Mohammed Kaif: দাদা বিশ্বের তাবড় ব্যাটারদের কাছে আতঙ্ক, শামির ক্লাস করে তৈরি হচ্ছেন ভাই কাইফও
তিনি হয়তো তারকাপুত্র নন। রোহন গাওস্কর বা অর্জুন তেন্ডুলকরের মতো তাঁকে হয়তো এখনও প্রত্যেক মুহূর্তে আতসকাচের তলায় ফেলা হচ্ছে না। কিন্তু ভবিষ্যতেও যে হবে না, সে নিশ্চয়তা নেই। বরং আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে...
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appতিনি যে মহম্মদ শামির (Mohammed Shami) ভাই! চেহারাতে সাদৃশ্য। বোলিং অ্যাকশন দেখলে যে কেউ বিভ্রান্ত হতে পারেন। শামিই বল হাতে দৌড়ে যাচ্ছেন না তো?
মহম্মদ কাইফ (Mohammed Kaif)। ডানহাতি মিডিয়াম পেসার এবারই বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) অভিষেক ঘটিয়েছেন। আর দ্বিতীয় রঞ্জি ম্যাচেই পেয়েছেন সেরার স্বীকৃতি। বল হাতে ৭ উইকেট। ব্যাটে অপরাজিত ৪৫ রান। কাইফের বোলিং দেখে মুগ্ধ লক্ষ্মীরতন শুক্ল, মনোজ তিওয়ারি, সৌরাশিস লাহিড়ীরাও।
শামির ভাই হওয়ায় কি বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে? প্রত্যেক মুহূর্তে আপনার পারফরম্যান্স অনুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় ফেলা হচ্ছে যে... ‘চাপ তো সামলাতে হবেই। তবে আমার সঙ্গে লক্ষ্মী ভাইয়া, প্যাটসি (সৌরাশিস) ভাইয়ারা আছে। সবাই খুব উৎসাহ দেয়। আগলে রাখে। সাপোর্ট স্টাফেরা সকলেই সাহায্য করে। বলে, বাইরের কিছু নিয়ে ভাবিস না। নিজের স্বাভাবিক বোলিংটা কর। নিজের শক্তি অনুযায়ী বোলিং কর। আসলে দাদা আমাকে সব সময় পরামর্শ দেয়। কিন্তু আমার হয়ে বোলিংটা তো করে দেবে না। সেটা আমাকেই করতে হবে,’ ইডেন সংলগ্ন হাওড়া ইউনিয়নের মাঠে দাঁড়িয়ে এবিপি আনন্দকে কথাগুলো যখন বলছিলেন কাইফ, গলায় পরিণতি বোধ।
গত ওয়ান ডে বিশ্বকাপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়নি। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। তবে বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন শামি। ফাস্টবোলিংয়ের দুরন্ত এক উদাহরণ সাজিয়ে দিয়েছিলেন। ২৫ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। যে সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে এক সাধনার কাহিনি। উত্তর প্রদেশের আমরোহার সহসপুরে ফার্ম হাউসে পিচ প্রস্তুত করেছেন শামি। করোনা অতিমারীর সময় গোটা বিশ্ব যখন ঘরবন্দি, খেলার মাঠেও ঝুলছে তালা, তখন নিজস্ব নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন শামি। পরিশ্রমের পুরস্কারও পেয়েছেন। বল হাতে হয়ে উঠেছেন আরও ধারাল, আরও বিপজ্জনক।
শামির সেই সাধনার সঙ্গী ছিলেন ভাই কাইফও। শামির সঙ্গেই ফার্ম হাউসে প্রস্তুতি সেরেছেন। কতটা সাহায্য করেছেন সেই প্রস্তুতি? কাইফ বলছেন, ‘শামি ভাইয়ের সঙ্গে প্র্যাক্টিস করে প্রচুর কিছু শিখেছি। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।’
শামির সঙ্গে বোলিং অ্যাকশনে অদ্ভুত সাদৃশ্য। তবে কাইফ বলছেন, ‘দাদাকে অনুকরণ করিনি। এটাই আমার সহজাত বোলিং।’ হেসে যোগ করছেন, ‘তবে হ্যাঁ, অনেকেই বলেন, আমার বোলিং অ্যাকশন, হাঁটাচলা, কথা বলার ধরন সবই নাকি দাদার মতো। আমি এরকমই। দাদাকে নকল করিনি। এটাই আমার সহজাত।’
২০১২ সালে শামির হাত ধরেই উত্তর প্রদেশ থেকে কলকাতায় আসা। কাইফ বলছেন, ‘দাদার হাত ধরে কলকাতায় এসেছিলাম প্রায় ১২ বছর আগে। সেই থেকেই ক্রিকেট খেলে চলেছি। ক্লাব ক্রিকেটে প্রথম দিকে দারুণ কিছু করেছি বলব না। তবে গত ২-৩ মরশুম ধরে নিজের উন্নতি ঘটিয়েছি।’ ক্রিকেটকেই পেশা করবেন, সেই স্বপ্ন দেখতেন? কাইফ বলছেন, ‘আমার প্রথম লক্ষ্য ছিল বাংলা দলে সুযোগ পাওয়া। সেই লক্ষ্যপূরণ হয়েছে। ভারতীয় দলে খেলার স্বপ্ন সকলেই দেখে। তবে তার জন্য অনেক পথ পেরতে হবে। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলতে হবে। এখন আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’
কলকাতায় এসে ফ্রেন্ডস অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে সিএবি-র স্থানীয় ক্রিকেটে খেলা শুরু করেন। তারপর ২ মরশুম খেলেন তালতলা একতার হয়ে। তারপর যোগ দেন টাউন ক্লাবে। যে ক্লাবে খেলে শামির উত্থান। সেখানেই গত ৯ মরশুম ধরে খেলছেন কাইফ।
প্রিয় ক্রিকেটার? পেসার কাইফের উত্তর শুনলে বেশ অবাক হতে হয়। কোনও ফাস্টবোলার নয়, তিনি বরং ভক্ত এক কিংবদন্তি ব্যাটারের। জাতীয় দলে দাদা শামির সতীর্থ। ‘বিরাট কোহলি আমার প্রিয় ক্রিকেটার,’ হাসিমুখে বললেন কাইফ। আর পেসারদের মধ্যে? কাইফ বলছেন, ‘শামি ভাই। আমি দাদার সঙ্গে থাকি, প্র্যাক্টিস করি। সামনে থেকে দেখি, কত কী শিখতে পারি।’
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -