কলকাতা: প্রায় সাড়ে চার বছর পর ডার্বিতে লাল হলুদ মশাল জ্বলেছে। নন্দকুমার শেকরের গোলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এই জয়ের নেপথ্যে রয়েছেন কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতও। দলকে ডার্বি জিতিয়ে যিনি সাংবাদিকদের বললেন, ''আমরা দল হিসেবে খেলে জিতেছি। পুরো কৃতিত্ব পুরো দলের। মোহনবাগান বড় দল, ওদের অনেক তারকা। কিন্তু আজ ভাল ফুটবল খেলেছি আমরা। সে জন্যই জিততে পারলাম।''


প্রতিপক্ষ যে ভাল খেলেই জিতেছে, তা স্বীকার করে নিয়ে হতাশ সবুজ-মেরুন কোচ হুয়ান ফেরান্দো বলেন, ''আমাদের একসঙ্গে তিন-তিনটে টুর্নামেন্ট খেলতে হচ্ছে। খেলোয়াড়রাও মরশুমের জন্য সবে তৈরি হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য এএফসি কাপ। ইস্টবেঙ্গল আজ ভাল খেলেছে। তবে আমরা অতীত ভুলে সামনের দিকে তাকাতে চাই। পরের ম্যাচে মনোনিবেশ করতে চাই।''


তবে ম্যাচ জয়ের পর প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারদের কিছুটা খোঁচাও দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলেন, ''আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল ফুটবলার এনেছে মোহনবাগান। কিন্তু ওরা এখনও পুরোপুরি ফিট নয়। কামিংস, সাদিকু, পেত্রাতোসের মতো ফুটবলারকে ওরা সামান্য সময়ের জন্যে ব্যবহার করতে পেরেছে। তবে এটাও ঠিক যে প্রাক মরসুম প্রতিযোগিতায় সবাইকে সমান ভাবে খেলানো সম্ভব নয়। কিন্তু শারীরিক ভাবে ওদের সবাইকে পুরোপুরি ফিট মনে হয়নি।"


এই ডার্বির আগে ধারে ও ভারে এবং সাম্প্রতিক সাফল্যের বিচারে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল এ দিন দেখিয়ে দিলেন, বড় বড় নাম দলে থাকলেই সাফল্য আসে না। ফুটবলে পারফরম্যান্সই শেষ কথা বলে। শনিবার পারফরম্যান্সেই চিরপ্রতিদ্বন্দীদের ছাপিয়ে গিয়ে মরশুমের প্রথম ডার্বি জিতে নিল লাল-হলুদ বাহিনী।   


ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে তখন নন্দকুমার বলেছিলেন, ''২০১৭-য় যখন চেন্নাই সিটির হয়ে খেলতাম তখন পেশাদার ফুটবল জীবনের প্রথম গোল এই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেই করেছিলাম। এখন, এই ঐতিহাসিক ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চাই। ক্লাবকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে চাই। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নেমে সমর্থকদের ভালবাসা পেতে চাই।''


সেদিন লাল হলুদের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। আজ যুবভারতীয় লাল হলুদ সমর্থকদের সামনে লাল হলুদ ক্লাবের জার্সি গায়ে গোল করে সুদে আসলে সব মিটিয়ে দিলেন নন্দকুমার। জীবনের প্রথম ডার্বিতে নেমেই তা করে দেখিয়ে দিলেন তিনি। ৬০ মিনিটের মাথায় অসাধারণ এক গোল করে দলকে বহু আকাঙ্খিত জয় এনে দিলেন তিনি। হয়ে উঠলেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন ‘হিরো’।  শনিবার ম্যাচের পর তিনি বলেন, ''ওডিশার হয়ে খেলার সময় অনেকবার টিভিতে ডার্বি দেখেছি। আজ নিজে ভরা গ্যালারির সামনে ডার্বি খেললাম, গোলও করলাম। খুবই খুশি আমি। পরের ম্যাচে আমরা আরও ভাল খেলব আমরা।''