আমাদের গর্বের জাতীয় পতাকার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৪৭-এর ২২ জুলাই সংবিধান সভা বর্তমান জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। শুধু চরকার জায়গায় সারনাথ স্তম্ভ থেকে অশোকের ধর্মচক্র-টি গৃহীত হয় পতাকায়। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট স্বাধীন ভারতে প্রথমবার এই পতাকাটি উত্তোলিত হয়। (সূত্র-উইকিপিডিয়া)
১৯৩১ ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। ওই বছর করাচিতে কংগ্রেসের অধিবেশনে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে অনুমোদন করার জন্য একটি প্রস্তাব বেশ করা হয়। এবং এই পতাকাই জাতীয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃত হয়। এই পতাকার উপরে ছিল গেরুয়া, মাঝে সাদা এবং চরকা এবং নিচে সবুজ রঙ। এই সময় সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এর কোনও সাম্প্রদায়িক গুরুত্ব থাকবে না। গেরুয়া ত্যাগ; সাদা সত্য ও শান্তি এবং সবুজ বিশ্বাস ও প্রগতির প্রতীক তথা চরকা ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ও দেশবাসীর শ্রমশীলতার প্রতীক হিসেবে গৃহীত হয়।
১৯২১-এ গেরুয়া ও লাল রঙের পতাকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মান্যতা দেওয়া হয়েছিল। এই পতাকার গেরুয়া ও লাল রঙের মাঝে ছিল একটি বড় চক্র। কংগ্রেসের বেজওয়াড়া অধিবেশনে এই পতাকা প্রদর্শিত হয়। অন্ধ্রপ্রদেশের এক যুবক পিঙ্গলী বেঙ্কাইয়া একটি পতাকা তৈরি করে গাঁধীজীকে দিয়েছিলেন। এই পতাকা দুটি রঙের ছিল। লাল ও গৈরিক রঙ-দেশের দুটি প্রধান সম্প্রদায়- হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের প্রতীক দেশের প্রান্তিক সম্প্রদায়ের প্রতীক হিসেবে পতাকায় সাদা রঙ এবং দেশের অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে একটি চরখা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন গাঁধীজী।
পরের বছর ১৯০৭ সালে মাদাম ভিখাজি কামা প্যারিসে অন্য একটি ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেন। এই পতাকার উপরে ছিল গেরুয়া রঙ। মাঝে হলুদ ও নিচে সবুজ রং। মধ্যের ডোরায় দেবনাগরী হরফে বন্দে মাতরম কথাটি লিখিত ছিল। ভিখাজি কামা ও তাঁর সহযোগীরা এই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। অনেকের মতেই প্রথম পতাকাটির সঙ্গে দ্বিতীয়টির অনেক মিল ছিল।
১৯০৬-এর ৭ অগস্ট কলকাতার পার্সিবাগান এলাকায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী এক সভায় প্রথম ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলিত হয়। এই পতাকায় উপরে, মধ্যে ও নিচে যথাক্রমে সবুজ, হলুদ ও কমলা-এই তিনটি রঙ ছিল। উপরের সবুজ রঙের অংশে ছিল আটটি অর্ধ-প্রস্ফুটিত পদ্ম এবং নিচের ডোরায় সূর্য ও অর্ধচন্দ্র অঙ্কিত ছিল। মাঝে দেবনাগরী হরফে লিখিত ছিল বন্দে মাতরম। ১৯০৪ সালে স্বামী বিবেকানন্দের আইরিশ শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতা ভারতের প্রথম জাতীয় পতাকার রূপদান করেন।
আগামীকাল ভারতের ৭০ তম স্বাধীনতা দিবস। দেশের প্রতিটি স্থানে রাস্তায়, ঘরবাড়ি-সর্বত্র উড়বে গর্বের তিরঙ্গা। ভারতবাসীর জীবনের থেকেও প্রিয় এই জাতীয় পতাকা। এবার জেনে নেওয়া যাক দেশের জাতীয় পতাকার ইতিহাস।