কলকাতা: বিরাট কোহলি (Virat Kohli) বনাম ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) বিতর্কে উত্তাল জাতীয় ক্রিকেট। পরস্পরবিরোধী মন্তব্যে দুই পক্ষই শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কে ঠিক, বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) নাকি কোহলি, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। একসময়ে জাতীয় দলে খেলার ক্রিকেটার, বাংলার মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) মনে করেন, গোটা ঘটনাই অনভিপ্রেত। পাশাপাশি তাঁর মতে, বিরাট কোহলির মতো নামী ক্রিকেটারের ভাল ব্যবহার প্রাপ্য বলেও জানালেন বাংলা দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই কোহলি জানিয়েছিলেন যে, বিশ্বকাপের পর তিনি টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছাড়বেন। পরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট সিরিজের দল বাছার আগে তাঁকে নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মা জানান যে, ওয়ান ডে-তে তাঁর পরিবর্তে রোহিত শর্মাকে অধিনায়ক করা হচ্ছে। পরে সৌরভ জানান যে, কোহলিকে টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব না ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।


তবে দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হওয়ার আগে বোমা ফাটান কোহলি। সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, তাঁকে বোর্ড থেকে নেতৃত্ব না ছাড়ার কোনও অনুরোধ করা হয়নি। তাতে গোটা ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের দল নির্বাচনী বৈঠকের পর নির্বাচক প্রধান চেতন জানান, কোহলিকে টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব না ছাড়ার জন্য বোর্ডের সকলেই অনুরোধ করেছিলেন। বিতর্ক থামানো তো দূর অস্ত, সেই মন্তব্য ঘৃতাহুতির কাজ করে। পরিস্থিতি এমনই হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, সোমবার থেকে শুরু ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। তার আগে প্রথা ভেঙে সাংবাদিক বৈঠকে অধিনায়ক না এসে পাঠিয়ে দেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে।


গোটা ঘটনায় মনোজ হতাশ। বলছেন, 'ভুল বোঝাবুঝি তো হয়েইছে। এটা হওয়া উচিত নয়। এত বড় বোর্ড। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য গোটা ক্রিকেট বিশ্ব লাভবান হয়। এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।' বাংলার তারকা ব্যাটার তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরও বলছেন, 'পারফর্মারদের ভালভাবে সামলাতে হয়। বড় নামেদের ভাল ব্যবহার প্রাপ্য। তারা তো ব্র্যান্ড। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের কত ভক্ত-সমর্থক। বোর্ডের কাজেও সকলে অনুপ্রাণিত হয়। সমর্থকদের কাছে কী বার্তা যাচ্ছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ।'


দল নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মনোজ। দাবি তুলেছেন, নির্বাচনী বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারের। 'আমি আগেও বলেছিলাম। দল নির্বাচনী বৈঠক সরাসরি সম্প্রচার করা উচিত। তাতে স্বচ্ছতা থাকে। কোনও ক্রিকেটারকে কেন নেওয়া হচ্ছে বা কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা সকলে পরিষ্কারভাবে জানতে পারবে। আমি নিজে ভুক্তভোগী। আমি বাদ পড়ার সময় নির্বাচকদের জিজ্ঞেস করেছি। আমাকে অন্য রাজ্যের নির্বাচকেরা বলেছেন দল নির্বাচনী বৈঠকে পূর্বাঞ্চলের নির্বাচক তো তোমার কথাই বলেইনি। আবার পূর্বাঞ্চলের নির্বাচককে জিজ্ঞেস করলে বলত, অন্য অঞ্চলের নির্বাচকেরা আমাকে নিতে চাননি। কে ঠিক বলছে, কে ভুল, লাইভ স্ট্রিমিং হলে ক্রিকেটারেরা নিজেরাই জেনে যাবে। তাতে সকলে নিজেদের আরও ঘষামাজা করে নিতে পারবে,' বলছিলেন মনোজ।


আরও পড়ুন: বাংলা শিবিরে করোনার হানা, আক্রান্ত একাধিক, স্থগিত স্থানীয় ক্রিকেট


মনোজ কয়েকটি ঘটনার কথাও তুলে ধরলেন। বললেন, 'মুরলী বিজয় ইংল্যান্ড থেকে ফিরে বলেছিল ওকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে বলা হয়নি। করুণ নায়ার একই কথা বলেছে। শ্রেয়স আইয়ার প্রকাশ্যে বলেছে। তার মানে তো ওদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলা হয়নি। কাউকে বাদ দেওয়া হলে অবশ্যই বাদ দেওয়ার কারণ জানানো উচিত।'