে আগে কখনও তাপমাত্রা এমন রেকর্ড গড়েনি পৃথিবীর বুকে। ছবি: পিক্সাবে।
শুক্রাণু, ডিম্বাণু এবং জননকোষ ছাড়াই ভ্রূণের জন্মে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ইউনিভার্সিটি এফ কেমব্রিজ এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এই অসাধ্য সাধন করেছে। স্টেম কোষের সাহায্যে সেখানকার বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম মানবভ্রূণ তৈরি করে ফেলেছেন। বিবর্তনের একেবারে গোড়ার দিকে যেমন ছিল মানুষের গড়ন, ঠিক তেমন ভ্রূণ তৈরি করা গিয়েছে আপাতত। আগামী দিনে এই গবেষণায় ভর রে জিনগত অসুখ থেকে গর্ভপাত, এমন একাধিক সমস্যার সমাধান হতে পারে। ছবি: পিক্সাবে।
মহাশূন্যে আবিষ্কৃত গ্রহের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ৫০০ হল এ বছর। মাত্র তিন দশক আগেই সৌরজগতের বাইরে অন্য গ্রহ রয়েছে বলে হদিশ পান বিজ্ঞানীরা। আর ২০২৩ সালে আরও ছ’টি এক্সোপ্ল্যানেট বা সৌরজগৎ বহির্ভূত গ্রহের সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে মহাশূন্যে আবিষ্কৃত গ্রহের সংখ্যা বেড়ে হল ৫ হাজার ৫০০। শুধু তাই নয়, এর মধ্যে ১৭টি গ্রহকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে টলটলে জলের সাগর এবং প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে বলে মিলেছে ইঙ্গিত। ছবি: পিক্সাবে।
মানুষের মতো শিম্পাজিদেরও মেনোপজ বা ঋতুজরা হয় বলে আবিষ্কার করা গিয়েছে এ বছরই। এতদিন তিমি-সহ কিছু বাছাই করা প্রাণীর ঋতুজরা হয় বলে প্রমাণ মিলেছিল। কিন্তু দীর্ঘকাল জীবিত থাকা প্রাণীদের শরীরে কী পরিবর্তন ঘটে, কতদিন সন্তানধারণের ক্ষমতা থাকে তাদের, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে মরিয়া ছিলেন জীববিজ্ঞানীরা। শিম্পাঞ্জিদের প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হরমোন পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাদের ঋতুজরা হয় ৫০ বছরের আশেপাশে। ছবি: পিক্সাবে।
শারীরিক সম্পর্ক লিপ্ত না হয়েও সন্তানধারণ বা পার্থেনোজেনেসিস-এ সক্ষম কুমিররা, প্রমাণ মিলল আমেরিকায়। সেখানে কোনও পুরুষসঙ্গীর সংস্পর্শে না এসেও সন্তান প্রসব করেছে একটি কুমির। জনসংখ্যা বিলুপ্ত হতে চললে, প্রাকৃতিক ভাবে কখনও কখনও এমন ঘটে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের একাংশের। কিছু সাপের ক্ষেত্রে এমন ঘটনার নজির রয়েছে। কুমিরের ক্ষেত্রে এই প্রথম এর প্রমাণ মিলল। ওই কুমিরের ছানাটি হুবহু তার মায়েরই প্রতিরূপ বলে জানা গিয়েছে। মা কুমিরটি রীতিমতো বন্দি অবস্থায় সন্তান প্রসব করেছে। ছবি: পিক্সাবে।
শনির উপগ্রহ Enceladus-এর বুকে সাগর রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার তার জবলে ফসফরাসের হদিশ মিলল। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন এবং সালফারের পাশাপাশি প্রাণসৃষ্টির ষষ্ঠ উপাদান ফসফরাস। আগেই পাঁচটি উপাদানের হদিশ মিলেছিল Enceladus-এর বুকে। এ বছর ষষ্ঠ উপাদানটিরও খোঁজ মিলল। ছবি: পিক্সাবে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -