নয়াদিল্লি: মহাসাগরের নীচেও পৌঁছে যাচ্ছে মাদক, যার দরুণ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে সামুদ্রিক প্রাণীরাও। দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার তাঁদের আশঙ্কাই সত্য বলে প্রমাণিত হল। ব্রাজিল উপকূলে মাদক পরীক্ষায় ব্যর্থ হল হাঙরের দল। পরীক্ষায় সেখানে একাধিক হাঙরের শরীরে কোকেন পাওয়া গিয়েছে। এভাবে চললে, আগামী দিনে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। (Cocaine in Sharks)


সামুদ্রিক প্রাণীদের শরীরে মাদক ঢুকছে এবং তার দরুণই তাদের আচরণ পাল্টে যাচ্ছে বলে অনেক আগে থেকেই দাবি করছিলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি রিও ডি জেনিরোর কাছে উপকূলে ১৩টি শার্পনোজ হাঙরকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়। আর তাতেই হাঙরদের শরীরে উচ্চমাত্রায় কোকেনের উপস্থিতি ধরা পড়ে। হাঙরগুলির পেশিতে এবং যকৃতে অত্যধিক মাত্রায় কোকেন পাওয়া গিয়েছে। (Science News)


কীভাবে হাঙরের পেটে কোকেন পৌঁছে যাচ্ছে, তা যদিও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। তবে বিষয়টি মোটেই হেলাফেলা করার মতো নয় বলে মত বিজ্ঞানীদের। সামুদ্রিক প্রাণীদের মাদকাসক্ত হওয়ার সপক্ষে এখনও পর্যন্ত যে তত্ত্ব সামনে এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম হল, বেআইনি ভাবে মাদক তৈরি করে যে সমস্ত সংস্থা তাদের বর্জ্য এসে সমুদ্রে মিশছে। আবার মাদক ব্যবহারকারীদের মল-মূত্রও নদী-নালা হয়ে এসে মিশছে সমুদ্রেই। এর ফলেই সামুদ্রিক প্রাণীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে বলে মত সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীদের।


আরও পড়ুন: Andes Mountains Shrinking: জলবায়ু পরিবর্তনের জের, একটু একটু করে পাল্টে যাচ্ছে আন্দিজ পর্বতমালা


এর পাশাপাশি, আরও একটি তত্ত্ব উঠে আসছে, যা হল, মাদক পাচারকারীরা পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সমুদ্রে মাদকের প্যাকেট ফেলে দেন অনেক সময়। সেই থেকেও সামুদ্রিক প্রাণীদের শরীরে মাদক ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের একাংশ। যদিও ব্রাজিলের মাদকের সমস্যা মেক্সিকো বা ফ্লোরিডার মতো নয়। তাই সেখানকার সামুদ্রিক প্রাণীদের শরীরে মাদক কোথা থেকে আসছে, সেই নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।


পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হাঙরদের শরীরে অত্যধিক মাদক প্রবেশ করেছে। যে  কারণে তাদের আচরণও পাল্টে গিয়েছে। আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে তারা। হাবভাব আগে থেকে আচরণ বোঝা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের মতে, মাদক সরাসরি মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। হঠাৎ চঞ্চল হয়ে ওঠা, অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়। পশুদের শরীরে আগেও এই সমস্যা দেখা গিয়েছে। তবে হাঙরের শরীরে মাদক পাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে, কারণ এর আগে যে সমস্ত সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে মাদক পাওয়া গিয়েছিল, হাঙরের শরীরে তার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি মাদক মিলেছে বলে খবর। বিজ্ঞানীদের মতে, এতে তাদের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, শিকার করার ক্ষমতাও চলে যেতে পারে, কমে যেতে পারে আয়ুও।