নয়াদিল্লি: মহাকাশ গবেষণায় নয়া মাইলফলক তৈরির লক্ষ্যেই অভিযানের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু আট দিনের অভিযানে গিয়ে মহাকাশে দীর্ঘ আট মাসের জন্য আটকে পড়া সুনীতা উইলিয়ামস এবং ব্যারি বুচ উইলমোরকে নিয়ে এই মুহূর্তে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হচ্ছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-কে। কোটি কোটি টাকা খরচে তৈরি মহাকাশযান ত্রুটিপূর্ণ জেনেও কেন সুনীতা এবং ব্যারিকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হল, উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি, এত দীর্ঘ সময় মহাকাশে সুনীতা এবং ব্যারিকে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তও সমালোচিত হচ্ছে। কিন্তু অতীতের দুঃসহ অভিজ্ঞতা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা যাচ্ছে। (Sunita Williams)
২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মহাকাশ অভিযান সেরে পৃথিবীতে ফেরার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ভারতীয়-আমেরিকান নভোশ্চর কল্পনা চাওলা। শাটল কলম্বিয়া বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তার সঙ্গে বাতাসে মিলিয়ে যান কল্পনা এবং তাঁর সহযাত্রীরাও। সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা থেকেই আর এক ভারতীয় নভোশ্চর সুনীতা এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারির ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ NASA. সুনীতা এবং ব্যারিকে তাড়াহুড়ো করে ফেরানোর পরিবর্তে, বুঝে শুনে এগোতে চাইছে তারা। (NASA News)
শুধুমাত্র কল্পনার মৃত্যুই নয়, ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনার কথাও এক্ষেত্রে মাথায় রাখা হচ্ছে, যেখানে কাউকে বাঁচানো যায়নি। সব মিলিয়ে, দু'টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নভোশ্চর প্রাণ হারান। তাই এবার মেপে মেপে পা ফেলা হচ্ছে বলে মেনে নিয়েছেন NASA-র অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন। আগের অভিজ্ঞতা থেকেই এবার বুঝেশুনে এগনো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মাটি ছোঁয়ার ১৬ মিনিট আগে শেষ হয়ে গিয়েছিলেন কল্পনা। এবার সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হতে না দেওয়াই লক্ষ্য NASA-র।
শুধু তাই নয়, ত্রুটিপূর্ণ Boein Starliner মহাকাশযানে চাপিয়ে সুনীতা এবং ব্যারিকে অভিযানে পাঠানো নিয়ে NASA এবং Boeing-এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে। সুনীতা এবং ব্যারিকে ছাড়াই সেপ্টেম্বর মাসে ফিরে আসছে BoeinG Starliner. তাদের মহাকাশযানে চাপিয়ে সুনীতা এবং ব্যারিকে ফেরানো হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা। এমনকি সুনীতা এবং ব্যারিকে ফেরানোর বরাত প্রতিদ্বন্দ্বী ইলন মাস্কের সংস্থা SpaceX-কে দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অন্য দিকে, NASA-র যুক্তি, কিছু যদি ঘটে, সেক্ষেত্রে তাদের উপরই দোষ চাপবে, Boeing-এর উপর নয়। Boeing-এর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও তুলেছে তারা।