কলকাতা: বাড়িতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা। প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল অনেকরকম খাবার। কেক, মিষ্টি থেকে শুরু করে অনেক পদ। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতে তুলে নিয়েছিলেন শুধু চায়ের পেয়ালা। আর চুমুক দিতেই মন ভরে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। চায়ের স্বাদ এতটাই ভাল লেগে গিয়েছে যে, গৃহকর্তার কাছে রীতিমতো খোঁজখবর নিয়েছেন।
দিদির জন্য সেই চা পাতা পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন গৃহকর্তা। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ৪৯তম জন্মদিন পালন করলেন সৌরভ। জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই বেহালার বীরেন রায় রোডের বিখ্যাত লাল বাড়ির সামনে ভিড়। যদিও করোনা আবহে জন্মদিন পালনের কোনও অনুষ্ঠান করেননি সৌরভ। কেক কেটেই শুধুমাত্র দিনটি উদযাপন করেন।
তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন হাই প্রোফাইল অতিথি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট সৌরভদের বাড়িতে ছিলেন তিনি। সৌরভের মা নিরূপা গঙ্গোপাধ্যায়, স্ত্রী ডোনা, কন্যা সানার সঙ্গে গল্প করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীকে খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল। যদিও মমতা শুধু চা পান করেন। আর তাতেই মুগ্ধ হয়ে যান।
সৌরভের স্ত্রী ডোনা এবিপি লাইভকে বললেন, 'দিদি অনেকক্ষণ গল্প করেছেন। খাবার কিছুই সেরকম খাননি। কড়া ডায়েট মেনে চলেন। শুধু হাফ কাপ চা পান করেছেন। সেই চা খুব ভাল লেগেছে দিদির। কোথা থেকে চা পাতা কেনা হয়েছে, সেই খোঁজখবর নিয়েছেন।'
চা নিয়ে সৌরভ বেশ খুঁতখুঁতে। তিনি বিশেষভাবে অর্ডার দিয়ে চা পাতা আনান। তিনি যখন যেখানেই যান, প্লাস্টিকের লাল ঝুড়িতে করে সঙ্গে রাখেন চা পাতা ও চা তৈরির সমস্ত সরঞ্জাম। ওই বিশেষ চা ছাড়া কিছু পান করেন না।
গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার সূত্রে খবর, দিদি প্রশংসা করার পরই সৌরভ তাঁকে চা পাতা উপহার দেওয়ার কথা ভেবেছেন। দার্জিলিংয়ের কোন বাগানের চা, সেই খোঁজও নিচ্ছেন তিনি। শীঘ্রই সেই চা পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
মমতার সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক সৌরভের। জগমোহন ডালমিয়ার প্রয়াণের পর সিএবি-তে যখন নির্বাচনের দামামা প্রায় বেজে গিয়েছিল, নবান্নে দাঁড়িয়ে মমতা ঘোষণা করেছিলেন যে, বাংলা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার প্রেসিডেন্ট হবেন সৌরভ। যুগ্মসচিব করা হয়েছিল অভিষেক ডালমিয়াকে।
পরে অবশ্য সৌরভের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তীব্র জল্পনা তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গেও মধুর সম্পর্ক সৌরভের। বোর্ডে অমিত-পুত্র জয় শাহ সৌরভের অন্যতম সহকারী, পদ হিসাবে বোর্ডের সচিব। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে, সৌরভ যোগ দিতে পারেন গেরুয়া শিবিরে।
যদিও তা জল্পনার স্তরেই থেকে যায়। সৌরভ নিজে ঘনিষ্ঠ মহলে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন বরাবর। নির্বাচনের আগে তাঁর অসুস্থতার পর যে জল্পনা স্তিমিত হয়ে যায়। সৌরভ অসুস্থ থাকার সময় তাঁকে দেখতে হাসপাতালে শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের নেতা-নেত্রীদের ভিড় লেগে ছিল।
আর তার পরেই জন্মদিনে সৌরভের বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাজ্ঞাপন।