কিশোর কুমার না জন্মালে পৃথিবীটা এত রোম্যান্টিক থাকত কি?
প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে ৮ বার ফিল্মফেয়ার পেয়েছেন কিশোর, যা এক রেকর্ড। প্রথমটি পান ১৯৬৯ সালে আরাধনা ছবিতে, রূপ তেরা মস্তানা গানের জন্য। শেষবার পান ১৯৮৫-তে সাগর ছবির সাগর কিনারে দিল ইয়ে পুকারে গানটি গেয়ে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appপ্রবাদপ্রতিম এই গায়ক অসামান্য অভিনেতাও ছিলেন। হাফ টিকিট, চলতি কা নাম গাড়ি, মিস্টার এক্স ইন বম্বে, পড়োসানে তাঁর অভিনয় ফিল্ম প্রেমীদের মনে অমর হয়ে আছে।
১৯৮৭ সালে কিশোর ঠিক করেন, ফিল্ম থেকে সন্ন্যাস নিয়ে ফিরে যাবেন পুরনো শহর খান্ডোয়ায়। বলতেন, দুধ জলেবি খায়েঙ্গে, খান্ডোয়া মে বস জায়েঙ্গে। কিন্তু এই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। সে বছরই ১৮ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। মাতৃভূমি খান্ডোয়াতেই হয় তাঁর শেষকৃত্য।
রাজেশ খান্নার লিপে কিশোরের গলা দারুণ জনপ্রিয় ছিল। রাজেশ ছবি নির্মাতাদের বলতেন, তাঁর লিপে কিশোরকে দিয়ে গান গাওয়াতে। কিশোরের মৃত্যুর পর তিনি বলেন, আমার কণ্ঠ চলে গেল। রাজেশের লিপে তিনি গেয়েছেন, মেরে সপনো কি রানি, ম্যায়নে তেরে লিয়ে হি সাত রঙ্গ কে সপনো চুনে, আচ্ছা তো হাম চলতে হ্যায়ের মত অসংখ্য কালজয়ী গান।
১৯৪৬-এ শিকারী ছবির মাধ্যমে কিশোরের বলিউডে পা রাখা। ছবির নায়ক ছিলেন তাঁর দাদা অশোক কুমার। ১৯৪৮-এ জিদ্দি ছবিতে প্রথম তিনি গান গাওয়ার সুযোগ পান। গান করেন দেব আনন্দের লিপে।
১৯৭৬-এ তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী যোগিতা বালীকে। ২ বছর পর তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে যোগিতা বিয়ে করেন মিঠুন চক্রবর্তীকে। ১৯৮০-তে তিনি বিয়ে করেন লীনা চন্দ্রভারকরকে। তাঁদের ২ সন্তান।
কিশোর কুমার বিয়ে করেন ৪ বার। প্রথম পত্নী রুমা গুহঠাকুরতা। তারপর মধুবালা। মধুবালাকে বিয়ে করতে নাম বদলে মুসলিম নাম নেন তিনি- করিম আবদুল। বিয়ের ৯ বছর পর মধুবালার মৃত্যু হয়।
ছোটবেলা থেকে মজা করতে ভালবাসতেন কিশোর। পড়তেন ইন্দোরের ক্রিশ্চিয়ান কলেজে। ক্যান্টিন থেকে ধার করে খেতেন, বন্ধুদেরও খাওয়াতেন। ৫ টাকা ১২ আনা ধার জমে গেলে ক্যান্টিন মালিক তা শোধ করতে বলেন। তখন তিনি ক্যান্টিনে বসে গ্লাস আর চামচ বাজিয়ে যে ধুন গেয়ে গেয়ে ক্যান্টিন মালিককে নাজেহাল করে দেন, তাই পরে বলিউডে সুপার ডুপার হিটের স্বীকৃতি পায়।
বলিউডের দাদামণি, অশোক কুমার কিশোর কুমারের দাদা। তারপর এক দিদি, তারপর মেজদা অনুপ কুমার। অনুপ যখন বলিউডের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা, তখন কিশোর ছোট।
কুঞ্জলাল ছিলেন খান্ডোয়ার বিখ্যাত আইনজীবী। জন্মস্থানকে কখনও ভোলেননি কিশোর কুমার। চেয়েছিলেন খান্ডোয়াতেই জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাতে, যদিও সেই ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি।
১৯২৯-এর ৪ অগাস্ট মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায় গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে কিশোরের জন্ম। আসল নাম আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। বাবা কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায়, মা গৌরী দেবী।
মেরে সামনে ওয়ালি খিড়কি মেঁ, মেরে সপনো কি রানির মত অজস্র কালজয়ী গান তিনি গেয়েছেন। বহুদিন আগে চলে গিয়েছেন তিনি, তবু বলিউডের প্লেব্যাক গায়কী এখনও ভুলতে পারেনি তাঁকে। সেই কিশোর কুমারের আজ জন্মদিন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -