শ্রীকৃষ্ণের (Janmashtami 2023) অষ্টোত্তর শতনাম। কেউ তাঁকে ভালবেসে ডাকে গোপান বলে। কেউ ডাকে মধুসূদন বলে। কেউ নারায়ন রূপে পুজো করেন বিষ্ণুকে। কেউ আবার আদর করে ডাকে ‘মোরমুকুটধারী'। ময়ূরের পালক সব সময় শোভা পায় কৃষ্ণ (Lord Krishna) ঠাকুরের মাথায়। কিন্তু জানেন কী কৃষ্ণের মাথায় কেন শিখিপাখা থাকে ? এই নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা গল্প।
শ্রীকৃষ্ণের মাথায় ময়ূরের পালকের কারণ নাকি পাওয়া যায় রামায়ণে। কেউ বলেন, ত্রেতা যুগে ভগবান কৃষ্ণ শ্রীরাম অবতার রূপে জন্মান। রামচন্দ্র যখন লক্ষ্মণকে সঙ্গে নিয়ে সীতাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন সজল নয়নে, তখন ময়ূররা নাকি পেখম দিয়ে রামচন্দ্রের চলার পথটি পরিষ্কার করে দিয়েছিল। ভগবান শ্রীরাম এই কাজে প্রসন্ন হয়ে শ্রীরামচন্দ্র কথা দিয়েছিলেন যে দ্বাপর যুগে তিনি আবার আবির্ভূত হবেন, তখন ময়ূর পালক সব সময় তাঁর শিরে স্থান পাবে। (religion)
দ্বাপরে শ্রীকৃষ্ণ শ্যামবর্ণ। শ্রীকৃষ্ণের রূপ দেখে একবার গোকুলধামের সব ময়ূররা তাঁকে দেখে নাচতে শুরু করে। কারণ ময়ূররা শ্রীকৃষ্ণের কালো বর্ণ দেখে মেঘের কথা মনে করে আহ্লাদিত হয়ে পড়ে । আর তা মনে পড়তেই আনন্দে পেখম মেলে নাচতে থাকে ময়ূররা। সেই থেকে শ্রীকৃষ্ণ ময়ূরের পালক মাথায় রাখেন। বাস্তুশাস্ত্রে ময়ূরের পালক ঘরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও এক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে এই ময়ূরের পালক নিয়ে। শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতের নিচে দাঁড়িয়ে একবার মনের সুখে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। এমন সময় আকাশে মেঘের ঘনঘটা শুরু হয়। তা দেখে নাচ শুরু করে সেখানকার ময়ূর দল। আর বাঁশিতে সঙ্গ দেন শ্রীকৃষ্ণ । সে এক স্বর্গীয় পরিবেশ। এরপরই শ্রীকৃষ্ণকে একটি ময়ূরের পালক উপহার দেন ময়ূরদের রাজা। সেই পালকটিই মাথায় রাখেন শ্রীকৃষ্ণ।
আরও এক কাহিনি প্রচলিত আছে। সম্পর্কে নাকি শ্রীকৃষ্ণ কার্তিকের মামা হন। আর কার্তিকের বাহন ময়ূর, আমরা তা জানি। ভাবা হয় এই কারণেই তিনি কার্তিকের বাহনের পালক মাথায় রাখেন। যাতে দেবসেনাপতি তাণর মস্তকে থাকেন আর তিনি সব যুদ্ধে জয় পেতে পারেন।
গীতার চতুর্থ অধ্যায় অর্থাৎ জ্ঞানকর্মসন্ন্যাসযোগ-এ ভগবান (Religion) তাঁর স্বরূপ দর্শন করিয়েছেন কৌন্তেয় অর্জুনকে। ভগবান কোন সময়ে আবির্ভূত হন, ঠিক কোন সময় তিনি বেছে নেন পৃথিবীতে আসার জন্য তা বলেছেন তিনি। এই অধ্যায়ের ৭ নম্বর শ্লোকে ভগবান পার্থকে বলেছেন,
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত । অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ৷৷ ৭
অর্থাৎ, যখনই বিশ্বে ধর্ম সঙ্কটাপন্ন হয়, অধর্মের বাড়বাড়ন্ত হয়, তখন ভগবান কোনও না কোনও অবতারে সামনে আসেন। কড়া হাতে অধর্মের বিনাশ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন।যখনই ধর্মের হানি এবং অধর্মের বৃদ্ধি হয়, তখনই আমি নিজেকে সৃষ্টি করি অর্থাৎ সাকার দেহ ধারণ করে লোকের সামনে প্রকটিত হই ৷ তেমনই দ্বাপর যুগে কংস নিধনের জন্য তাঁর প্রকাশ। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি শুরু হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর (6 September 2023 ) বিকাল ৩টে ৩৭ মিনিটে। অষ্টমী তিথি শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর ( 7 September 2023 ) বিকেল ৪.১৪য়।
আরও পড়ুন :