নয়া দিল্লি: হিন্দু ধর্মে পিতৃপক্ষের সময়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। ১৫ দিনের এই বিশেষ সময়টি পূর্বপুরুষদের জন্য উত্সর্গ করা হয়ে থাকে। পিতৃপক্ষের সময় পূর্বপুরুষদের স্নান, দান, তর্পণ ও শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করা হয়। পিতৃপক্ষের সময়, একজন পূর্বপুরুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। মনে করা হয়, ভক্তি সহকারে পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ করলে তাদের পিন্ডদান ও তর্পণ সম্পন্ন হয়।
বিশ্বাস অনুসারে, পিতৃপক্ষের সময়, আমাদের পূর্বপুরুষরা কোনও না কোনও রূপে পৃথিবীতে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং শ্রাদ্ধশান্তির মাধ্যমে আমাদের আশীর্বাদ করেন। পিতৃপক্ষের সময়টি পিতৃ দোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যও সেরা। জানা যায়, এই সময়ে কিছু ব্যবস্থা করলে পিতৃপুরুষদের আত্মা শান্তি পায়। বলা হয়, আপনি যদি আপনার পূর্বপুরুষদের মৃত্যুর তারিখ না জানেন সেক্ষেত্রে আশ্বিন কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে পিণ্ডদান করতে পারেন।
এবার পিতৃপক্ষ ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৪ অক্টোবর শেষ হবে। প্রতি বছর পিতৃপক্ষ ভাদ্রপদ মাসের পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয়ে আশ্বিন মাসের অমাবস্যা পর্যন্ত চলে। একে সর্ব পিতৃ অমাবস্যাও বলে।
পিতৃদোষ কাটানোর শুভ সময় কখন?
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩- পূর্ণিমা
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩- প্রতিপদে শ্রাদ্ধের সময়
০১ অক্টোবর, ২০২৩- তৃতীয়া
০২ অক্টোবর, ২০২৩- চতুর্থী
এই দিনে পিতৃতর্পণ করা হয়। তবে তর্পণ যে কেবল পূর্বপুরুষদের জন্য তা নয়, পৃথিবীর সামগ্রিক সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যে, উত্তোরণের উদ্দেশে। সেই কারণেই তর্পণ মন্ত্রে বলা হয়ে থাকে, "তৃপ্যন্তু সর্বমানবা"। অর্থাৎ মানবজাতিকে তৃপ্ত করার দিন। এই তর্পণ শব্দের ব্যুৎপত্তি হল তৃপ + অনট। তৃপ ধাতুর অর্থ তৃপ্তি সাধন করা।
এখানে তৃপ্তি সাধন বলতে দেব-ঋষি- পিতৃ-মনুষ্যগণের তৃপ্তিসাধনকে করার অর্থে ব্যবহার করা হয়। মহালয়ের এই লগ্নে যাঁদের পুত্র নেই, যাঁদের কেউ নেই, তাঁদেরও স্মরণ করা হয়ে থাকে তর্পণের মাধ্যমে। তাই মন্ত্রে উল্লেখ করা হয়ে থাকে, ওঁ নমঃ যে বান্ধবা অবান্ধবা বা, যে অন্য জন্মনি বান্ধবাঃ। তে তৃপ্তিং অখিলাং যান্ত, যে চ অস্মৎ তোয়-কাঙ্খিণঃ। অর্থাৎ, যাঁরা আমাদের বন্ধু ছিলেন, যাঁরা বন্ধু নন, যাঁরা জন্ম-জন্মান্তরে আমাদের বন্ধু ছিলেন, যাঁরা আমাদের কাছে জলের প্রতাশা করেন, তাঁরা সম্পূর্ণরূপে তৃপ্তিলাভ করুন।
ডিসক্লেমার: এখানে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র অনুমান এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে এবিপি লাইভ কোনও ধরনের বিশ্বাস, তথ্য সমর্থন করে না। কোন তথ্য বা অনুমান প্রয়োগ করার আগে, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।