'ও দেশের প্রকৃত সন্তান...আমি গর্বিত', ছেলের মুখাগ্নি করে বললেন নিহত মেজর অনুজ সুদের বাবা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার, ছবিতে দেখুন
ছেলের চিতায় আগুন দেন অনুজের বাবা চন্দ্রকান্ত। তিনি জানান, ছেলের বলিদানে তিনি গর্বিত। বলেন, আমার ছেলে দেশের প্রকৃত সন্তান। অনুজের স্মরণে এদিন এনডিএ-তে একটি শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠান রাখা হয়। সেখানে নিহত মেজরের ছবিতে সকলে মাল্যদান করেন।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকফিনে শায়িত স্বামীর নিথর দেহ। সারা শরীর ঢাকা তেরঙায়। ফাঁকা মুখটা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছেন শোকসন্তপ্ত স্ত্রী। স্বামীকে শেষ দেখার যে বেদনা ও গভীর শোক, তা চোখের ভাষাতেই স্পষ্ট। জম্মু ও কাশ্মীরের হান্দওয়াড়ায় জঙ্গিদমন অভিযানে নিহত সেনা মজর অনুজ সুদের শেষকত্যের এই ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে নিহতের স্ত্রী আকৃতিকে স্বামীর দেহ আঁকড়ে রয়েছেন। এই ছবি বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই প্রচুর মানুষের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে।
পরিবারের তরফে জানানো হয়, ছোটবেলা থেকেই মেজর অনুজ সেনায় যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁরা জানান, ৬ মাস বাইরে কাটিয়ে শীঘ্রই ঘরে ফেরার কথা ছিল নিহত মেজরের। মেজর সুদ ব্রিগেড অফ দ্য গার্ডস রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। পরে, যা ২১ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর অঙ্গ হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের পোস্টিং তাঁর প্রায় ২ বছর হয়ে গিয়েছিল। গুরদাসপুরের ১২ গার্ড ইউনিটে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
শ্মশানে প্রচুর সংখ্যক কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। সকলে নিহত মেজরকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেনার তরফে গান স্যালুটের মাধ্যমে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। করোনা আতঙ্কের জেরে সেনাকর্মী ছাড়া, শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের শ্মশানের ভিতর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
গতকাল পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় জয়পুরে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নিহত কর্নেল আশুতোষ শর্মার। তিনিও হান্দওয়াড়ার ওই জঙ্গিদমন অভিযানে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। বন্ধুমহলে টাইগার নামে পরিচিত আশুতোষের চিতায় অগ্নিসংযোগ করেন স্ত্রী পল্লবী ও ভাই। পরিবারের পাশে উপস্থিত ছিলেন সেনাকর্মীরাও।
নিহত স্বামীকে স্যালুট করেন স্ত্রী পল্লবী। এর আগে, জয়পুরের সামরিক ঘাঁটির ৬১ তম ক্যাভালরি গ্রাউন্ডে শায়িত ছিল নিহত কর্নেলের দেহ। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং সেনার উচ্চপদস্থ কর্তারা।
গতকাল তাঁর নিথর দেহ রাখা ছিল চণ্ডিমন্দিরের কমান্ড হাসপাতালে। রাতে তা নিয়ে আসা হয় পঞ্চপুলার অমরাবতী এনক্লেভে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। চোখের জলে তাঁরা শেষ বিদায় জানান মেজরকে। বন্দমাতরম, ভারত মাতা কি জয়, মেজর অনুজ অমর রহে,-- জাতীয় স্লোগান ওঠে। তেরঙায় মোড়ানো কফিনবন্দি দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
শনিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলার হান্দওয়াড়ায় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হন পাঁচ সামরিক কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজন বছর তিরিশের মেজর অনুজ সুদ। বুধবার পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় চণ্ডীগড়ে।
বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা ব্রিগেডিয়ার চন্ত্রকান্ত সুদ। বোন হর্ষিতা সামরিক অফিসার। ছোটবেলা থেকেই সেনায় যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মেজর অনুজ। আর সেই স্বপ্নপূরণ করতেই ২০০৮ সালে যোগ দিয়েছিলেন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে। স্নাতক হন ২০১১ সালে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -