দুবাই: আগামীকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। অন্য়দিকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে রূদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পাকা করেছে অজি বাহিনী। ২টো দলই এর আগে কখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেনি। সেক্ষেত্রে এবার যেই শিরোপা জিতবে, তা সেই দলের কাছে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় হবে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যেভাবে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ২ শিবির।


রোড টু ফাইনাল


নিউজিল্যান্ড: এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ থেকেই ধাপে ধাপে এগিয়ে এসেছে কিউয়িরা। কেউই তাঁদের ফাইনালের দাবিদার হিসেবে ভাবেনি। কিন্তু তারাই চমকে দিয়েছে সবাইকে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হার দিয়ে অভিযান শুরু। ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য মরিয়া ছিল কিউয়িরা। ঠিক সেই মতোই লক্ষ্যপূরণও হয় তাঁদের। বিরাটদের মাত্র ১১০ রানে আটকে রাখার পর খুব সহজেই রান তাড়া করে জিতে যায় কিউয়িরা। এরপরের ২ ম্যাচে প্রথমে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৬ রানে ও পরে নামিবিয়ার বিরুদ্ধে ৫২ রান জয় ছিনিয়ে নেয় নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৮ উইকেট জয়। পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে নিজেদের গ্রুপ থেকে সেমিতে জায়গা করে নেয় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। 


শেষ চারে অন্য একটি গ্রুপের প্রথম স্থানে থাকা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামতে হয়েছিল। ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল থ্রি লায়ন্সরা। কিন্তু ম্যাচের রং পাল্টে দেন ২ কিউয়ি ব্যাটার ড্যারেল মিচেল ও জিমি নিশাম। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান বোর্ডে তুলে নেয় ইংল্যান্ড। অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলেন মঈন আলি। রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই মার্টিন গাপ্টিল ও কেন উইলিয়ামসনকে হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দুজনই ক্রিস ওকসের শিকার। তবে পাল্টা লড়াই শুরু করেন ডারিল মিচেল ও ডেভন কনওয়ে (৩৮ বলে ৪৬ রান)। কনওয়ে যখন ফেরেন, ৩৮ বলে ৭২ রান প্রয়োজন ছিল কিউয়িদের। জিমি নিশাম ১১ বলে ২৭ রান করে আশার প্রদীপ নতুন করে জ্বালান। সেই ফুলকির থেকেই ব্যাট হাতে বিস্ফোরণ ঘটান মিচেল। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জেতান তিনি।


অস্ট্রেলিয়া: টি-টোয়েন্টি বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয়। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয়। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারতে হয় স্মিথদের। তবে গ্রুপ পর্বে শেষ ২ ম্যাচে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ দলের বিরুদ্ধেই ৮ উইকেটে জিতে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিতে জায়া করে নেয় অ্যারন ফিঞ্চের দল।


সেমিফাইনালে সামনে ছিল পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচ থেকে যে ফর্মে ছিলেন বাবররা, তাতে এই ম্যাচেও অনেকেই পাক শিবিরকেই এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে যায়। প্রথমে ব্যাট করে ১৭৬ রান বোর্ডে তুলেছিল পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় প্রবল চাপে ছিল অজি শিবির। কিন্তু হাসান আলির একটা ক্যাচ মিস ম্যাচের রং পাল্টে দেয় অজি ইনিংসের ১৯ তম ওভারে। জীবন দান পেয়ে তার পরের তিন বলে পরপর তিনটে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ফাইনালে তুলে দেন ম্যাথু ওয়েড। ২০১০ সালে এভাবেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন মাইক হাসি। সেই কাজটাই এবার করলেন ম্যাথু ওয়েড।