Coal Formation: এক একটি আস্তরণেই লেগে যায় কয়েক হাজার বছর, সম্পদ থেকে আজ বিভীষিকা কয়লা

কবে, কখন সূচনা হয়েছিল, নির্দিষ্ট করে জানা নেই। কিন্তু হাজার হাজার বছর ধরে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কয়লা। শিল্পবিপ্লবের সময় থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও কয়লার ব্যবহার সার্বিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App
কিন্তু কয়লার গুণাগুণে যেমন উপকৃত গোয়া বিশ্ব, তেমনই বাতাসে বিষ ছড়ানোর জন্যও জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহারকে দায়ী করা হয়। বিশ্ব উষ্ণায়ন আজকের দিনে সবচেয়ে বড় সমস্যা জ্বালানির হিসেবে কয়লার ব্যবহার। কয়লার আগুন থেকে নির্গত ধোঁয়াই দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ। এই কয়লার উৎপত্তি কোথা থেকে, তাও জেনে রাখা জরুরি।

কয়লার উৎপত্তি আসলে গাছ থেকে, যে সে গাছ নয়, জলাভূমির গাছ। মাটির নিচে চাপা পড়ে, সঙ্কুচিত এবং উত্তাপিত হয়ে পাললিক শিলায় পরিণত হয়। সরল ভাষায় বলতে গেলে, উদ্ভিদ জীবাশ্ম হয়ে, তা থেকেই কয়লা সৃষ্টি হয়।
তবে উদ্ভিদ জীবাশ্মের আকার ধারণ করার পর, তা কয়লায় রূপান্তরিত হওয়া একাধিক দুর্ঘটনার ফলশ্রুতি বলে মত বিজ্ঞানীদের।
বিজ্ঞানীদের মতে, উদ্ভিদ জীবন্ত থাকাকালীনই কয়লার গঠন শুরু হয়ে যায়। আগুনে পুড়ে অথবা পোকা ধরে গাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ফুলের পরাগ রেণু থেকে পাতা, শিকড় থেকে পতঙ্গের বিষ্ঠা, কয়লার পরীক্ষা করলে, সবকিছুরই চিহ্ন পাওয়া যায়।
শুধু তাই নয়, কয়লা থেকে প্রাচীন কালের বাস্তুতন্ত্রের গঠনও জানা যায়। কোনও কয়লা পরীক্ষ করে যদি দেখা যায়, দাবানলে বা আগুনে পুড়ে গাছটির মৃত্যু হয়েছিল, তা থেকে সেই সময়ের জলবায়ু সম্পর্কেও ইঙ্গিত মেলে।
বিশ্বে যত কয়লা রয়েছে, তার অধিকাংশই জলাভূমির গাছ থেকে সৃষ্ট বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, জলাভূমিতে কোনও গাছের মৃত্যু হলে, তা জলে আবৃত থাকে। ফলে বাতাসে থাকা অক্সিজেন থেকে রক্ষা পায়। তার জের স্থলভূমির মতো অতি দ্রুত মৃত গাছটি নিঃশেষ হয়ে যায় না। বরং জলাভূমির নিচে বহুস্তরীয় ঘাসের চাপড়ার আকারে জমা হয়।
দীর্ঘ দিন এ ভাবে পড়ে থাকতে থাকতে, তাতে কীটপতঙ্গ, ছত্রাক, ব্যাকটিরিয়া এমনকি ভিতর থেকে গাছও গজিয়ে ওঠে। বিজ্ঞানীদের দাবি, কয়লার যে কোনও একটি স্তর গড়ে উঠতেই হাজার হাজার বছর সময় লাগে।
জলাভূমিতে যখন ঘাসের চাপড়ার আকারে পড়ে থাকে মৃত গাছ, তার মধ্যে চুঁইয়ে ঢুকে পড়ে বিভিন্ন খনিজ উপাদান। আমেরিকার কেন্টাকির কয়লায় যদিও লক্ষ লক্ষ বছর আগের লাভার খোঁজ মিলেছে। বর্তমানে সেখান বিজ্ঞানীরা লাভার ওই উপাদান পৃথক করে, তা নিয়ে সোলার প্যানেল, বায়ুকল এবং ব্যাটারি তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন।
কিন্তু কয়লার মধ্যে থাকা খনিজ উপাদানগুলি নানা সমস্যাও তৈরি করে। সমুদ্র সংলগ্ন জলাভূমির গাছ থেকে কয়লার উৎপত্তি হলে, তাতে সালফারের মাত্রা থাকে অত্যন্ত বেশি। খনি থেকে তোলার সময় অথবা ত জ্বালানোর সময় ধোঁয়া থেকে নানা রোগ হতে পারে। হৃদরোগেরও কারণ এই ধোঁয়া।
তবে জলাভূমির নিচে চাপা পড়া সব ঘাসের চাপড়ারই কয়লায় রূপান্তরিত হয় না। কিছু ক্ষয়ে যায়, কিছু শুকিয়ে যায়। কয়লা তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে অজৈব কিছুর আস্তরণ থাকতে হবে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -