ঠাটবাটে চমক লাগিয়ে এটিএম-প্রতারণা, পুলিশের জালে সুন্দরী মডেল
পুলিশ ওই মহিলার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকাও বাজেয়াপ্ত করেছে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appপুলিশের জেরায় বৈশালী জানিয়েছেন, মডেলিংয়ের জন্য নিজের পোর্টফোলিও তৈরির জন্য এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা যোগাড়ের কাজ শুরু করেন।
পুলিশ তত্ক্ষণাত্ এসে মডেলকে গ্রেফতার করে। পরে তাঁর অপরাধের সঙ্গী গাড়ির চালককেও গ্রেফতার করে পুলিশ। রেকর্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, ওই মডেলের বিরুদ্ধে এর আগেও পাঁচটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মুখার্জী নগরের এক বয়স্কা মহিলা বৈশালীর প্রতারণার শিকার হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি নিজেও মুখার্জী নগরের যে এটিএম কিয়স্কে প্রতারিত হয়েছিলেন সেই এটিএমে নজর রাখতে শুরু করেন।একদিন ওই এটিএম কিয়স্কের আশেপাশে মডেলকে দেখতে পান ওই মহিলা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ ওই মডেলের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অনেকগুলি এটিএম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে। এগুলির মধ্যে প্রতারণার শিকারদের এটিএম কার্ডও রয়েছে। একজনের কার্ড দিয়ে অন্যজনকে প্রতারণা করতেন বৈশালী।
মডেল বৈশালীর কাছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড থাকত। ফাঁদে পড়া ব্যক্তির যে ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড রয়েছে সেই ব্যাঙ্কেরই এটিএম কার্ড তাঁকে দিতেন বৈশালী। এরপরই শুরু হত বৈশালীর খেল। ওই ব্যক্তি এটিএম কিয়স্ক ছাড়লেই বৈশালী হাতানো কার্ড থেকে টাকা তুলে নিতেন।
বৈশালীর ঠাটবাট দেখে কেউ তাঁর উদ্দেশ্য শিকাররা ঠাওর করতে পারতেন না। আর এই সুযোগেই লোকজনকে নিজের ফাঁদে ফেলতেন বৈশালী। এরপর শিকার দ্বিতীয়বার এটিএমে কার্ড দিতে বলতেন বৈশালী। ওই সময় তিনি শিকারের এটিএমের পাসওয়ার্ড দেখে ফেলতেন। এটিএম মেশিন থেকে কার্ড বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই সেটি নিয়ে নিতেন বৈশালী। এরইমধ্যে শিকারের কার্ড হাতিয়ে নিজের কাছে থাকা কার্ড দিয়ে দিতেন।
এটিএমের আশেপাশেই ঘুরতেন বৈশালী। কোনও বয়স্কা মহিলা বা তরুণ এটিএমে ঢুকলেই তিনি তাঁদের পিছনে গিয়ে দাঁড়াতেন। এটিএম থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলেই বৈশালী বলতেন, নিশ্চয় কোনও সমস্যা আছে মেশিনে। দেখি কী করা যায়।
বৈশালী যতটাই সুন্দরী ততটাই ধাপ্পাবাজ। গাড়ি ছাড়া তিনি রাস্তায় বেরোন না। দামী পোশাক, ঠাটবাট দেখে কারুরই বিশ্বাস হবে না যে, এমন তরুণী ঠগবাজ হতে পারেন। দিল্লির মুখার্জী নগর এলাকায় বেশ কয়েকজন মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বৈশালী। কারুর থেকে ২৫ হাজার, আবার কারুর থেকে ৪০ হাজার টাকা। তাঁদের চোখের সামনেই ধোঁকা দিয়েছেন ওই মডেল। কিন্তু তাঁদের বিন্দুমাত্রও সন্দেহ হয়নি। এটিএম থেকে টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্যের নামে বৈশালি তাঁদের ঠকিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরুন ও বয়স্ক মহিলাদের ফাঁদে ফেলতেন বৈশালী। আর এভাবে ঠকানোর জন্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কের একাধিক এটিএম কার্ড সঙ্গে রাখতেন বৈশালী।
ফ্যাশন দুনিয়ায় এই ঝলমলে মডেল এখন পুলিশ হেফাজতে। প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। কয়েকজন মহিলাও এই তরুণীর প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বৈশালীর প্রতারণার চক্করে পড়ে যান। আর তাঁদের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেন বৈশালী।
২৩ বছরের মডেল বৈশালী রাজোরিয়া। বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের জন্য মডেলিং করেছেন আকর্ষণীয় চেহারার এই তরুণী। কিন্তু মডেলিংয়ের কাজে মন্দা দেখা দেওয়ায় অপরাধ জগতে পা দিলেন তিনি। আর এজন্য ব্যবহার করলেন নিজের সৌন্দর্য্যকে। সাহায্যের নামে লোকজনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলাই হয়ে উঠল তাঁর উদ্দেশ্য।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -