নয়াদিল্লি: একটি বা দু'টি নয়, পৃথিবীর গা ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে ছ'-ছ'টি গ্রহাণু। রাত পোহালেই এমন বিরল ঘটনা ঘটতে চলেছে। সেই নিয়ে আগেভাগে সকলকে সতর্ক করল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. যে ছ'টি গ্রহাণু পৃথিবীর গা ঘেঁষে ছুটে যাবে, তাদের মধ্যে একটির আয়তন প্রায় ৫৮০ ফুট বলে জানা গিয়েছে। একসঙ্গে এতগুলি গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি আসছে বলে উদ্বেগও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা লাগাতার তাদের গতিপথ নিরীক্ষণ করেছেন। (Asteroids to Pass by Earth)


২৪ অক্টোবর, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই মহাজাগতিক ঘটনা ঘটতে চলেছে। ছ'টি গ্রহাণুর মধ্যে একটিরও পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়া বা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে NASA. কিন্তু পৃথিবীর গা ঘেঁষে একসঙ্গে এতগুলি গ্রহাণু ছুটে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাজাগতিক ঘটনা। তাই গ্রহাণুগুলির উপর নজরদারি চলছে। এতে মহাজাগতিক বস্তুসমূহের সমীকরণে কোনও প্রভাব পড়ে কি না, তা-ও দেখার। (Science News)


যে ছ'টি গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে, সেগুলি হল, 2023 TG14, 2002 NV16, 2015 HM1, 2024 TP17, 2024 TR6, 2021 UE2. এর মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে 2023 TG14. পৃথিবী থেকে 0.017 অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট বা ২৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্ব হবে। এটি আয়তনে সবচেয়ে ছোট, ১৮-৪১ মিটার। সেকেন্ডে ৬.৯ কিলোমিটার গতিতে ছুটে যাবে সেটি। ছ'টি গ্রহাণুর মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় 2002 NV16. এর আয়তন ১৪০ থেকে ৩১০ মিটার। পৃথিবী থেকে দূরত্ব হবে ৪৫ লক্ষ কিলোমিটার। সেকেন্ডে ৪.৮৭ কিলোমিটার গতিবেগ।


2015 HM1 গ্রহাণুটিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে ০.০৩৬৯ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট। আয়তন ২৪ থেকে ৫৪ মিটার। সেকেন্ডে ১০.৮৮ কিলোমিটার গতিবে। বাকি তিনটি গ্রহাণুর আয়তন ৩০ থেকে ৯২ মিটারের মধ্যে। ৪৫ থেকে ৫৬ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বে সেগুলি অবস্থান করবে। পৃথিবীর জন্য এর কোনওটিই বিপজ্জনক নয় বলে মত বিজ্ঞানীদের।


৪৬০ কোটি বছর আগে আমাদের সৌরজগতৎ সৃষ্টি হওয়ার সময় তার কিছু অবশিষ্টাংশ মহাশূন্যে ছিটকে যায়। আজও ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে সেগুলি। পাথুরে ওই বস্তুসমূহই গ্রহাণু হিসেবে পরিচিত। আকারে তুলনামূলক ছোট ওই গ্রহাণুগুলি সূর্যে প্রদক্ষিণ করে। মূলত মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মাঝে গ্রহাণু বেল্টেই এদের অবস্থান। 


গ্রহ এবং গ্রহাণুর মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক রয়েছে। গ্রহাণুগুলি আকারে এতটাই ছোট হয় যে, তাদের কোনও বায়ুমণ্ডল থাকে না। না আছে ভৌগলিক পরিবেশ, না আছে লাভা, না আছে টেকটোনিক পাত। এমন লক্ষ লক্ষ গ্রহাণু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহাশূন্যে। কোনওটির আকার পাথরের খণ্ডের মতো, কোনওটি আবার কয়েকশো কিলোমিটারেরও হয়।