হিন্দু ধর্মে হনুমানজির অনেক গুরুত্ব। বিশেষত মঙ্গলবার সকলে বজরঙ্গবলীর আরাধনা করেন। মনে করা হয় মঙ্গলে ভগবান শ্রীরামের নাম করলে আর হনুমানকে পুজো নিবেদন করলে অনেক বিপদ আপদ কেটে যায়। হনুমানজীর আরেক নাম সঙ্কটমোচক। তাই হনুমান বিভিন্ন দুর্গম স্থানেও হনুমান মন্দির থাকে।
ভারতে বিভিন্ন জায়গায় হনুমানজির বড় মন্দির রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ভারতে রামভক্ত হনুমানের এমন একটি মন্দির রয়েছে, যেখানে তাঁর পুজো করেন মুসলিমরা। কোথায় রয়েছে এমন মন্দির। ভক্তদের অনেকেরই অজানা এই তথ্য।
কোথায় হনুমানজী মুসলিমদের দ্বারা পূজিত ?
হিন্দু ধর্মে হনুমানজির মূল পরিচয় রামভক্ত হিসেবেই। অত্যন্ত উচ্চ বলে মনে করা হয়। কথিত আছে যে হনুমান জি অমর এবং এখনও এই পৃথিবীতেই বিরাজমান। তাই সহজে সাড়া দেন তিনি। ভক্তরা একাধিক নামে ডেকে থাকেন পবনপুত্র হনুমানকে। অঞ্জনিপুত্র, মারুতিনন্দন, বজরংবলী, কেশরিনন্দন, সঙ্কটমোচন-এরকম নানা নামে ডাকা হয় হনুমানকে। হনুমানের ১০৮টি নাম রয়েছে। হনুমানের ১০৮ নাম জপ করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
যেখানেই রামায়ণ পাঠ করা হয়, হনুমানজি সেখানে অবশ্যই উপস্থিত থাকেন।ভারতে এমন একটি মন্দিরও রয়েছে যেখানে সেই মন্দিরে হনুমান জির পুজো করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। কথাটা শুনে হয়তো অবাক হবেন কিন্তু এটাই সত্যি। কর্ণাটকের গদগ জেলার কোরিকোপ্পা গ্রামের হনুমান মন্দিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পুজো করেন বজরঙ্গবলীর। ভারতে এটিই একমাত্র হনুমান মন্দির, যেখানে এমনটা হয়।
কেন এমন রীতি ?
জানা যায়, কর্ণাটকের এই গ্রামে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল বহুকাল আগে। মহামারীর আকার নেয় এই রোগ। আগেকার দিনে কলেরা হলে গ্রামের পর গ্রামে মড়ক লেগে যেত। তাই ওই গ্রামে বসবাসকারী মানুষজন গ্রাম ছেড়ে পালায়। গ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোনও মানুষই আর অবশিষ্ট ছিলেন না। গ্রামের সব মুসলিমরাও গ্রাম ছেড়ে চলে যান।
এখানকার মন্দিরটি বেশ বিখ্যাত ছিল। ভগবান এখানে খুবই জাগ্রত ছিলেন বলে বিশ্বাস। তাই পার্শ্ববর্তী বদনী গ্রামের কিছু মুসলিম পরিবার এই মন্দিরে পুজো করতে শুরু করেন। তাঁরাই এই মন্দিরের সংস্কার করেছিলেন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত, ভগবান হনুমানের উপাসনার দায়িত্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর বর্তায় এবং তারা তা খুশি মনে পালন করেন।
আরও পড়ুন :
হনুমানজীর ভক্ত অথচ এই কথাগুলি জানেন না?