নয়াদিল্লি : মহাকাশ-সংক্রান্ত অনুসন্ধান ও বিজ্ঞানের জন্য তাঁর আত্মত্যাগ আজ গোটা বিশ্বে সমাদৃত। ওহিও-র মতো একটা ছোট শহর থেকে উঠে এসে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন পর্যন্ত যাত্রাটা অতটা মসৃণ ছিল না ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামসের কাছে।
১৯৬৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ওহিওয় জন্মগ্রহণ করেন সুনীতা। বাবা দীপক পাণ্ড্য ও মা বনি পাণ্ড্য। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে মহাকাশ-সংক্রান্ত একাধিক মিশনে শামিল হয়েছেন তিনি। এইসব অভিযান থেকে বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। মহাকাশে ৩২২ দিন কাটানো সুনীতা NASA-র অন্যতম অভিজ্ঞ নভোশ্চর ।
দু-দু'টো মহাকাশ মিশনের সঙ্গে জড়িত সুনীতা ১৯৯৮ সালে মহাকাশ-জগতে প্রবেশ করেন। NASA-র বক্তব্য, তিনি বর্তমানে বোয়িং-এর স্টারলাইনার মহাকাশযানে ক্রু ফ্লাইট টেস্ট মিশনের পাইলট হিসাবে কাজ করছেন। এই যানটির জন্য প্রথম ক্রু ফ্লাইট। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তাঁর তৃতীয় মিসন।
সুনীতার শিক্ষাগত যোগ্যতা-
ম্যাসাচুয়েটসের নিধম হাইস্কুল থেকে ১৯৮৩ সালে স্কুলের পঠন-পাঠন শেষ করেন সুনীতা। বস্টনের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত নিধম শহরতলির উচ্ছ্বাস এবং প্রাণবন্ত সম্প্রদায়ের জন্য পরিচিত। এরপর ১৯৮৭ সালে আমেরিকার নৌ আকাডেমি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৯৫ সালে ফ্লোরিডা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্টে এম এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
মহাকাশে তাঁর প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর। ২০০৬ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে ২০০৭ সালের ২২ জুন পর্যন্ত চলা সেই অভিযানে সুনীতা ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছিলেন। NASA বলেছিল, 'ফ্লাইটে থাকাকালীন, তিনি ২৯ ঘণ্টা ১৭ মিনিটে মোট চারটি স্পেসওয়াক করে মহিলাদের বিশ্ব রেকর্ড গড়েন।' তাঁর দ্বিতীয় মহাকাশ অভিযান শুরু হয় ২০১২ সালে ১৪ জুলাই থেকে । চলে ওই বছরের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
এরপর ২০২৪ সালের ৫ জুন শুরু হয় তাঁর তৃতীয় মহাকাশ অভিযান। ওইদিন Boeing Starliner-এ চড়েন তিনি। প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের জন্য ছিল ওই মিশন। কিন্তু, এখন তা বেড়ে গিয়েছে। মহাকাশযানে যান্ত্রিক গোলযোগের জেরে নির্ধারিত সময়ে পৃথিবীতে ফেরা হয়নি সুনীতার। এখনও মহাকাশেই আটকে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোশ্চর। কবে তাঁকে ফেরানো যাবে, সেই নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের জায়গায়, কয়েক মাসও তাঁকে মহাকাশে থাকতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সুনীতার সঙ্গে মহাকাশে আটকে পড়েছেন ব্যারি বুচ উইলমোরও। মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায়, আপাতত আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনেই আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা।