নয়াদিল্লি: দুরন্ত গতিতে পৃথিবী অভিমুখে ছুটে আসছে গ্রহাণু। বৃহস্পতিবারই ওই গ্রহাণুটি পৃথিবীরে একেবারে কাছাকাছি এসে পড়বে বলে জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. সমন্বিত সর্বজনীন সময় অনুযায়ী আজ সন্ধে ৬টা বেজে ৩১ মিনিটে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে এসে পড়বে গ্রহাণুটি। আপাতত ওই গ্রহাণুটির গতিবিধির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন NASA-র বিজ্ঞানীরা। (Asteroid 2024 JG15)


এই গ্রহাণুটির নাম রাখা হয়েছে 2024 JG15. সেটি Apollo Group-এর অন্তর্গত। পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থিত গ্রহাণুগুলিই Apollo Group-এর মধ্যে পড়ে। তিনের দশকের আশেপাশে জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল রেনমাথ 1862 Apollo নামের একটি গ্রহাণু অবিষ্কার করেন, সেই থেকেই এমন নামকরণ। Apollo Group-এর অন্তর্ভুক্ত গ্রহাণুগুলির আয়তন ১০ কিলোমিটারের কম হয়। (NASA Alert)


এই মুহূর্তে যে 2024 JG15 গ্রহাণুটি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে, সেটির আয়তন ২০৫ ফুট। অর্থাৎ একটি বিমানের সমান আয়তন। প্রতি ঘণ্টায় ৩৮ হাজার ৯১৩ কিলোমিটার গতিতে সেটি পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে। আজ সন্ধে ৬টা বেজে ৩১ মিনিটে পৃথিবী থেকে মাত্র ২৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করবে সেটি।


আরও পড়ুন: Upside-Down Skyscraper: নেমে আসবে আকাশ ফুঁড়ে, গ্রহাণু থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে হবে পৃথিবীর উচ্চতম বিল্ডিং নির্মাণ?


২৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বকে অনেক মনে হলেও, জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসেব অনুযায়ী, মোটেই পৃথিবী থেকে ততটা দূরে থাকবে না গ্রহাণুটি।  অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এই দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব। এখনও পর্যন্ত বহু গ্রহাণুই পৃথিবীর গা ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে। তবে গ্রহাণুর একটি টুকরোও যদি পৃথিবীতে ছিটকে আসে, তাতেই ঘটে যেতে পারে অনর্থ।


NASA-র Centre for Near Earth Object- Studies লাগাতার 2024 JG15 গ্রহাণুটির উপর নজরদারি চালাচ্ছে। তবে সেটির পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তেমন নেই। বরং পৃথিবীর গা ঘেঁষেই বেরিয়ে যাবে। এমনিতে যে গ্রহাণুর আয়তন ৪৬০ ফুটের বেশি হয়, গতিবেগ যার ৭৫ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি তাকে বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করে NASA.  সেই নিরিখে 2024 JG15 গ্রহাণুটি তত বিপজ্জনক নয়। তবে যেহেতু পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে, তাই তার উপর নজর রাখা হচ্ছে।


গ্রহাণু আসলে বৃহদাকার মহাজাগতিক প্রস্তরখণ্ড। আজ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি বছর আগে সৌরজগৎ গড়ে ওঠার সময়ই সেগুলির জন্ম। মঙ্গলগ্রহ এবং বৃহস্পতির মাঝের গ্রহাণু বলয়েই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গ্রহাণু চোখে পড়ে। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সেগুলি। কোনও গ্রহাণু যদি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তাহলে সেটির আকারের নিরিখে ক্ষয়ক্ষতি হবে। আকারে বড় গ্রহাণু আছড়ে পড়লে একটি গোটা শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।