ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: সারাবছর দুর্গা রূপে পূজিতা হন মা ফুল্লরা (Fullara Temple)। কিন্তু কালীপুজোয় (Kali Puja 2023) মা কালী রূপে পূজিতা হন। ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ বীরভূমের লাভপুরের ফুল্লরা।


মা ফুল্লরার আরাধনা: কলকাতা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে লাভপুর। বীরভূম জেলার এই অংশ প্রাচীনকালে অট্টহাস নামে পরিচিত ছিল। এই নাম থেকেই মনে পড়ে, চণ্ডীর ব্যাখ্যায় রয়েছে, অসুর নিধনে দেবীর আবির্ভাব হওয়ার পর তিনি অট্টহাসিতে আকাশ বিদীর্ণ করছেন। অশুভের নিধনে শুভ শক্তির জয়োল্লাস। লোকে বলে, বীরাচারীদের ভূমি বীরভূম। পঞ্চসতীপীঠের অন্যতম লাভপুরের ফুল্লরা দেবী। ‘অট্টহাসে ওষ্ঠ পাতো দেবী সা ফুল্লরা স্মৃতা। বিশ্বেশো ভৈরব স্তত্র সর্বাভীষ্ট প্রদায়ক।’ মনের কামনাই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই তিথিতে এখানে। পুজো দেন মায়ের মন্দিরে। সকাল থেকেই লাভপুর ফুল্লরা মন্দির চত্বরে ভিড় জমিয়েছেন পূণ্যার্থীরা। বিশেষ ভোগেরও আয়োজন করা হয় মন্দিরে। ত্রয়োদশী তিথিতে, মায়ের ভোগে থাকে, মাছ, মাংস, ডাল, দু রকম সবজি, টক, পাঁচ রকম ভাজা। 


সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল এই পীঠে
পীঠ নির্নয় তন্ত্র মতে, এখানে সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল। পীঠ নির্নীত হওয়ার শর্ত অনুসারে এখানে কাদর বা কোপাই নদী উত্তর বাহিনী। স্থানীয়ভাবে এর নাম লা ঘাটা। বোলপুর থেকে লাভপুর যাওয়ার পথে ডানহাতে নতুন এই তোরণ নির্মীয় হয়েছে। সেখান থেকে কিলোমিটার খানেক ভিতরে ঢুকলে মূল মন্দির। মন্দির চত্বর খুব প্রশস্ত নয়। গর্ভগৃহের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। জগমোহনে রয়েছে হাড়ি কাঠ। তবে এই মন্দির চত্বরের মধ্যে মূল তোরণের পাশের শিব মন্দিরটি সবচেয়ে পুরনো। নাটমন্দিরের পড়েই রয়েছে মায়ের ঘাট। কালীপুজো উপলক্ষ্যে ভক্তদের ঢল। সারাবছর এখানে দেবী দুর্গা রূপে পূজিত হয়ে থাকেন। তবে কালী পুজোয় দেবী দুর্গার পাশাপাশি মা কালী রূপে পুজো হয়ে থাকে মা ফুল্লরার। 


অন্যদিকে তারাপীঠে (Tarapith Temple) শক্তির আরাধনার আয়োজন করাা হয়েছে। আলোর মালায় সেজেছে গোটা মন্দির। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সরগরম মন্দির চত্বর। এদিন ভোর সাড়ে ৫টায় খুলেছে মন্দিরের দরজা। সকালে তেল, অগুরু, গোলাপজল, ডাবের জল, কারণবারি দিয়ে স্নানের পর দেবীর শিলাব্রহ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়। চুনরি পরিয়ে সাজানো হয় মাকে। এরপর পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো।


আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: মহাকালী রূপে পূজিতা, দু’বার ভোগের আয়োজন কঙ্কালীতলায়