রিও দে জেনেইরো: তাঁর কাছে রবিবার যন্ত্রণামুক্তির দিন। দেশের হয়ে তাঁর সাফল্য় নেই, যত কীর্তি ক্লাবের হয়ে, এরকম হাজারো সমালোচনা বাঁ পায়ের জাদুতে ভাসিয়ে দিলেন লিওনেল মেসি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজ়িলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হল আর্জেন্তিনা।


সেই খুশিতে আত্মহারা মেসি। ম্য়াচ শেষ হতে মাঠ থেকেই ভিডিও কল করলেন মেসি। দেখাতে থাকলেন তাঁর গলার নীল রিবনে বাঁধা পদক। যা কোপা চ্যাম্পিয়ন হয়ে পেয়েছেন তিনি। মেসির মুখে হাসি। অনাবিল আনন্দের ছোঁয়া।


আর ফোনের ওপারে? মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো ও পরিবারের বাকি সদস্যরা। করোনা আবহে কোপা আমেরিকার জন্য ফুটবলারদের জৈব সুরক্ষা বলয়ের কড়াকড়ির মধ্যে থাকতে হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা কেউই সঙ্গে ছিলেন না। মেসি নিজে ফাইনালের আগে বলেছিলেন যে, এই পরিস্থিতিতে পরিবার ছেড়ে থাকার মতো যে আত্মত্য়াগ করেছে ফুটবলাররা, কোপা জিতলেই সেই ত্যাগ সার্থক হবে। রবিবার যেন সেই ইচ্ছা পূর্ণ হল আর্জেন্তিনার অধিনায়কের। আর তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ মাঠ থেকেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন মেসি।



সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে আন্তোনেল্লার হয়তো মাঠে থাকারই কথা। হয়তো দলের জয়ের পর তিন সন্তানকে নিয়ে, অন্যান্য ফুটবলারদের স্ত্রীদের সঙ্গে মাঠে বিজয়োৎসবে মেতে উঠতেন তিনিও। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি। অগত্যা ভার্চুয়ালি উৎসবে যোগ দিলেন তিনি।


কোপা আমেরিকার ট্যুইটার হ্যান্ডলে মেসির ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের পদক দেখানোর দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। 


২৮ বছরের ট্রফি খরা কাটল আর্জেন্তিনার। ১৯৯৩ সালে শেষবার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লা আলবিসেলেস্তেরা। সেটাই ছিল দিয়েগো মারাদোনার দেশের বড় মঞ্চে শেষ আন্তর্জাতিক ট্রফি। মাঝে শুধু লিওনেল মেসিরা অলিম্পিক্সে সোনা জিতেছিলেন। যদিও অলিম্পিক্সের ফুটবলকে কখনও কুলীন তকমা দেওয়া হয়নি। কারণ, অলিম্পিক্সে বেশিরভাগ দেশই অনভিজ্ঞ এবং উঠতি ফুটবলারদের পাঠায়। মাঝের ২৮ বছরে সাতটি ফাইনাল খেলেছে আর্জেন্তিনা। কিন্তু বারবার রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। অবশেষে মারাকানায় মোক্ষলাভ। নেমার দ্য় সিলভা স্য়ান্টোস জুনিয়রের ব্রাজ়িলকে ১-০ হারিয়ে ট্রফি জিতলেন মেসিরা।