কলকাতা : শ্রীমদ্ভাগবত গীতা । এই বইয়ে ভগবান কৃষ্ণের সেই উপদেশগুলির বর্ণনা রয়েছে, যেগুলি তিনি মহাভারতের যুদ্ধের সময় অর্জুনকে দিয়েছিলেন। গীতায় বর্ণিত উপদেশে আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক। জীবনযাপনের সঠিক পথ দেখায়। গীতায় ১৮টি অধ্যায় এবং ৭০০ শ্লোক রয়েছে, যাতে ধর্মের পথে চলার সময় ভাল কাজ করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
জীবনের সমস্ত দ্বিধা ও সমস্যার সমাধান গীতায় পাওয়া যায়। এটা মনে করা হয় যে, গীতার বাণী অনুসরণ করলে জীবন বদলে যায় এবং একজন মানুষ প্রতিটি কাজে সফল্য পান। আসুন জেনে নিই শ্রীমদ্ভাগবত গীতার অমূল্য ভাবনা সম্পর্কে।
গীতার উপদেশ-
- গীতায় লেখা আছে, যেখানে আপনার কোনও মূল্য নেই, সেখানে থাকা উচিত নয়। তা সে যা-ই হোক।
- গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সন্দেহের কোনও চিকিৎসা নেই, চরিত্রের কোনও প্রমাণ নেই, নীরবতার চেয়ে উত্তম কোনও উপায় নেই এবং শব্দের চেয়ে তীক্ষ্ণ তীর নেই।
- যে ব্যক্তি কখনো যোগব্যায়াম করেন না তাঁর মনে কোনও অনুভূতি থাকে না। এই ধরনের মানুষ কখনো কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এমন আবেগহীন মানুষ কখনোও শান্তি পান না এবং জীবনে সুখের মুখ দেখেন না।
- গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মনে অহঙ্কার থাকলে সাফল্য লাভ করা যায় না। নিঃস্বার্থ কাজ শুধুমাত্র মনের মধ্যে সমতা থাকলেই করা যায়। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত যোগযুক্ত হয়ে তার কাজ করা।
- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, যে মানুষ সমস্ত কামনা, বাসনা ত্যাগ করে, অহং ঝেরে ফেলে নিজের কর্তব্য পালন করেন, তিনি তাঁর কাজে সাফল্য ও শান্তি পান।
- গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, হে অর্জুন ! যে মানুষ আমাকে যেভাবে স্মরণ করে, আমি তাকে সেই অনুযায়ী ফল দিই। সবাই আমার পথই অনুসরণ করেন।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাড়িতে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা রাখার এবং পাঠ করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত, তবেই আপনি সম্পূর্ণ ফল পাবেন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা গ্রন্থ একটি অত্যন্ত পবিত্র গ্রন্থ। এটি সর্বদা পুজোর স্থানে রাখুন। স্নান না করে এই বই স্পর্শ করবেন না।
যে কোনও সময় গীতা পাঠ করা যেতে পারে, তবে আপনি যদি কোনও অধ্যায় শুরু করে থাকেন, তবে তা মাঝখানে না রেখে শেষ করেই আসন থেকে উঠবেন। পাঠ শুরু করার আগে ভগবান গণেশ এবং শ্রী কৃষ্ণকে স্মরণ করুন। আপনি যে ভঙ্গিতে প্রতিদিন আবৃত্তি করেন সেই ভঙ্গি ব্যবহার করুন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নীচে বা মাটিতে রেখে পাঠ করা উচিত নয়। এর জন্য পুজোর চৌকি বা কাঠ (কাঠের স্ট্যান্ড) ব্যবহার করুন।