কলকাতা : অমোঘ লীলা দাস (  Amogh Lila Das )। ইসকন ( Iskcon ) সংস্থার এই সন্ন্যাসীকে ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। সম্প্রতি রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দর মতাদর্শ নিয়ে এই সাধুর তীর্যক মন্তব্য কার্যত ঝড় তুলেছে ভক্ত মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে সমালোচনার ঢেউ। এরপর মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে অমোঘ লীলার ওই বক্তব্যের জন্য নিন্দা করে তাঁকে ১ মাসের জন্য নিভৃতবাসে পাঠানোর কথা জানাল ইসকন। সঙ্গে সংস্থার তরফে করা হল ক্ষমাপ্রার্থনা। 


ইসকনের তরফে লেখা হল, ' আমাদের নজরে এসেছে, ইসকন দ্বারকার আমাদের একজন ব্রহ্মচারী সন্ন্যাসী, শ্রী অমোঘ লীলা দাস ভারতীয় ইতিহাস এবং আধ্যাত্মিকতার দুই শ্রদ্ধেয় সাধক শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস ( Shree Ramakrishna ) এবং স্বামী বিবেকানন্দর ( Swami Vivekananda ) ভাবাদর্শ সম্পর্কে একটি অত্যন্ত অনুপযুক্ত মন্তব্য করেছেন। ইসকন,  তাঁর সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত এবং অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য এবং এই দুই ব্যক্তিত্বের মহান শিক্ষা সম্পর্কে তার বোঝার অভাবের জন্য অত্যন্ত দুঃখিত। ' 


১ মাসের জন্য নিষিদ্ধ
ইসকনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, তাঁর এই 'গুরুতর ভুলের' জন্য  তাঁকে ১ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁকেও এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। অমোঘ লীলা দাস তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, এবং তিনি উপলব্ধি করছেন যে তিনি কত বড় ভুল করেছেন। তিনি গোবর্ধনের পাহাড়ে ১ মাস প্রায়শ্চিত্ত করার ব্রত নিয়েছেন এবং অবিলম্বে জনজীবন থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করবেন।  


অমোঘ লীলা বলেছিলেন,  স্বামী বিবেকানন্দ যদি মাছ খান, তাহলে তিনি কী করে একজন সিদ্ধপুরুষ? ইসকনের তরফে এই মন্তব্যের সমালোচনা করে বলা হয়েছে তাঁর এই মন্তব্য শুধুমাত্র অসম্মানজনক নয় বরং আধ্যাত্মিক পথ এবং ব্যক্তিগত পছন্দের বৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতনতার অভাবেরও নিদর্শন। এই কাজগুলি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সম্প্রীতির মৌলিক নীতিগুলিকে ক্ষুন্ন করে, যা একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক।

ইসকন জানায়, আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে শ্রী অমোঘ লীলা দাস যে মতামত প্রকাশ করেছেন তা ইসকনের মূল্যবোধ ও শিক্ষাকে প্রতিফলিত করে না। ইসকন সর্বদা সমস্ত আধ্যাত্মিক পথ এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা রাখে।  ইসকন অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাস এবং অনুশীলনের প্রতি যে কোনও ধরনের অসম্মান বা অসহিষ্ণুতার নিন্দা করি। 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রামকৃষ্ণের ‘যত মত তত পথ’ বাণীকে উদ্ধৃত করে এমন ব্যাখ্যা দিয়েছেন,  যা নিয়ে বেজায় চটেছেন রামকৃষ্ণ ভক্তরা।  শ্রীরামকৃষ্ণ যেভাবে মানুষকে ঈশ্বরলাভের বহু পথ সম্পর্কে জ্ঞাত করার চেষ্টা করেছিলেন, তার সমালোচনা করেন অমোঘ লীলা।