Sarfaraz Khan: ১২ বছর বয়সে স্কুল ক্রিকেটে রেকর্ড, উপেক্ষার জবাব দিলেন ব্যাটেই
সরফরাজ খানের বয়স তখন ১২। মুম্বইয়ের স্কুল ক্রিকেটে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করতে শুরু করে দিয়েছে। হ্যারিস শিল্ডে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের নজির গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছে। ৪৩৯ রানের সেই ইনিংস তখন সংবাদ শিরোনামে। সেই থেকেই ক্রিকেট মহলে সকলের কাছে পরিচিত নাম হয়ে ওঠা। বালক সরফরাজ সেই সময়ই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিল, ‘আমার বাবা বলেছে সচিন তেন্ডুলকরের রান পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।’
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appহ্যারিস শিল্ডে সেই ইনিংসের ঠিক ১৪ বছর, তিন মাস ও দশ দিন পরে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক ঘটালেন সরফরাজ। ছোট থেকে নানা প্রতিকূলতা পেরতে হয়েছে। আর সব ঝড় ঝঞ্ঝায় পাশে থেকেছেন বাবা নওশাদ খান। যিনি সরফরাজের প্রথম কোচও।
অনিল কুম্বলের কাছে ইন্ডিয়া ক্যাপ পেয়েই তাই সরফরাজ দৌড়েছিলেন মাঠের ধারে দাঁড়ানো বাবার কাছে। বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলেন ইন্ডিয়া ক্যাপ। নওশাদ তখন কাঁদছেন। টুপিতে চুম্বন করে ফেরত দেন সরফরাজকে। ছিলেন সরফরাজের স্ত্রীও।
রাজকোটে ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন ধারাভাষ্যও করেন নওশাদ। ৪৫ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সত্তরের কাছাকাছি গড় রেখে রান করার পর প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পাচ্ছেন কেউ, এরকম নজির সচরাচর দেখা যায় না। নওশাদ ধারাভাষ্য করার ফাঁকেই জানিয়েছেন, অপেক্ষা কতটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল। পাশাপাশি নওশাদ জানিয়েছেন, দীর্ঘ অপেক্ষা সরফরাজের জেদ ও মানসিক দৃঢ়তা আরও বাড়িয়েছে।
রঞ্জি ট্রফিতে বছরের পর বছর হাজার রানের বেশি করেছেন। তবু জাতীয় দলের দরজা খুলতে পারেননি। সরফরাজের জন্য সব সময় বরাদ্দ থেকেছে উপেক্ষা।
একটা সময় মুম্বই দলে নিয়মিত সুযোগ পেতেন না। যে কারণে নওশাদের কথায় উত্তর প্রদেশ রাজ্য দলে যোগ দিয়েছিলেন। উত্তর প্রদেশের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেন। পরে মুম্বইয়ে ফেরেন সরফরাজ।
সরফরাজকে ব্রাত্য থাকতে দেখে প্রতিবাদ করেছিলেন সুনীল গাওস্করের মতো কিংবদন্তিও। সরফরাজের নাম ভারতীয় দলে না থাকা নিয়ে সেই সময় বলা হতো, তিনি নাকি ফিটনেসে পিছিয়ে। যা শুনে ক্ষুব্ধ গাওস্কর বলেছিলেন, যদি ফিটনেস না থাকা একটা ছেলে রঞ্জি ট্রফিতে হাজারের ওপর রান করে যায়, তাহলে রঞ্জি ট্রফিকে জাতীয় দলে ঢোকার সিঁড়ি বলা হবে কেন! তুলে দেওয়া হোক টুর্নামেন্ট।
ইয়ো ইয়ো টেস্টে সরফরাজের নাকি খারাপ ফল হয়েছিল। সেটা নিয়েও কটাক্ষ করেছিলেন গাওস্কর। বলেছিলেন, তিনি বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা মাঠে খেলবেন না ব়্যাম্পে হাঁটবেন!
সব উপেক্ষার জবাব নিজের অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই দিয়েছেন সরফরাজ। ৪৮ বলে হাফসেঞ্চুরি। ৬৬ বলে ৬২ রান করে ফেরেন তিনি। রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট না হলে হয়তো আরও বড় ইনিংস খেলতেন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -