লস অ্যাঞ্জেলেস: কিংবদন্তী বক্সিং তারকা মহম্মদ আলি প্রয়াত। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার অ্যারিজোনার একটি  হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মহম্মদ আলি। শুক্রবার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু রাতের দিকে ফের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে পারিবারিক সূত্রে দাবি করা হয়, বক্সিং তারকার অবস্থা সঙ্কটজনক। শনিবার সকালে তাঁর জীবনাবসান হয় । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

কিংবদন্তীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ  ক্রীড়ামহল। শোকজ্ঞাপন করেছেন সারা বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তি থেকে শুরু করে অগণ্য ভক্তরা।





জনতার হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন মহম্মদ আলি, দাবি অলিম্পিক পদকজয়ী বিজেন্দ্র সিংহের। বক্সিং দুনিয়ার অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল, মত বক্সার মেরি কম-এর। 

 

বক্সিং তারকার প্রয়াণে আরও কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া

 




 


প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে অ্যারিজোনার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বক্সিং জিনিয়াস৷ দীর্ঘদিন ধরেই পার্কিনসন’স ডিজিজে ভুগছিলেন৷ তার উপর শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁর অসুস্থতা আরও বাড়ে৷ তবে গতকাল চিকিত্‍সকরা দাবি করেন, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল৷ ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতিও হচ্ছে৷ তারপরই ফের অবস্থার অবনতি হয়।

বক্সিং তারকা এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২০১৪ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ২০১৫-এ মূত্রনালীতে সংক্রমণ থেকেও ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে।

 

তিন বারের এই হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কেরিয়ারের মোট ৬১টি ম্যাচের মধ্যে ৫৬টিতেই বাজিমাত করেছেন তিনি। হেরেছেন মাত্র ৫টিতে। ১৯৬০ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত রিংয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মহম্মদ আলি। ১৯৭৪ সালে জাইরেতে জর্জ ফোরম্যানের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই অমরত্ব পেয়ে গিয়েছে। জো ফ্রেজিয়ারের সঙ্গেও জোর টক্কর হত স্বঘোষিত 'দ্য গ্রেটেস্ট'-এর। বেশিরভাগ লড়াইয়েই তিনি জিতেছেন। সেই কারণেই তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত গোটা দুনিয়া।

বক্সিংয়ের কর্মকর্তা বব অরাম শোক প্রকাশ করে বলেছেন, মহম্মদ আলি তাঁর লড়াইয়ের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বদলে দিয়েছিলেন এবং সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তিনি ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন।

সারা জীবনে বক্সিংয়ের বাইরেও বহু সম্মান পেয়েছেন মহম্মদ আলি। ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকের মশাল বাহক হিসেবে তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে রাষ্ট্রসংঘের শান্তি দূত নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৫ সালে তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অসমারিক সম্মান 'দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম' দেওয়া হয়।

খেলার বাইরেও নিজের আলাদা ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলেন মহম্মদ আলি। ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষের অধিকারের পক্ষে সরব হন তিনি। ফলে সমাজকর্মী হিসেবেও তাঁর পরিচয় তৈরি হয়। শনিবার অবশ্য সবই অতীত হয়ে গেল।