মুম্বই: অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। আর সেই দলেরই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিতাস সাধু। মহিলাদের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের (Womens U19 T20 World Cup) ফাইনালে তিনি ম্যাচের সেরা হয়েছেন। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করে নিয়েছেন ২ উইকেট। এবার মহিলাদের ভারতীয় এ দলে সুযোগ পেলেন হুগলির চুঁচুড়ার মেয়েটি। এসিসি ইমার্জিং উইমেন্স এশিয়া কাপের ভারতীয় দলে ডাক পেলেন তিতাস।
অল ইন্ডিয়া উইমেন্স সিলেকশন কমিটি শুক্রবার ভারতীয় 'এ' দল ঘোষণা করেছে। সেখানে তিতাসকে তারা দলে রেখেছেন। এসিসি ইমার্জিং উইমেন্স এশিয়া কাপে ভারত তাদের অভিযান শুরু করতে চলেছে আগামী ১৩ জুন থেকে। প্রথম ম্যাচেই হংকংয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে টিম ইন্ডিয়া।
উল্লেখ্য, তিতাসের বাবা রণদীপ সাধু ছিলেন রাজ্যস্তরের অ্যাথলিট। খেলার দুনিয়ায় তিতাসের প্রবেশ স্প্রিন্টার হিসাবে। দৌড়তেন। পরে সাঁতার শুরু করেন। এমনকী, টেবিল টেনিসও খেলেছেন। হুগলির মহসিন কলেজের কাছে রাজেন্দ্র স্মৃতি সংঘে ক্রিকেটের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। পড়াশোনায় চৌখস। খেলাধুলোতেও পারদর্শী। মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন।
ক্রিকেট খেলা শুরু কীভাবে? ক্লাবের দলে নেট বোলার কম পড়েছিল। তিতাসকে দিয়ে বোলিং করানো হয়। সেই শুরু। একটা সময় বাংলা দলে তিতাসকে কোচিং করিয়েছেন শিবশঙ্কর পাল। শৈশবের কোচ প্রিয়ঙ্কর মুখোপাধ্যায় তিতাসকে নিয়ে এসেছিলেন বাংলা ক্রিকেটের ম্যাকো-র কাছে। শিবশঙ্কর বলছিলেন, 'খুব প্রতিভাবান ছিল। সুন্দর চেহারা। পেস বোলিংয়ের জন্য আদর্শ। বল স্যুইং করাতে পারত।' যোগ করছেন, 'ওর ব্যাটের হাতও খুব ভাল। বড় ছক্কা মারতে জুড়ি মেলা ভার।'
বাংলার সিনিয়র দলে তিতাসের সুযোগ পাওয়ার দিনটি মনে পড়ে গিয়েছিল প্রাক্তন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়ার। তিনি বলছিলেন, 'তৃণমূল স্তর থেকে ও উঠে এসেছে। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ওকে পারফর্ম করতে দেখে ভীষণ ভাল লাগছে। রিচা ঘোষ, তিতাস ও হৃষিতা বসু, ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলে বাংলা থেকে তিন ক্রিকেটারকে দেখাটা দারুণ আনন্দের। মহিলাদের আইপিএলের আগে বেশ রোমাঞ্চিতও।'
তিতাসের শৈশবের কোচ প্রিয়ঙ্কর বলেছিলেন, 'ও ভীষণ পরিশ্রমী। পড়াশোনা আর খেলা দুটোই সামলাতে পারে। ছোটবেলায় স্প্রিন্টার ছিল বলে ভীষণ ফিট। প্রত্যেক সপ্তাহে ২২ কিলোমিটার দৌড়য়। আবহাওয়া যেমনই থাক না কেন। আমরা জানতাম ও সফল হবেই আর সেটা করে দেখাল।'
ভারতীয় স্কোয়াডে যাঁরা যাঁরা জায়গা পেয়েছেন তাঁরা হলেন- শ্বেতা সেহরাওয়াত (ক্যাপ্টেন), সৌম্যা তিওয়ারি (ভাইস ক্যাপ্টেন), তৃষা গঙ্গাদি, মুসকান মালিক, শ্রেয়ঙ্কা পাটিল, কনিকা আহুজা, উমা ছেত্রী, মমতা মাদিওয়ালা, তিতাস সাধু, যশস্রী এস, কাসভী গৌতম, পার্শ্বাভী চোপড়া, মন্নত কাশ্যম, বি অনুশা।