নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বিকল্প বাসস্থান হিসেবে বরাবর প্রাধান্য পেয়ে এসেছে মঙ্গলগ্রহ। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সেখানে উপনিবেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও চলছে। কিন্তু এখনও মঙ্গলগ্রহের সব রহস্য উদঘাটন করে উঠতে পারেননি। তবে একটিতে সফল হল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. মঙ্গলের গ্রহে মাকড়শার ঝাঁকের মতো দেখতে যে বস্তু বরাবর কৌতূহল উদ্রেক করেছে, তারই রহস্য ঘোচাল NASA. (Spiders on Mars)


২০০৩ সালে প্রথম মঙ্গলগ্রহের বুকে মাকড়শার ঝাঁকের কমতো কিছু কিলিবল করতে দেখা যায়। সেই থেকে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে ওই মাকড়শার ঝাঁকের মতো বস্তু চোখে পড়েছে। বহু দূর থেকে যে ছবি তোলা হয়, তাতে ৩০০ মিটারের বেশি এলাকা জুড়ে ওই মাকড়শার ঝাঁকের মতো বস্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। (Science News)


সেই নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। এতদিনে সেই রহস্য উদঘাটন করা গেল। ১১ সেপ্টেম্বর The Planetary Science Journal-এ একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মাকড়শার মতো দেখতে বস্তু আসলে মঙ্গলগ্রহের ভূখণ্ড। মঙ্গলগ্রহের মাটিতে যে কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ রয়েছে, তা তরলে পরিণত না হয়ে যখন সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয়, তাকে মাকড়শার মতো দেখায় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। পৃথিবীতে ল্যাবে বসেও ওই পরীক্ষা চালান গবেষকরা। তাতেই এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হন।


ওই গবেষণাপত্রের লেখক লরেন এমসি কিওন NASA-র জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরিতে প্ল্যানেটারি জিওমর্ফোলজিস্ট। গত পাঁচ বছর ধরে এই গবেষণায় তিনি। কার্বন ডাই অক্সাইড বরফ নিয়ে পৃথিবীতে গবেষণা করে, হাতেকলমে সকলের কৌতূহল মিটিয়েছেন তিনি। এত বড় আবিষ্কার করে ফেলেছেন, এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না। 
 


কী করে মাকড়শার মতো দেখতে ওই বস্তু গড়ে উঠল মঙ্গলগ্রহে, ২০২১ সালেই তো খোলসা করেছিলেন লরেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহে বসন্ত কালে সূর্যালোক কার্বন ডাই অক্সাইডের বরফ ভেদ করে মাটিতে পৌঁছয়। এর ফলে মাটি গরম হয়, যার সংস্পর্শে এসে বরফের তরল না হয়ে গিয়ে, গ্যাসের আকার ধারণ করে। এর ফলে বরফের স্তরের উপর কালো ধোঁয়া তৈরি হয়। এর চাপে বরফের স্তরও ফেটে যায়।  ওই ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে গ্যাস ও ধুলো। পড়ে থাকে মাকড়শার আকারের কিছু দাগ। মঙ্গলগ্রহের সর্বত্র নয়, কিছু জায়গাতেই মাকড়শার মতো ওই ভূখণ্ড চোখে পড়ে। আবার দ্রুত ছড়িয়েও পড়ে না।