কলকাতা: ২৭ অগাস্ট শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ (Asia Cup)। আর টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনই মারকাটারি লড়াই। রবিবাসরীয় মহারণে ভারত মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের। যে ম্যাচে সকলের আলাদা করে নজর থাকবে একজনের দিকে। বিরাট কোহলি (Virat Kohli)।


বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ব্যাটার বলা হতো কোহলিকে। বিশ্বের সমস্ত বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন। ২২ গজে তাঁর দাপট দেখে ক্রিকেটবিশ্বে তাঁর নামকরণই হয়ে গিয়েছিল কিংগ কোহলি।


অথচ সেই কোহলির ব্যাটেই রানের খরা। শেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন প্রায় তিন বছর আগে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে। ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচে। তারপর থেকেই বিরাটের ব্যাট নিষ্প্রভ। আসন্ন এশিয়া কাপে তিনি কেমন খেলেন, দেখতে মুখিয়ে রয়েছে বিশ্বের সমস্ত ক্রিকেটপ্রেমী।


চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিরাটের রেকর্ড বেশ ঈর্ষণীয়। রেকর্ডবুক বলছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৩টি ওয়ান ডে ম্যাচে প্রায় ৪৯ গড় রেখে ৫৮৩ রান করেছেন কোহলি। সেঞ্চুরি দুটি। সর্বোচ্চ ১৮৩ রান।


সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসাবে দেখা হচ্ছে এশিয়া কাপকে। যে কারণে এবার টুর্নামেন্ট হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে।


পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন কোহলি। তাতে রান করেছেন ৩১১। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৮ রান।


একটা সময় মনে করা হতো, ভারতের কোনও ক্রিকেটারের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিফলিত হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি কেমন পারফর্ম করছেন তার ওপর। ইদানীং ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক দ্বৈরথ হয় না। দুই দেশের সাক্ষাৎ বলতে আইসিসি বা এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিলের টুর্নামেন্টে। কোহলি এখনও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলেননি। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পাক বোলারদের বিরুদ্ধে নজরকাড়া পারফরম্যান্স তাঁর। এশিয়া কাপে ছন্দে ফিরতে মরিয়া থাকবেন কোহলি।


ভারত-পাক মহারণ মানেই বিরাট কোহলি বনাম বাবর আজম দ্বৈরথ। বর্তমানে ক্রিকেটবিশ্বের সেরা ব্যাটার কে, বিরাট না বাবর, তা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে জোরদার আলোচনা চলে। দুরন্ত ছন্দে আছেন বাবর। কোহলিও হারানো ছন্দ ফিরে পেতে মরিয়া। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের মাটিতে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। বার্মিংহাম টেস্টে রান পাননি। ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজেও নীরব ছিল তাঁর ব্যাট। যদিও সেই দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী কোহলি। তিনি বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডে যা হয়েছিল তার ওপর কাজ করছি। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে না এমন কোনও সমস্যা রয়েছে যেটাকে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা যাবে না। আমি জানি আমি ভাল ব্যাট করছি। যদি একবার মনে হয় আমি ছন্দে ফিরেছি, তাহলে বুঝব আমি ভাল ব্যাট করছি। ইংল্যান্ডে কিন্তু এরকম অনুভূতি হয়নি। ওখানে আমার মনে হয়নি যে, আমি ভাল ব্যাটিং করছি। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আর মনে হয় সমস্যা নেই।’


খারাপ সময় যে তাঁকে আরও ধারাল করে তুলেছে, জানিয়েছেন বিরাট। বলেছেন, ‘আমি জানি আমি কীরকম খেলছি আর পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা না থাকলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেউ এতদূর আসতে পারে না। বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি ও নানা ধরনের বোলারদের বিরুদ্ধে খেলতে হয়। আমি এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিতে চাই। জানি সব ক্রিকেটারের কেরিয়ারেই উত্থান-পতন থাকে। আমি জানি এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারলে আমি কত ধারাবাহিক হতে পারি। আমার অভিজ্ঞতা নিজের কাছে পবিত্র। এই খারাপ সময় আমাকে মানুষ হিসাবে নিজেকে আরও মূল্য দিতে শিখিয়েছে।'


সব মিলিয়ে এশিয়া কাপে কোহলির প্রত্যাবর্তন ঘটে কি না, দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন ক্রিকেট ভক্তরা। এশিয়া কাপে ভারতের সাফল্য-ব্যর্থতাও অনেকটা নির্ভর করে থাকবে কোহলির ফর্মের ওপর।


আরও পড়ুন: মাঠের দ্বৈরথের আগে প্রবল প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মেলালেন বিরাট