মুম্বই: ২২ গজে ভারত পাক (Ind vs Pak) দ্বৈরথ। ক্রিকেটের আদিলগ্ন থেকেই এই লড়াই যেন আলাদা উত্তাপ যোগ করে যে কোনও টুর্নামেন্টেই। ২ দেশের মানুষের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়া, অতিরিক্ত অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হওয়া ব্যাটে-বলে এক মহাসংগ্রাম। আইসিসির (ICC) যে কোনও টুর্নামেন্টেই ভারত বারবার টেক্কা দিয়েছে পাকিস্তানকে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T 20 World Cup) কিছুটা ব্যতিক্রমী।  


প্রতিবেশী, কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান আরও একবার মুখোমুখি হতে চলেছে আগামী ২৮ আগস্ট। আসন্ন  এশিয়া কাপে। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ সাক্ষাতে লজ্জার হারের মুখ দেখতে হয়েছিল বিরাট কোহলির দলকে। সেই হারের মুধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকছে এবার রোহিত শর্মা ও তাঁর ছেলেদের সামনে।


২৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে চলেছে এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে অভিযান শুরু করছে খেতাব জয়ের অন্যতম দাবিদার টিম ইন্ডিয়া। এবারের এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের প্রথম ম্যাচেই একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে। বলাই বাহুল্য যে কড়া টক্কর হতে চলেছে। কী হবে সেই ম্যাচের ফল? ব্যাটে-বলে কারা শেষবেলায় বাজিমাত করবে? ইতিহাস বলছে এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ বার ২ টো দল এশিয়া কাপে খেলতে নেমেছে। তার মধ্যে ৮ ম্যাচে জিতেছে ভারত। ৫ ম্যাচে পাকিস্তান জয়লাভ করেছে। ১টি ম্যাচের কোনও ফল নির্ধারিত হয় নি। আসুন, রবিবারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আগে একবার ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যাওয়া যাক। 


১৯৮৪ সালে এশিয়া কাপের প্রথম সংস্করণে ফাইনালে ৫৪ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সুনীল গাওস্করের ভারত। ৫৬ রান করে ম্যাচের সেরা হয়েছিল সুরিন্দার খান্না। ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপে টানা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। ২৬ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট ম্যাচ জেতে দিলীপ বেঙ্গসরকরের দল। প্রথম ভারতীয় হিসেবে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন  আর্শাদ আয়ুব। তিনিই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন।


১৯৯৫ সালে  পাকিস্তান প্রথমবার এশিয়া কাপে ভারতকে হারায়। ৯৭ রানে ম্যাচ জিতে যায় মঈন খানের দল। একাই ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হন আকিব জাভেদ। মহম্মদ ইউসুফের দুরন্ত সেঞ্চুরির সুবাদে ২০০০ সালের এশিয়া কাপে ভারতকে ৪৪ রানে হারায় পাকিস্তান। 


২০০৪ সালে এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে ফের জয় পাকিস্তানের। ম্যাচের নায়ক শোয়েব মালিক। ঝোড়ো ১৪৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ২০০৮ সালে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ধোনির ভারত। আরও একবার দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকান শোয়েব মালিক। কিন্তু তাঁর ১২৫ রানের ইনিংস বুমেরাং হয়ে যায়। ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ৬৯ বলে ৮৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস ও ২ টো ক্যাচ ধরে ম্য়াচের সেরা নির্বাচিত হন সুরেশ রায়না। সেই বছরই আরও একবার ২ দল মুখোমুখি হয়েছিল। সুপার ফোরে সেই ম্যাচে ৮ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় পাকিস্তান।


শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২০১০ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১ বল বাকি থাকতেই রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নেয় ভারতীয় দল। ৮৩ রানের দুরন্ত জয়সূচক ইনিংস খেলেন গৌতম গম্ভীর।


9. ২০১২ সালে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের মাটিতে ২ দল মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার নাসির জামশেদ ও মহম্মদ হাফিজের জোড়া শতরানও কাজে দেয়নি পাকিস্তানের। ৬ উইকেট ম্যাচ জিতে যায় ভারত। নিজের ওয়ান ডে কেরিয়ারে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি।


২০১৪ সালে পাকিস্তান ১ উইকেটে ম্য়াচ জেতে। ২০১৬ সালে ভারত ৫ উইকেটে ম্যাচ জেতে। ২০১৮ এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ফের ২ বার মুখোমুখি হয়েছিল। ২ বারই জয় ছিনিয়ে নেয় টিম ইন্ডিয়া। এছাড়াও ১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে হওয়া এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে ২ দল মুখোমুখি হলেও বৃষ্টির জন্য সেই ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছিল।