সিডনি: ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ। সিডনির এক হাসপাতালে হৃদপিণ্ডে জরুরি অস্ত্রোপচারের সময় পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হলেন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ক্রিস কেয়ার্নস (Chris Cairns)। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর দুই পা অসাড় হয়ে গিয়েছে। একসময় দুনিয়া কাঁপানো অলরাউন্ডারের শারীরিক অবস্থার কথা জেনে উদ্বিগ্ন সচিন তেন্ডুলকরও (Sachin Tendulkar)। প্রাক্তন তারকার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন মাস্টার ব্লাস্টার।


সিডনির হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ৫১ বছর বয়সী কেয়ার্নস ক্যানবেরায় তাঁর বাড়িতে ফিরেছেন। তবে তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। নিউজিল্যান্ডের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে কেয়ার্নসের আইনজীবী অ্যারন লয়েডের একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রাণরক্ষার জন্য জরুরিকালীন ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের রাস্তায় হাঁটতে হয়েছিল চিকিৎসকদের। কিন্তু অস্ত্রোপচার চলাকালীনই তাঁর মেরুদণ্ডে স্ট্রোক হয়। তার থেকেই তাঁর দুই পা অসাড় হয়ে গিয়েছে।

 

ওই বিবৃতিতে এ-ও জানানো হয়েছে যে, অস্ট্রেলিয়ার একটি মেরুদণ্ডের রোগের চিকিৎসা করা নামী হাসপাতালে রিহ্যাবিলিটেশন শুরু হবে কেয়ার্নসের। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, 'এই কঠিন সময়ে সকলের সমর্থন পাওয়ার জন্য ক্রিস ও ওর পরিবার কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে ব্যক্তিগত পরিসর দেওয়া হয়েছে বলে সকলে খুশি।'

 

কেয়ার্নসের শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে উদ্বিগ্ন মাস্টার ব্লাস্টার। সচিন ট্যুইট করেছেন, 'ক্রিস কেয়ার্নসের খবরটা পেয়ে খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম। আশা ও প্রার্থনা করছি। দ্রুত সেরে ওঠো বন্ধু, গোটা ক্রিকেটমহল তোমার জন্য প্রার্থনা করছে।'



হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের লাইফ সাপোর্ট ইউনিটে ভর্তি ছিলেন কেয়ার্নস। ক্যানবেরায় তাঁর হৃদযন্ত্রের মূল ধমনীতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড এর রিপোর্ট অনুযায়ী, কেয়ার্নস ক্যানবেরায় আর্টিস ডিসেকশনে (শরীরের প্রধান ধমনীর অভ্যন্তরীণ স্তর ছিঁড়ে যাওয়া) ভুগছিলেন।


প্রসঙ্গত, নিজের সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন ক্রিস কেয়ার্নস। ১৯৮৯ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ৬২টি টেস্ট এবং ২১৫টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে। খেলেছেন দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও। তাঁর বাবা ল্যান্স কেয়ার্নসও নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন।


২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আইনি লড়াইও লড়তে হয়েছে তাঁকে। বার বার দুর্নীতির অভিযোগ তাঁর জীবনে প্রভাব ফেলে। আইনি লড়াইয়ের বিল মেটানোর জন্য তাঁকে এক সময় অকল্যান্ড কাউন্সিলে ট্রাক চালানো ও বাসের শেল্টার পরিষ্কার করার চাকরি নিতে হয়। যদিও ২০১৫ সালে লন্ডন আদালত তাঁকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল। বর্তমানে গোটা ক্রিকেট মহল ক্রিস কেয়ার্নসের আরোগ্য কামনা করছে।