কলকাতা: করোনা আবহে ক্লাবে অন্যান্যবারের মতো জমায়েত, উচ্ছ্বাসের ছবি দেখা না গেলেও, ভার্চুয়ালি বা ছোট আকারে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হল মোহনবাগান দিবস। শুধু বাংলাতেই নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্য, এমনকী বিদেশেও ছড়িয়ে থাকা সবুজ-মেরুন সমর্থকরা নিজেদের মতো করে ঐতিহাসিক দিনটি পালন করলেন। এদিনই ক্লাবের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ ঘোষণা করা হল। ১৯১১ সালে যে জার্সি পরে শিবদাস ভাদুড়ি, অভিলাষ ঘোষরা ইস্ট-ইয়র্কশায়ার ক্লাবকে হারিয়ে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আইএফএ শিল্ড জিতেছিলেন, সেই জার্সির রেপ্লিকা ২০ অগাস্ট গোষ্ঠ পালের জন্মদিন থেকে একটি ই-কমার্স সাইটে পাওয়া যাবে।


মোহনবাগান সদস্য-সমর্থকরা এই ঘোষণায় খুশি। গোষ্ঠ পালের পরিবার কীভাবে বিষয়টিকে দেখছে? এই কিংবদন্তী ফুটবলারের ছেলে নীরাংশু পাল বললেন, ‘আমার বাবা মারা যাওয়ার পর মোহনবাগানে যে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল, সেই অনুষ্ঠানে করুণা ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গোষ্ঠ পাল ছিলেন ফুটবল মাঠের দেবতা। আমার বাবা দেশকে প্রচণ্ড ভালবাসতেন। তিনি ছিলেন জেল না খাটা স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি ফুটবল মাঠে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর চেয়ে বয়সে এক বছরের বড় হলেও, তাঁর প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধা ছিল বাবার। আমার বাবার সম্মান প্রাপ্য।’


নীরাংশুবাবু আরও বললেন, ‘দিদি ১৬ অগাস্ট খেলা হবে দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন। তার কয়েকদিন পরেই আমার বাবার জন্মদিন। সেই দিন যদি খেলা হবে দিবস পালন করা হত, তাহলে ভাল হত। বাবাকে আরেকটু সম্মান জানানো যেত।’


মোহনবাগান কর্তাদের আজকের ঘোষণায় খুশি হলেও, ক্লাবে সংগ্রহশালা তৈরির জন্য দেওয়া পদ্মশ্রী সহ বিভিন্ন স্মারক ফেরত না পাওয়ার ক্ষোভ রয়েই গিয়েছে গোষ্ঠ পালের পরিবারের। নীরাংশুবাবু এদিনও বললেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। দিদি আমাকে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে যেতে বলেন। আমি একাধিকবার ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে যাই। তিনি সচিবকে বিষয়টি দেখতে বলেন। কিন্তু পরে ক্রীড়ামন্ত্রী আমাকে জানান, মোহনবাগান কর্তারা পদ্মশ্রীর বিষয়ে চিঠির কোনও জবাব দেননি। ময়দান থানায় ডায়েরি করেছিলাম। কিন্তু পুলিশও কিছু জানায়নি। আমার বাবার পদ্মশ্রী কোথায় জানি না। এই অসম্মান আমার বাবার প্রাপ্য ছিল না।’


বাগান কর্তারা অবশ্য এই আনন্দের দিনে বিতর্কে জড়াতে চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, ইতিহাসের টুকরো নিশ্চয়ই সমর্থকরা সংগ্রহ করে রাখবেন। ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই এরকম কিছু একটা করতে চাইছিলাম। গোষ্ঠ পালের জন্মদিন থেকেই জার্সির রেপ্লিকা বিক্রি শুরু হবে। এর মাধ্যমে অমর একাদশের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।’