নয়াদিল্লি: জলও তাঁর হাতের ছোঁয়ায় ওয়াইন হয়ে যেত বলে শোনা যায়। আবার তাঁর হাতের ছোঁয়ায় পাঁচটি পাউরুটি কয়েক হাজারের খিদে মেটাত বলেও কথিত রয়েছে। বড়দিনের আগে সেই জিশু খ্রিস্টকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবিষ্কার করে ফেললেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। মাটি খুঁড়ে ১৩০০ বছর আগের একটি সেঁকা পাউরুটি উদ্ধার করলেন তাঁরা। বর্তমানে ওই পাউরুটি শুকিয়ে একেবারে পাথর হয়ে গিয়েছে বলে জানা  গিয়েছে। কিন্তু তার উপর যে মুখ আঁকা রয়েছে, সেটি জিশু খ্রিস্টের বলে জানা যাচ্ছে।

Continues below advertisement

দক্ষিণ-মধ্য তুরস্কের কারামানে খোঁড়াখুঁড়ির সময় ৭-৮ শতকের পাঁচটি গোল পাউরুটি উদ্ধার হয়েছে। ওই পাঁচটি রুটির মধ্যে একটির উপর জিশুর চেহারা আঁকা রয়েছে। রুটির উপর লেখা রয়েছে ‘জিশুর কৃতজ্ঞতা সহকারে’। তোপ্রাকতেপ প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাস্থল থেকে ওই রুটি উদ্ধার হয়েছে, যা প্রাচীন শহর আইরেনোপলিস। বিষয়টি সামনে আসতেই চর্চা শুরু হয়েছে। 

রুটির উপর স্ট্যাম্পের আকারে জিশুর চেহারা ও বাণী লেখা রয়েছে। জিশুকে বীজবপনকারী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে রুটির উপর। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা বার্তা লেখা হয়েছে গ্রিক ভাষায়। ভাল ভাবে সংরক্ষণ করাতেই এত বছর পরও রুটিটি অক্ষত রয়েছে বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এতে ওই সময়কার খ্রিস্টানদের জীবনযাপন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ধারা সম্পর্কে ধারণা মেলে বলে মনে করছেন তাঁরা। 

Continues below advertisement

শিল্পীর তুলির সৃষ্টিকর্ম হোক, বা সিরিয়াল, সিনেমা, জিশু খ্রিস্টকে নানা ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডান তোলা অবস্থায় দেখা জিশুর ছবি দেখা যায়। বাইজান্টিন এবং পূর্বের রক্ষণশীল চিত্রকলার সর্বত্রই প্রায় একই রীতি চোখে পড়ে। কিন্তু ওই ১৩০০ বছর পুরনো রুটিতে জিশুকে বীজ বপনকারী অর্থাৎ কৃষক হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা উর্বরতা, শ্রমের প্রতীক বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কিছু পাউরুটির উপর আবার ‘Maltese Cross’ও দেখা গিয়েছে, যা সেন্ট জনের ক্রুশ বা ‘ক্রস অফ আমালফি’ হিসেবে পরিচিত। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, ওইগুলি সাধারণ রুটি নয়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় ব্যবহৃত রুটি। ওই রুটিকে তাই 'Communication Bread' বলছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।

এর আগে, ২০২৪ সালে পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্রিস্টান গির্জা আবিষ্কারের ঘোষণা হয়। আর্মেনিয়ায় একটি ধ্বংসাবশেষ খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে সেটির খোঁজ পায় ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস অফ আর্মেনিয়াকর গবেষকরা। সেটি চার শতকের গির্জা বলে জানা যায়। চার শতকেই আর্মেনিয়া খ্রিস্টধর্মকে গ্রহণ করে। সেই সময়ই গির্জাটির নির্মাণ হয়ে থাকবে। তুরস্কের আন্তালিয়ায় সম্প্রতি পাঁচ শতকেরও একটি গির্জার ধ্বংসাবশেষ মিলেছে। সেখানকার প্রবেশদ্বারে লেখা ছিল, 'সৎপথে থাকা মানুষরাই শুধু প্রবেশ করতে পারেন'।